ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওড়িশার পর এবার দিল্লিতে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক বীরভূমের ৬ পরিযায়ী শ্রমিক। আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের। দ্রুত শুনানির আর্জি পরিবারের। মামলা দায়েরের অনুমতি বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চের (Calcutta HC)। আগামী শুক্রবার ওড়িশার পাশাপাশি দিল্লির এই মামলার শুনানি।
বাংলাদেশি বলে ‘দাগিয়ে’ আটক বাংলার শ্রমিকদের! (Calcutta HC)
ওড়িশার পর এবার দিল্লিতে বাংলাদেশি সন্দেহে রাজ্যের ছয় পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করার অভিযোগ উঠল দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন দুই পরিবারের আইনজীবী। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছে। ওড়িশার একই ঘটনা নিয়েই ইতিমধ্যে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের হয়েছে। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী জানান, ওড়িশা নিয়েও একই ধরনের মামলা দায়ের হয়েছে। তাই দুই ঘটনার শুনানি একসঙ্গেই হবে (Calcutta HC)। আগামী শুক্রবার শুনানির সম্ভাবনা।
দিল্লি পুলিশের হাতে আটক ছয় পরিযায়ী শ্রমিক বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ জুন দিল্লির রোহিনী পুলিশ জেলার কেএন কাটজু থানা এলাকায় বাংলাদেশি সন্দেহে ছ’জনকে আটক করা হয়। আটক হওয়ার পরই শ্রমিকরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁরা পরিবারকে জানান যে বাংলাদেশি সন্দেহে পুলিশ তাঁদের আটক করেছে। পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করতে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত দিল্লি পৌঁছন।

কেএন কাটজু থানা পরিবারের সদস্যরা পৌঁছলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়, বাংলাদেশি সন্দেহে যাদের আটক করা হয়েছিল তাদের বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এবং ‘পুশব্যাক’ করে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কোন এলাকা দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে, সেকথা থানা থেকে তাঁদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়ে রাজ্য শ্রম দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন তারা। পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামই হাইকোর্টে মামলা করার কথা বলেন।
দ্রুত শুনানির আর্জি হাইকোর্টে (Calcutta HC)
আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের আইনজীবী জানিয়েছেন, কর্মসূত্রেই দিল্লি গিয়েছিলেন বীরভূমের ওই ছয় পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু বর্তমানে তাদের সঙ্গে কোনওরকম ভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ওই ছ’জন বর্তমানে কোথায় রয়েছেন, কিছুই জানেন না পরিবারের লোকেরা। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার আর্জি জানিয়েই হাইকোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমেরই নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের ১৬ পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করার অভিযোগ ওঠে ওড়িশা পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁদের পরিবারেও কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হয়েছেন।
নলহাটির ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নজরে আসলে তিনি তাঁদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হন। গত বৃহস্পতিবার ওড়িশার মুখ্যসচিব মনোজ আহুজাকে চিঠি পাঠিয়ে ওই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মনোজ পন্থ। আটক শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, শ্রমিকদের হেফাজতে নেওয়ার কোনও নথি এখনও পর্যন্ত দাখিল করা হয়নি। তাঁদের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও হাজির করা হয়নি। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, কেউ বাংলায় কথা বললেই, অন্যান্য রাজ্যে তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ শ্রমিক ভেবে হেনস্থা করা হচ্ছে বা বাংলাদেশে ‘পুশব্যাকের’ চেষ্টা করা হচ্ছে। যা নিয়ে তিনি যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ওই সমস্ত আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্বিগ্ন পরিবারকে সবরকম ভাবে আইনি সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।