ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘ভারতের কাছে সংঘর্ষবিরতির অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান।’ প্রকাশ্যে একথা স্বীকার করে নিলেন খোদ পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশাক দার(India)।পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত অপারেশ সিঁদুর চালায়। তারই অংশ হিসাবে পাকিস্তানের ২টি বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আঘাত করা হয়। যার পরেই পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির অনুরোধ জানায় বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
পাক উপ-প্রধানমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি (India)
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসাক দার(India)। সেখানেই তিনি স্বীকার করেন, বাধ্য হয়েই ভারতকে সংঘর্ষবিরতির আবেদন করতে হয়েছিল তাঁদের। এর কারণ – রাওয়ালপিন্ডি এবং পাঞ্জাব প্রদেশের বিমানঘাঁটির খারাপ অবস্থা।সাক্ষাৎকারে পাক মন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, ‘রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি ও পাঞ্জাব প্রদেশের শরকোটের ‘পিএএফ ঘাঁটি রফিকি’-তে হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। সেই ধাক্কা এতটাই প্রবল ছিল যে যুদ্ধবিরতির আর্জি জানাতে হয়েছিল আমাদের।’ এর জন্য প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পরে সৌদি আরবের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছিল ইসলামাবাদ, এমনটাও জানান পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী।

পাকিস্তানকে সহায়তা সৌদি আরবের (India)
ইসাক দার সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ভারতের আক্রমণের পর, প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ক্ষমতা দেন(India)। আমাদের কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা ৪টার পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই রাতেই আড়াইটের দিকে শোরকোট বিমানঘাঁটির নূর খান বিমানঘাঁটিতে আক্রমণ করে ভারত।’ এরপরেই তিনি বলেন, ‘৪৫ মিনিটের মধ্যেই সৌদি প্রিন্স আমাকে ফোন করেছিলেন। জানান, মার্কো রুবিওর সঙ্গে আমার কথোপকথন সম্পর্কে তিনি জানতে পেরেছেন। এরপর জানতে চান, তিনি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন কিনা। আমি বলি, হ্যাঁ পারেন। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করে সৌদি প্রিন্স জানান, তিনি জয়শঙ্করকে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন-Thailand: গোপন ফোনালাপ ফাঁস! সংকটে থাইল্যান্ডের সরকার, পদত্যাগের মুখে প্রধানমন্ত্রী
পাক বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা ভারতের (India)
এর আগে পাকিস্তানের সেনা ও সরকার নয়াদিল্লির প্রত্যাঘাতকে মানতে চাননি প্রকাশ্যে(India)।তবে মে মাসের শেষদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আজারবাইজানে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় বলেন, ভারতের ব্রহ্মস মিসাইলে বিপর্যস্ত হয়েছিল পাক বায়ুসেনা ঘাঁটি। যার মধ্যে ছিল রাওয়ালপিন্ডি বিমানবন্দর। তাঁকেও বলতে শোনা গিয়েছিল, পাকিস্তান তার আগেই হামলার মতলব কষেছিল। কিন্তু তাদের হতভম্ব করে আগেই হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের সব রণকৌশল ব্যর্থ করে দিয়েছিল নয়াদিল্লি। এবার সেই একই কথা বললেন ইশাক দারও।নূর খান এয়ারবেস পাকিস্তানের অন্যতম সংবেদনশীল সামরিক ঘাঁটি। এখানেই বিমান বাহিনীর অপারেশন ও ভিআইপি পরিবহণ ইউনিট রয়েছে।

পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত ভারতের (India)
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরস্ত্রকে হত্যা করে লস্করের সঙ্গী সংগঠন টিআরএফ(India)। এই হামলার জবাবে ৭ মে ভোর-রাতে অপারেশন চালায় ভারত।ভারতের প্রত্যাঘাতে সিঁটিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। অপারেশন সিঁদুরের পরই সংঘর্ষবিরতির জন্য দিল্লিকে ফোন করে ইসলামাবাদ। কিন্তু পাকিস্তানের এই প্রস্তাব যথেষ্ট সন্দেহজনক ছিল। কারণ, ততক্ষণে পাক সেনা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গোলাবর্ষণ শুরু করে দিয়েছিল। যদিও এরপর সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। সেই সময়ই হটলাইনে কথা হয়েছিল দুই দেশের ডিজিএমওর। আপাতত সংঘর্ষবিরতি চলছে। যদিও সংঘর্ষবিরতি শুরুর পরও তা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান। সেই সময় ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে সেনা কমান্ডারদের তা প্রতিহত করতে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
