ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: হরিয়ানার এক সাধারণ ঘরের মেয়ে, ইউটিউবার (Pak Spy) জ্যোতি মালহোত্রা, বর্তমানে ভারতের শিরোনামে রয়েছেন। তবে তার জনপ্রিয়তা কোনো স্বাভাবিক কারণে নয়, বরং তার সন্দেহজনক কার্যকলাপের কারণে। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়ে গভীর তদন্ত চলছে। এই ইউটিউবারের জীবনযাপন অত্যন্ত বিলাসবহুল, যেখানে বিদেশ সফর, পাঁচতারা হোটেলে থাকা, এবং অঢেল খরচের বিষয়টি সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে চাচ্ছেন, এসব খরচের উৎস কী ছিল এবং জ্যোতি কি একাই এসব খরচ বহন করতেন?
আইএসআইয়ের হানি ট্র্যাপ স্কিম (Pak Spy)
জ্যোতির সন্দেহভাজন কার্যকলাপ আইএসআইয়ের হানি ট্র্যাপ স্কিমের সঙ্গে তুলনা (Pak Spy) করা হচ্ছে। এর আগে, পাকিস্তান এই ধরনের ফাঁদে ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ফাঁসানোর জন্য বেশ কিছু মহিলাকে ব্যবহার করেছিল, যেমন সেজল কপূর। সেজল কপূর নামে এক ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের টার্গেট করেছিল। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে, এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৯৮ জন ভারতীয় কর্মকর্তা ফাঁদে পড়েন, তাদের কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাক করা হয় এবং দেশের গোপন তথ্য বের করা হয়।
পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার এক স্বীকৃত পদ্ধতি (Pak Spy)
সেজল কপূর নামক এই ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভারতীয় নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন নামের (Pak Spy) আইডি তৈরি করে বিভিন্ন ভারতীয় কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের আকৃষ্ট করেছিল। তার একাধিক অ্যাকাউন্ট, যেমন নেহা শর্মা, পূজা রঞ্জন এবং অনামিকা শর্মা, গুপ্তচরের ফাঁদে পরিণত হয়েছিল। সেজলের আকর্ষণীয় চেহারা এবং প্রলোভনের মাধ্যমে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সহজেই প্রভাবিত করা হয়। এটি ছিল পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার এক স্বীকৃত পদ্ধতি।
প্রকল্পের তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা
২০১৮ সালে, সেজল কপূরের হানিট্র্যাপ সামনে আসে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনায়। ওই সময় ভারতের এক সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার নিশান্ত আগরওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি সেজল কপূরের মাধ্যমে পাকিস্তানী গুপ্তচর সংস্থাকে তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, সেজল কপূর এবং তার অন্যান্য ভুয়ো আইডি গুলি পাকিস্তান থেকে পরিচালিত হচ্ছিল।
গুপ্তচর কার্যকলাপকে গোপন রাখত
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, সেজল কপূর একাধিক ভারতীয় অফিসারকে প্রলোভিত করে তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করিয়ে দেশীয় গোপন তথ্য চুরি করেছিল। আরও জানা যায়, সেজল কপূর এবং তার সহযোগীরা একটি বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করত, যা তাদের গুপ্তচর কার্যকলাপকে গোপন রাখত। এইসব ঘটনা সামনে আসার পর, সেজল কপূরের পরিচয় উদঘাটিত হয় এবং ভারতীয় পুলিশ তাকে চিহ্নিত করে।

আরও পড়ুন: Rainfall in Mumbai: মহারাষ্ট্রে অসময়ের বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, বন্ধ রেল পরিষেবা!
এই ঘটনা ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তি চালানো হচ্ছে এবং আধিকারিকদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। জ্যোতি মালহোত্রার পরিস্থিতি এই ধরনের ঘটনার প্রতিফলন হতে পারে, যেখানে সন্দেহের কেন্দ্রে রয়েছে তার বিদেশ সফর, বিলাসী জীবনযাপন এবং সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি।