ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট দিন দিন (Pakistan Financial Situation) আরও গভীর হচ্ছে, যা নতুন করে প্রকাশ পেল দেশের ঋণসংকটের পরিসংখ্যানের মাধ্যমে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম নয় মাসে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লক্ষ কোটি টাকা বা প্রায় ৭৬ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপিতে। চলতি অর্থবর্ষ জুলাই থেকে শুরু হলেও এই ঋণের বোঝা দেশের অর্থনীতির উপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে।
দেশের অর্থনীতি কিছুটা হলেও স্থিতিশীল (Pakistan Financial Situation)
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ ঔরঙ্গজেব সোমবার প্রকাশিত অর্থনৈতিক (Pakistan Financial Situation) সমীক্ষায় জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে দেশের অর্থনীতি কিছুটা হলেও স্থিতিশীল হয়েছে। যদিও ২০২৩ সালে দেশটির জিডিপি ০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল, তবে ২০২৪ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, ২০২৫ সালে এই বৃদ্ধির হার আরও বাড়িয়ে ২.৭ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
পাকিস্তানের ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক (Pakistan Financial Situation)
তবে এই উন্নতি স্বত্বেও পাকিস্তানের ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক মাত্রায় (Pakistan Financial Situation) পৌঁছেছে। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম নয় মাসে দেশীয় ব্যাংক থেকে সরকার যে ঋণ নিয়েছে, তার পরিমাণ প্রায় ৫১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি। বিদেশি উৎস থেকেও প্রায় ২৪ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি রুপি ঋণ নেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী এও উল্লেখ করেছেন, গত বছর পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে কিছুটা উন্নতি হয়েছে, যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশার সঞ্চার করে।
অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাজেটটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট পাকিস্তানের পার্লামেন্টে মঙ্গলবার পেশ করার কথা থাকলেও, দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাজেটটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। পাকিস্তানে ভারত- পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং সীমান্ত সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে, অর্থনৈতিক সুরক্ষায় বাজেটটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা
শাহবাজ শরিফ সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি চিনকে ‘সর্বকালের বন্ধু’, সৌদি আরবকে ‘বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু’ এবং তুরস্ক, কাতার ও আরব আমিরশাহিকেও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান নিজেকে বৈশ্বিক মঞ্চে অর্থনৈতিক ও কৌশলগতভাবে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।

দুর্বলতার প্রতীক হিসেবে ‘ভিক্ষার ঝুলি’
তবে পাকিস্তানের অর্থনীতির দুর্বলতার প্রতীক হিসেবে ‘ভিক্ষার ঝুলি’ নিয়ে ঘোরাফেরা করার বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা কতটা সংকটাপন্ন তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। বড় অর্থনৈতিক সাহায্যের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো এবং নিজেদের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য বহুমুখী উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: 10 June Horoscope: ধনুর সাফল্য, মেষের সফলতা, জানুন আজকের রাশিফল…
সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক চিত্র বেশ জটিল ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ। দেশের ঋণের বোঝা বৃদ্ধি পাওয়া, সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ এবং বিশ্ব বাজারে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা অর্জনে কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া আজ সময়ের জরুরি দাবি। আগামী বাজেট প্রস্তাবিত পরিকল্পনা ও নীতিমালা সেই দিকেই নজরদারি রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।