ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা স্পর্শকাতর এলাকায় (Murshidabad Situation) অনবরত রুটমার্চ করছে। গ্রামে গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশও। জঙ্গিপুর মহকুমার সুতি, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জের মতো এলাকায় রবিবার রাতে নতুন করে আর অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভরসা জুগিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁদের গ্রাম না ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অশান্তির আবহে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
আলাদা করে পরিকল্পনা করছে রাজ্য পুলিশ (Murshidabad Situation)
মুর্শিদাবাদের একাংশ অশান্তি শুরু হয় বেশ কিছুদিন থেকেই। সংশোধনী ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে জঙ্গিপুরে অশান্তি ছড়ায় (Murshidabad Situation)। ক্রমে সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়ে সুতি, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জ এবং ফরাক্কা থানার কিছু এলাকায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে পড়েছিল যে, শুক্রবার গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। নতুন ওয়াকফ আইনকে ঘিরে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ, সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ানের মতো বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি যাতে নতুন করে উত্তপ্ত না-হয়ে ওঠে, তার জন্য আলাদা করে পরিকল্পনা করছে রাজ্য পুলিশ।
মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ (Murshidabad Situation)
মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে রবিবার রাত পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে রাজ্য পুলিশের তরফে (Murshidabad Situation)। এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে গুলিতে। বাকি দু’জন, বাবা–ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই মামলায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে ধুলিয়ানে আরও একজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। অশান্তিতে মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর মিলল।
৫০০ পরিবার মাটি ছাড়া
মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান-সহ একাধিক এলাকার কমপক্ষে ৫০০ টি পরিবার নিজেদের ভিটে-মাটি ছেড়ে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন মালদহের বৈষ্ণবনগর পারলাল হাই স্কুলে। সেখানেই আপাতত গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ত্রাণ শিবির। দুর্গতদের অভিযোগ, ‘আমাদের আর কিছুই নেই। বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আসবাবপত্র সব জ্বালিয়ে দিয়েছে। সোনা গয়না, টাকা পয়সা, এমনকি গরু ও অন্যান্য গৃহপালিত পশুগুলি নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।’ অশান্তির আবহে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল
রাত থেকেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সুতি ও শামসেরগঞ্জের মোট ৯টি স্পর্শকাতর এলাকায় রাতভর কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল শুরু হয়েছে। রবিবার সকালেও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের যৌথ রুটমার্চ লক্ষ্য করা গিয়েছে। সারারাত জেলার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোট ৩০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই নিয়ে তিনদিনে মুর্শিদাবাদে মোট ১৩৮জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পরিস্থিতি মোটের উপর শান্তিপূর্ণ
আপাতত পরিস্থিতি মোটের উপর শান্তিপূর্ণ। রবিবার দিনভর মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। রবিবারই তিনি জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলে ‘গুজবে কান না দেওয়ার’ বার্তাও দিয়েছিলেন। কেউ কোনও সমস্যায় পড়লে অবিলম্বে পুলিশকে খবর দেওয়ার কথা বলা হয়। শমসেরগঞ্জের দু’টি, ধুলিয়ান ও সুতি এলাকার একটি করে, মোট চারটি এলাকাকে অতি স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে বাড়তি নজরদারি।