ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা(Shubhanshu Shukla)। ইতিমধ্যেই তাঁর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ২৪ ঘন্টার বেশি অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে।এরমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার কথা বললেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ফলে ৪১ বছর পর আবার এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল দেশ।
ইতিহাস গড়লেন শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)
শুভাংশু শুক্লা অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের মাধ্যমে আইএসএস-এ পৌঁছেছেন(Shubhanshu Shukla)। তিনি ভারতের প্রথম মহাকাশচারী যিনি এই মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছেন এবং ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে যাত্রা করেছেন। তাঁর সঙ্গী মিশন কমান্ডার পেগি হুইটসন, পোল্যান্ডের স্লাভোস উজনানস্কি-ভিসনেভস্কি ও হাঙ্গেরির তিবর কাপু।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুভাংশু শুক্লার সঙ্গে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে কথা বলেছেন। এই কথোপকথন ভারতের মহাকাশ গবেষণায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে এক্স বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শুভাংশু শুক্লার হাসিমুখে কথোপকথনের দৃশ্য শেয়ার করা হয়েছে। পিএমও ইন্ডিয়া-র পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার সঙ্গে আলাপচারিতা করেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী-শুভাংশু শুক্লার কথোপকথন (Shubhanshu Shukla)
প্রধানমন্ত্রী মোদী শুভাংশু শুক্লার সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর এই ঐতিহাসিক যাত্রার জন্য অভিনন্দন জানান এবং মিশনের সাফল্য কামনা করেন(Shubhanshu Shukla)। তিনি বলেন, ‘আপনি ভারতের ত্রিবর্ণ পতাকা নিয়ে মহাকাশে গিয়েছেন এবং ১৪০ কোটি ভারতীয়র আশা-আকাঙ্ক্ষা বহন করছেন। এটা শুধু বিজ্ঞান নয়, এটা আবেগ, এটা ভারতের গর্ব।’ এরপরেই শুভাংশু শুক্লাপ্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘মহাকাশে থাকা আমার জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এখানে থাকতে পারা এক বিশাল সৌভাগ্যের বিষয়। যা কল্পনা করেছিলাম, বাস্তবে তা আরও অবাক করছে আমাকে। চারপাশের দৃশ্য তো অসাধারণ বটেই, কিন্তু তার থেকেও বেশি মুগ্ধ হয়েছি আমার সহযাত্রীদের আন্তরিকতা দেখে। এই ১৪ দিন বৈজ্ঞানিক গবেষণা চলবে, প্রযুক্তি পরীক্ষার এক চমৎকার অভিজ্ঞতা অর্জন করব আমরা।’ এই মিশনে মোট ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা হবে, যার মধ্যে সাতটি নেতৃত্ব দেবেন শুভাংশু নিজে। তাঁরা মাইক্রোগ্র্যাভিটি বা ক্ষুদ্র মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশে গবেষণা ও শিক্ষামূলক পরীক্ষা চালাবেন।

আরও পড়ুন-BRICS: ব্রাজিলে ব্রিকস সামিটে যোগ প্রধানমন্ত্রীর, পুতিন-জিনপিংয়ের অনুপস্থিতিতে চর্চা
গাজরের হালুয়া (Shubhanshu Shukla)
শনিবার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে শুভাংশুকে মোদী প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যে গাজরের হালুয়া নিয়ে গিয়েছিলেন, তা সকলকে খাইয়েছেন?’ উত্তরে শুভাংশু হেসে বলেন, ‘হ্যাঁ! আমি এখানে গাজরের হালুয়া, মুগের হালুয়া, আম রস নিয়ে এসেছিলাম, যাতে আমার সহযাত্রীরা ভারতের বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী খাবার চেখে দেখতে পারেন(Shubhanshu Shukla)। মহাকাশ স্টেশনে থাকা বাকিরাও আমার সঙ্গে তৃপ্তি করে সে সব খেয়েছেন। সকলের খুব ভাল লেগেছে।’মহাকাশের বিশালতা প্রসঙ্গে শুভাংশু বলেন, ‘প্রথম চিন্তা ছিল বাইরে থেকে কোনও সীমান্ত দেখা যায় না, আমরা মানচিত্রে ভারতকে দেখি, ভারত সত্যিই খুব বিশাল দেখায়, মানচিত্রে আমরা যা দেখি তার চেয়েও বেশি বিশাল দেখায়। বাইরে থেকে মনে হচ্ছে কোনও রাজ্য বা দেশ নেই, বরং মনে হচ্ছে আমরা সবাই এক। এখান থেকে আমরা অনুভব করি যে কোনও সীমানা নেই, কোনও দেশ নেই। আমরা সকলেই মানবতার অংশ, পৃথিবী আমাদের বাড়ি এবং আমরা সকলেই এর অংশ।’

মহাকাশ স্টেশনে ভারত (Shubhanshu Shukla)
গত ২৫ জুন, নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেস এক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে চড়ে চার মহাকাশচারী পাড়ি দেন আইএসএস-এ(Shubhanshu Shukla)। তাঁদের মধ্যেই একজন ছিলেন শুভাংশু শুক্লা।শুভাংশুর হাত ধরে মহাকাশ স্টেশনে প্রথম পা পড়ে ভারতের। ইতিহাসে প্রথম বার! আইএসএস থেকে হিন্দিতে দেওয়া ভাষণে শুক্লা ভারতের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসা এবং আশীর্বাদের কারণেই আমি নিরাপদে আইএসএসে পৌঁছেছি। আমার কাঁধে যে তেরঙ্গা পতাকা বহন করছি তা দেখে আমার মনে হয় যেন পুরো দেশ আমার সঙ্গে আছে।’ মহাকাশে শুভ্রাংশু ও তাঁর টিমকে ১৪ দিন ধরে থাকতে হবে।
