ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত থেকে রফতানি হওয়া পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করলেন পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন বাণিজ্যচুক্তির কথা (Pakistan Oil Reserves)। তাঁর দাবি, পাকিস্তানে যে বিশাল তৈলভান্ডার রয়েছে, তার উন্নয়নে ইসলামাবাদ এবং ওয়াশিংটন যৌথ ভাবে কাজ করবে। এমনকি ভবিষ্যতে পাকিস্তান ভারতকে তেল বিক্রি করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
তেলের অঙ্কে কোথায় দাঁড়িয়ে পাকিস্তান? (Pakistan Oil Reserves)
তবে প্রশ্ন উঠছে, পাকিস্তানে আদৌ কতটা খনিজ তেল রয়েছে(Pakistan Oil Reserves)? ‘ওয়ার্ল্ডোমিটার’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী পাকিস্তানে ৩৫ কোটি ৩৫ লক্ষ ব্যারেল খনিজ তেল মজুত রয়েছে। যা বিশ্বের মোট সঞ্চিত তেলের মাত্র ০.০২১ শতাংশ। সঞ্চিত তেলের নিরিখে পাকিস্তানের স্থান ৫২তম।
বর্তমানে পাকিস্তানে দৈনিক প্রায় ৫.৫৬ লক্ষ ব্যারেল তেলের চাহিদা। কিন্তু উৎপাদন হয় মাত্র ৮৮ হাজার ব্যারেল। ফলে দেশটির আমদানিনির্ভরতা অত্যন্ত বেশি। পাকিস্তানের নিজস্ব উত্তোলিত তেলে দেশের চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ পূরণ হয়, বাকি ৮০ শতাংশ আমদানি করতে হয়।
তৈলভান্ডারের খোঁজ ও বাস্তবতা (Pakistan Oil Reserves)
পাকিস্তানের ওজিডিসিএল (OGDCL) নামক সংস্থা গত এক বছরে সিন্ধ, পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়ায় তেল ও গ্যাস ভান্ডারের খোঁজ পেয়েছে(Pakistan Oil Reserves)। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই ভান্ডারের সম্ভাবনা স্বীকৃতি দেয়নি। কোনও নির্দিষ্ট মানচিত্র বা পরিকাঠামো সংক্রান্ত পরিকল্পনাও প্রকাশ্যে আসেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খনিজ সম্পদ কাজে লাগাতে হলে পাকিস্তানকে খরচ করতে হবে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার — ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৩ হাজার কোটি টাকা। পরিকাঠামো গঠনে সময় লাগবে অন্তত পাঁচ বছর। পাকিস্তানের বর্তমান আর্থিক সঙ্কটে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন যে সহজ হবে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন: US Pakistan Trade : যুক্তরাষ্ট্র-পাক বাণিজ্য চুক্তি ঘিরে ধোঁয়াশা! তেল, শুল্ক নাকি কূটনৈতিক কৌশল?
রাজনৈতিক ব্যাকড্রপ ও ট্রাম্পের কৌশল (Pakistan Oil Reserves)
এই চুক্তিকে ঘিরে কূটনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন(Pakistan Oil Reserves)। বিশেষ করে যখন ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হয়েছে, তখন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট। ইসলামাবাদও দাবি করেছে, তারা একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করেছে, যার ফলে মার্কিন বাজারে পাকিস্তানি পণ্যে শুল্ক কমবে। যদিও ট্রাম্পের পোস্টে এমন কোনও উল্লেখ ছিল না।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের আগে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজের প্রভাব বিস্তার এবং চীন-ভারত-পাকিস্তান-আমেরিকা চতুর্ভুজে কৌশলগত অবস্থান মজবুত করতেই এই নাটকীয় ঘোষণার পথে হেঁটেছেন ট্রাম্প।

আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar : উপরাষ্ট্রপতির গাড়ি বিতর্ক! ১৭ মাসেও মেলেনি বুলেটপ্রুফ গাড়ি, চলাফেরা ইনোভায়!
চুক্তি সত্যিই কতটা কার্যকরী হবে(Pakistan Oil Reserves), পাকিস্তানের ‘বিশাল তৈলভান্ডার’ আসলে কতটা বাস্তব এবং এই বোঝাপড়া আদৌ বাণিজ্যের গতি বাড়াবে কিনা — এখন সেদিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক মহল। আপাতত ট্রাম্পের পোস্ট ঘিরেই তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক আলোড়ন।