ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কুমার ত্রিপাঠি সম্প্রতি চীনের সাহায্যে পাকিস্তানের দ্রুত নৌবাহিনী আধুনিকীকরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন (Pakistan Stealth Fighter)। তিনি মন্তব্য করেন, পাকিস্তান তাদের জনগণের কল্যাণের তুলনায় অস্ত্র সংগ্রহে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এখন জানা যাচ্ছে, পাকিস্তান আগামী দুই বছরের মধ্যে ৪০টি চীনা জে-৩৫এ স্টেলথ ফাইটার জেট সংগ্রহ করতে চলেছে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই ফাইটার? (Pakistan Stealth Fighter)
চীনের শেনইয়াং এয়ারক্রাফ্ট কর্পোরেশনের তৈরি এই অত্যাধুনিক স্টেলথ ফাইটার জেট ভূমি এবং সমুদ্র উভয় ক্ষেত্রেই মিশন চালাতে সক্ষম (Pakistan Stealth Fighter)। এটি পাকিস্তানের বিমান শক্তিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে। এই সময়ে, ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ), বিশ্বে তৃতীয় স্থানে থাকা সত্ত্বেও, যুদ্ধবিমানের সংকটের মুখোমুখি।
আইএএফ এর অবস্থা (Pakistan Stealth Fighter)
আইএএফ এখন তাদের বর্তমান সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবহারেই মনোযোগ দিচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানের এই উন্নত স্টেলথ জেট (Pakistan Stealth Fighter) সংগ্রহ ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন: Kazakhstan Plane Crash: কাজাখস্তানে বিমান দুর্ঘটনা, মৃত ৩৮, নজরে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
উচ্চ পর্যায়ের কমিটি
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং-এর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির কাজ আইএএফ-এর প্রধান কার্যক্ষমতার ঘাটতিগুলি পূরণ করার রোডম্যাপ তৈরি করা। ১৯৯৬ সালে আইএএফ-এর স্কোয়াড্রনের সংখ্যা ছিল ৪১। বর্তমানে তা কমে মাত্র ৩০-এ এসে দাঁড়িয়েছে, যা ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় থেকেও কম।
সঙ্কটের কারণ
আইএএফ-এর বর্তমান সংকটের মূল কারণ হলো পুরনো সোভিয়েত যুগের মিগ বিমানগুলির অবসর এবং সেগুলির পরিবর্তে নতুন বিমানের অভাব। এলসিএ তেজস এমকে-১এ প্রকল্প, যা মার্চ ২০২৪ সালের মধ্যে ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল, তা বিলম্বিত হচ্ছে। এর পেছনে প্রোডাকশন সমস্যা, জিই এয়ারোস্পেসের সরবরাহ চেইনের সমস্যা এবং অসমাপ্ত সিস্টেম সার্টিফিকেশন দায়ী।
এদিকে, তেজস এমকে-২ এবং পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ ফাইটার এএমসিএ এখনো নকশার পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া, ১১৪টি বিদেশি জেট সংগ্রহের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলারের মাল্টি-রোল ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট প্রকল্পও অনেক দেরিতে শেষ হবে।
আরও পড়ুন: Fire at Secretariat: বাংলাদেশ সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! মৃত ১ দমকলকর্মী, নাশকতার আশঙ্কা
নেই সরকারি ঘোষণা
পাকিস্তানের চীন থেকে জে-৩৫এ সংগ্রহের বিষয়ে বেইজিং বা ইসলামাবাদ সরাসরি কোনও ঘোষণা না করলেও, পর্যবেক্ষকরা বলছেন এটি চীনের পিএলএ জেনারেল ঝাং ইয়ৌজিয়ার সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফরের ফলাফল। এই বৈঠকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্য পাক বিমান
পাকিস্তান ইতিমধ্যেই চীনের সহযোগিতায় জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান তৈরি করছে। পাকিস্তান এই বিমানকে সব আবহাওয়ায় উড়তে সক্ষম এবং মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান হিসেবে দাবি করে। তবে, ভারতীয় সামরিক পরিকল্পনাকারীদের মতে, এলসিএ-এমকে-১এ আসলে জেএফ-১৭-এর তুলনায় উন্নত বিমান।
চীন পাকিস্তানের বিমান বাহিনীকে J-10 যুদ্ধবিমান সরবরাহ করছে। অর্ডার করা ২৫টি জেটের মধ্যে ১৫টি ডেলিভারি করা হয়েছে। J-10C, যা J-10CE নামেও পরিচিত, আজ পর্যন্ত পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সবচেয়ে পরিশীলিত প্ল্যাটফর্ম হিসাবে বিবেচিত হয়।
মিলিটারি এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, J-35A, শেন ফেই J-35 বা FC-31 Gyrfalcon নামেও পরিচিত, এটি রপ্তানি ও দেশীয় সামরিক ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। J-35A হল দ্বিতীয় পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ ফাইটার যা চীন J-20-এর পরে তৈরি করেছে।
নৌ বাহিনীর সহযোগিতা
পাকিস্তানের নৌবাহিনীর ক্ষেত্রেও চীনের সহযোগিতা চলছে। ২০১৫ সালে তারা চীনের সঙ্গে ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে আটটি হ্যাংগর-ক্লাস সাবমেরিন সংগ্রহের জন্য। এছাড়া, পাকিস্তান আরও দুটি টাইপ ০৫৪এ/পি ফ্রিগেট সংগ্রহ করছে।
পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান বিমান ও নৌবাহিনীর শক্তি ভারতীয় প্রতিরক্ষার জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।