ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইনস্টাগ্রামে ১ মিলিয়ন ফলোয়ার্স। ইউটিউব, ফেসবুকেও যথেষ্ট জনপ্রিয় গুজরাটের সুরাটের বাসিন্দা কৃতি প্যাটেল(Honeytrap)। সেই জনপ্রিয়তার আড়ালে হানিট্র্যাপে ফাঁসিয়ে তোলাবাজির মতো অপরাধমূলক কাজও চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। গুজরাটের এক বিল্ডারকে হানিট্র্যাপে ফাঁসিয়ে ২ কোটি টাকা তোলাবাজি এবং ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে প্রায় ১০ মাস পলাতক থাকার পর কৃতি প্যাটেল গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কৃতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ? (Honeytrap)
গত ১০ মাস ধরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে(Honeytrap)। অভিযোগ, ভাজু কাত্রোদিয়া এবং বিজয় সাভানি নামক দুই ব্যক্তির মধ্যে একটি সম্পত্তি নিয়ে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে আইনি মামলা চলছিল। সেই সময় সাভানি কৃতির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বিল্ডার্স কাত্রোদিয়াকে ফাঁসায়। তরুণী কাত্রোদিয়ার সঙ্গে একটি ছবি এডিট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে চাপে ফেলার চেষ্টা করে। তাঁর থেকে ২ কোটি টাকা দাবি করা হয়।এরপরেই কাত্রোদিয়া ২০২৪-এর ২ জুন কাপোদারা থানায় কৃতি, বিজয়-সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। তবে তখন থেকে পলাতক ছিলেন কৃতি প্যাটেল। কখন আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন করতেন, কখনও ফোন বা সিম পাল্টে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াতেন তিনি। অবশেষে বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সক্রিয় পুলিশ (Honeytrap)
সুরাট পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের ২ জুন প্যাটেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল(Honeytrap)। এরপর আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। এই মামলায় প্যাটেল ছাড়াও আরও চারজনকে অভিযুক্ত রয়েছে, যাদের আগেই গ্রেফতার করা হয়।পুলিশ জানায়, কৃতি প্যাটেল বারবার অবস্থান ও সিমকার্ড বদলে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপন করে ছিলেন। কখনও সুরাট, কখনও আহমেদাবাদে অবস্থান করছিলেন তিনি। তবে অবশেষে প্রযুক্তি ও সাইবার টিমের সহায়তায় তাকে ট্র্যাক করা সম্ভব হয়।সুরাটের উপকমিশনার অফ পুলিশ (ডিসিপি) অলোক কুমার বলেন, ‘প্রায় ১০ মাস ধরে আমরা কৃতি প্যাটেলকে খুঁজছিলাম। অবশেষে আহমেদাবাদের সারখেজ এলাকায় তার অবস্থান শনাক্ত করে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করি। তিনি হানিট্র্যাপ, তোলাবাজি, এমনকি জমি দখলের মামলাতেও অভিযুক্ত।’
আরও পড়ুন- Uttar Pradesh: প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় স্ত্রী, তারপর স্বামী যা করলেন…
একাধিক অভিযোগের মুখে (Honeytrap)
ডিসিপি আরও বলেন, ‘এই ১০ মাসে তিনি বারবার ফোন নম্বর, সিমকার্ড ও আইপি অ্যাড্রেস বদলেছেন(Honeytrap)। আমরা ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করি। আরও কয়েকটি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে, আমরা সেসব মামলারও তদন্ত করব।’ ডিসিপি অলোক কুমার সাধারণ জনগণকে কোন ধরনের তোলাবাজির শিকার হলে সরাসরি থানায়, এএসপি বা ডিসিপির দফতরে অভিযোগ করার অনুরোধ জানান।‘কীর্তি আদালজা’ নামেও পরিচিত এই ইনফ্লুয়েন্সারের বিরুদ্ধে শুধু হানিট্র্যাপ নয়, রাজ্যজুড়ে রয়েছে একাধিক জমি দখল এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ। সুরাট আদালত তাঁর বিরুদ্ধে আগেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় অবশেষে আমেদাবাদের সারখেজ এলাকা থেকে কৃতিকে খুঁজে বের করা হয়।

আরও পড়ুন-Amit Shah: ‘যাঁরা ইংরেজি বলেন, ভবিষ্যতে লজ্জা পাবেন!’ কেন বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী?
কৃতি প্যাটেল কে? (Honeytrap)
কৃতি প্যাটেল কৃতি আদালজা নামেও পরিচিত(Honeytrap)। ২০১৯ সালে ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেছিলেন নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। পুলিশ যখন তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল, তখনও তিনি প্রকাশ্যে অনলাইনে হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ থাকতেন। ইনস্টাগ্রামেও সমান ‘জনপ্রিয়’ ছিলেন কৃতি। ফলোয়ার ছিল ১৩ লক্ষ। জেল থেকে ফিরে আসার পর কৃতির বিরুদ্ধে বাকি মামলাগুলির তদন্তও নতুন করে শুরু হবে। ইতিমধ্যেই তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসতে পারে।একসময় যিনি ইনস্টাগ্রামে লাইমলাইটে ছিলেন, তিনিই আজ পুলিশের জালে। এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল-সোশ্যাল মিডিয়ার মোহ কখনও কখনও কীভাবে বিপদ ডেকে আনতে পারে।
