ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পেগাসাস স্পাইঅয়্যার বিতর্কে মুখ খুলল সুপ্রিম কোর্ট (Pegasus Spyware)। ইজ়রায়েলি সংস্থার তৈরি এই নজরদারি প্রযুক্তি নিয়ে ওঠা একাধিক মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে স্পাইঅয়্যার ব্যবহার ‘ভুল’ নয়। তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা শ্রেণির বিরুদ্ধে যদি বেআইনিভাবে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে, তা হলে সেটি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার হচ্ছে? (Pegasus Spyware)
বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, “একটি দেশ তার জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করতেই পারে (Pegasus Spyware)। স্পাইঅয়্যার থাকার মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, কার বিরুদ্ধে এবং কী উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।” আদালতের স্পষ্ট মত, “সংবিধান একটি সভ্য সমাজের প্রতিটি নাগরিককে গোপনীয়তার অধিকার দিয়েছে। যদি কেউ মনে করেন, তাঁর সেই অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তা হলে আদালত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রস্তুত।”
তথ্য গোপন রাখার ওপর জোর (Pegasus Spyware)
যদিও এই পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রীয় সরকারকে সরাসরি দায়মুক্তি দেওয়া হয়নি, তবে আদালত স্পষ্ট করে দেয়, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনও রিপোর্ট বা তথ্য সর্বসমক্ষে আনা যাবে না (Pegasus Spyware)। পেগাসাস সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টও তাই জনসমক্ষে প্রকাশ করতে রাজি হয়নি আদালত(Supreme Court of India)। বেঞ্চ জানায়, “এই রিপোর্টকে আমরা রাস্তাঘাটের আলোচনার বিষয়বস্তু করে তুলতে চাই না। তবে যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বলে দাবি করেছেন, তাঁদের নির্দিষ্টভাবে রিপোর্টের বিষয়বস্তু জানানো যেতে পারে।”

বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে কী ছিল? (Pegasus Spyware)
বিতর্কের সূত্রপাত হয় ২০২১ সালে, যখন আন্তর্জাতিক সাংবাদিক গোষ্ঠী ‘ফরবিডেন স্টোরিজ’ এবং ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর যৌথ অনুসন্ধানে দাবি করা হয়, ভারত-সহ বিশ্বের একাধিক দেশে সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদদের উপর নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হয়েছে পেগাসাস স্পাইঅয়্যার (Pegasus Spyware)। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট একটি তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ২০২২ সালের জুলাই মাসে রিপোর্ট জমা দেয়।ওই রিপোর্ট অনুসারে, কমিটি ২৯টি মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে। তার মধ্যে কোনওটিতেই পেগাসাস স্পাইঅয়্যারের প্রমাণ মেলেনি। তবে পাঁচটিতে ম্যালঅয়্যার পাওয়া গেলেও তা পেগাসাস নয় বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি, কমিটি স্পষ্ট জানায়, তদন্ত চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:Pahalgam Attack : পহেলগাঁও হামলার সাতদিন পার! অধরা জঙ্গিরা কোথায়,কেন মিলছে না উত্তর?
আগামী শুনানি ৩০ জুলাই (Pegasus Spyware)
শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ব্যক্তির মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মধ্যে সুষম ভারসাম্য রক্ষা (Pegasus Spyware)। আগামী ৩০ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে।এই পর্যবেক্ষণ ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও নতুন করে আলোড়ন শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার উপর কেন্দ্রীয় সরকারের নজরদারির প্রবণতা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। যদিও সরকারের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই কিছু প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ জরুরি।