ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আসন্ন ২৯ মে সিকিম সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সিকিম রাজ্যের ৫০তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এই সফর বলে জানা গিয়েছে (PM Modi to Visit Sikkim)। যদিও এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যেই আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। পালজোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অন্তত ১ লক্ষ মানুষ। এই সফর রাজ্যবাসীর কাছে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
উন্নয়ন ও নিরাপত্তা—দুটি দিকেই গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর সফরে (PM Modi to Visit Sikkim)
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর শুধু সিকিমের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জানা গিয়েছে, তিনি রাজ্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি চিন সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব বিশ্লেষণও করবেন প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে।
এই মুহূর্তে ভারত-চিন সম্পর্কের টানাপোড়েন, অপারেশন সিঁদুর এবং পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে এই সফরের তাৎপর্য আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সীমান্তবর্তী রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি প্রতিরক্ষা কৌশলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।
চিন-পাকিস্তান যোগসাজশের মাঝে সিকিম সফর (PM Modi to Visit Sikkim)
সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হামলায় চিনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার তথ্য সামনে এসেছে। অস্ত্র সরবরাহ থেকে শুরু করে প্রযুক্তিগত সহায়তা—সব ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের পাশে ছিল লালফৌজ। এরই মধ্যে চিনা আগ্রাসনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় (PM Modi to Visit Sikkim)। ফলে, সিকিমে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর কেবলমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিকিম সফরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশের নিরাপত্তার বার্তা যেমন স্পষ্ট করবেন, তেমনি আন্তর্জাতিক স্তরেও চিনকে বার্তা দিতে চাইবেন যে ভারত নিজের সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপসহীন।
সিকিমের ভারতের অন্তর্ভুক্তির ইতিহাস (PM Modi to Visit Sikkim)
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর সিকিম ছিল একটি প্রটেক্টরেট রাজ্য। ১৯৫০ সালে ভারত-সিকিম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে ভারতের হাতে আসে সিকিমের পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সিকিমের স্বায়ত্তশাসন বজায় ছিল।
আরও পড়ুন: Rajdhani Express: উত্তরপ্রদেশে রেললাইনে নাশকতার ছক, ট্রেন দুর্ঘটনা এড়াল জোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন!
পরবর্তীকালে ১৯৭৩ সালে রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলনের জেরে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ১৯৭৫ সালের ১৪ এপ্রিল গণভোটের মাধ্যমে সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ১৬ মে সিকিম ভারতের ২২তম রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
জাতীয় নিরাপত্তা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে গুরুত্ব পাচ্ছে সিকিম
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে সিকিম অন্যতম কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত। তাই সিকিমের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা—দু’টি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রাধিকার বরাবরই রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফর সেই অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।