ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেল “লাল সোনা” পাচারের কাহিনী দক্ষিণ ভারতীয় ছবি “পুষ্পা: দ্যা রাইজ”- এর দ্বিতীয় ভাগ “পুষ্পা: ২ দ্যা রুল” (Pushpa 2)। এই ছবিতে রাজা একজনই, পুষ্পারাজ! কিন্তু এই ছবিতে আরও একটি আকর্ষণ হলো “লাল চন্দন”।
বিশ্বে ব্যপক চাহিদা (Pushpa 2)
গোটা বিশ্বে এই লাল চন্দনের ব্যাপক চাহিদা ও দামের জন্য একে “লাল সোনা” বলা হয় (Pushpa 2)। কিন্তু, এই লাল চন্দনের কেন এত চাহিদা? আর কোথায়ই বা রয়েছে এই ‘লাল সোনা’র খনি? কেনই বা এই লাল চন্দন গাছ কাটা ভারতে নিষিদ্ধ? কেমন করে হয় বাস্তবের লাল চন্দন কাঠ পাচার? আর ভারত সরকার কীভাবেই বা লাল চন্দনের পাচার বন্ধ করছে?
বাস্তবে আছে এই জঙ্গল (Pushpa 2)
পুষ্পা (Pushpa 2) ছবির শুটিং যে জঙ্গলের কাহিনী বলা হয়েছে সেটা বস্তবেই রয়েছে তামিলনাড়ুর সীমান্তের অন্ধপ্রদেশের চারটি জেলায়। নেল্লোর, কুর্নুল, চিত্তোর ও কাডাপ্পা এই চার জেলাতে রয়েছে এই লাল চন্দনের ঘন জঙ্গল। শেষাচলম পাহাড়ের গায়ে রয়েছে এই লাল চন্দনের জঙ্গল। এই জঙ্গলে রয়েছে সারি সারি লাল চন্দন গাছ। যা গোটা বিশ্বের বাজারে বহু মুল্যবান।
শুধু এখানেই আছে গাছ
ভারতে একমাত্র এই অঞ্চলেই পাওয়া যায় লাল চন্দন। তামিলনাড়ু ও অন্ধপ্রদেশ সীমান্তে রয়েছে পূর্বঘাট পর্বত। এই পূর্বঘাট পর্বতের শুষ্ক আবহাওয়াতে এই লাল চন্দন গাছ বেড়ে ওঠে। এক সময় লাল চন্দন গাছ দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকার ব্যাপক সংখ্যায় পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে অন্ধপ্রদেশের এই চার জেলার মধ্যেই পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক ভাবে এই লাল চন্দন গাছ পৃথিবীর অন্য পাওয়া যায় না, তবে বর্তমানে এই গাছের চাহিদা ও বিলুপ্তির কথা মাথায় রেখে চাষ করা হচ্ছে লাল ‘সোনা’।
আরও পড়ুন: Sambhal Violence: চিহ্নিত ৪০০! ছবি দিয়ে পোস্টার পড়বে সম্বলের রাস্তায়?
চন্দন কাঠের প্রকার
চন্দন কাঠ মুলত দুই ধরনের হয়। একটা সাদা চন্দন, আর একটা লাল চন্দন। সুগন্ধি কাঠ হল সাদা চন্দনের। কিন্তু, লাল চন্দন দেখতে সুন্দর। এই গুন লাল চন্দনকে বহু মুল্যবান করে তুলেছে। এই চন্দন কাট ব্যবহার করে বাদ্যযন্ত্র, আসবার, ঘরসজ্জা, পুজোর উপকরণ ও বিভিন্ন কাঠের আর্ট তৈরিতে ব্যবহার হয়। কিন্তু, এই কাঠের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ভেষজ হিসেবে।
ভেষজ গুন
লাল চন্দন কাঠের মধ্যে রক্ত পরিশোধন গুন রয়েছে। পাচনতন্ত্রের সমস্যা, কাশি, মুখের ত্বকে ব্রন ও দাগ নিয়ন্ত্রণের ওষধি ক্ষমতা রয়েছে। এছারা লাল চন্দন কাঠ বাতের ব্যাথার কমানোর গুন রয়েছে। লাল চন্দন কাঠের এই সব গুনের জন্যই এই কাঠের এত চাহিদা।
লাল চন্দনের দাম কত?
বিশ্ববাজারে লাল চন্দনের ব্যাপক চাহিদার কারনেই এর দামও অনেক বেশি। এক কেজি লাল চন্দনের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা এর মধ্যে থাকে। আর এই কাঠের এত দাম হওয়ার কারনেই এটি এত বেশি চুরি ও পাচার হয়। আমাদের দেশে লাল চন্দন গাছ কাটা নিষিদ্ধ। আর এজন্যই পাচারকারিরা দক্ষিণ ভারতের জঙ্গল থেকে এই গাছ চুরি করে পাচার করে আন্তর্জাতিক বাজারে।
আরও পড়ুন: Maharashtra Government: উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী! দেবেন্দ্রর ডেপুটি হলেন একনাথ-অজিত
কোন দেশে আছে চাহিদা?
এই কাঠ ভারত থেকে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে পৌঁছে যায় দুবাই, সিঙ্গাপুর, সাংহাই, জাপান, দক্ষিণ করিয়ার মতো দেশে। লাল চন্দন কাঠের সবচেয়ে চাহিদা রয়েছে চিনে। একটি লাল চন্দন গাছ বেড়ে উঠতে সময় লাগে কমপক্ষে ৩০ বছর। কিন্তু, ব্যাপক হারে এই চন্দন গাছ কেটে ফেলার জন্য এই গাছ এখন প্রায় বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতি।
প্রায় বিলুপ্ত গাছ
গোটা পৃথিবীতে যে পরিমাণ চন্দন গাছ ছিল গত কয়েক দশকে তার মাত্র পাঁচ শতাংশ রয়ে গেছে। এজন্য এই চন্দন কাঠের পাচার রুখতে ভারত সরকার ‘রেড স্যান্ডলার্স অ্যান্টি-স্মাগলিং টাস্ক ফোর্স’ নামে একটি স্পেশাল ব্রাঞ্চ তৈরি করেছে। ২০১৮ সালে এই লাল চন্দন গাছকে আইইউসিএন প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করেছে।