ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পশ্চিমি দুনিয়ার বিরাট নিষেধ এতটুকু দমাতে পারেনি, উল্টে তিন বছর লাগাতার প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন পুতিন (Putin Wealth)। এই যুদ্ধে রাশিয়ার জয় এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। এজন্য বার বার শিরোনামে থাকছেন এক সময়ের ‘সোভিয়েত সুপার পাওয়ার’ দেশটির রাষ্ট্র নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে সদ্য শপথ নেওয়া আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ৭২ বছর বয়সী রশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
পুতিনের বেতন কত? (Putin Wealth)
প্রেসিডেন্ট হিসেবে রাশিয়ার রাষ্ট্র প্রধান ভ্লাদিমির পুতিন কত টাকা বেতন পান (Putin Wealth)? এই নিয়ে একেক জন একেক রকম মতামত রয়েছে। তবে নিজের বেতন নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে নিজেই জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। একবার একটি সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন, তিনি বছরে ১.৪ লক্ষ ডলার বেতন পান। যদি সেই অর্থকে ভারতীয় মুদ্রায় হিসেব করা হয় তাহলে সেটা দাঁড়ায়! তবে কিছু পশ্চিমি সংবাদ মাধ্যমের দাবি, তাঁর বাস্তবিক সম্পত্তির পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী পুতিন? (Putin Wealth)
লগ্নিকারী বিল ব্রাউডার ২০১৭ সালে আমেরিকার পার্লামেন্ট ‘কংগ্রেস’-এর উচ্চ কক্ষ সেনেটের বিচারবিভাগীয় কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেন। যে সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ে তিনি পুতিনের সম্পত্তি (Putin Wealth) সংক্রান্ত বিস্ফোরক তথ্য পেশ করেন। ওই লগ্নিকারী বিল ব্রাউডার দাবি করেন, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির থেকেও বেশি সম্পত্তি রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে। পুতিন আমাজ়নের মালিক জেফ বেজোসের এবং ফেসবুকের মালিক মার্ক জ়ুকেরবার্গের থেকেও বেশি সম্পত্তির মালিক। অনুমান করা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে নাকি প্রায় ২০ হাজার কোটি ডলারের বেশি সম্পত্তি রয়েছে।

কী কী সম্পত্তি রয়েছে পুতিনের?
সংবাদ সংস্থা ফরচুনের একটি প্রতিবেদন দাবি করছে, সরকারি হিসেবে পুতিনের সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ৮০০ বর্গফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং একটি ট্রেলার। এছাড়া, কৃষ্ণসাগরের তীরে একটি বাংলো রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই বাংলোটি ‘পুতিন কান্ট্রি কটেজ’ নামে পরিচিত। বিলাসবহুল বাড়িটির নির্মাণে খরচ হয়েছিল ১০০ কোটি ডলার। কাগজেকলমে অবশ্য বাংলোটির মালিকানা রয়েছে আর্কাডি রোটেনবার্গের কাছে। তবে তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা ফরচুন।

ওই রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, কৃষ্ণসাগরের তীরের বিলাসবহুল বাংলোটি প্রাচীন গ্রিক দেবতাদের মূর্তিতে সাজান। রয়েছে মার্বেলের তৈরি সুইমিং পুল এবং একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার। রয়েছে একটি আইস হকি রিঙ্ক, ক্যাসিনো এবং নাইটক্লাব। কৃষ্ণসাগরের তীরে থাকা বাংলোকে সারা বছর ঝাঁ চকচকে পরিস্কার রাখতে সেখানে বছরভর মোতায়েন থাকেন ৪০ জন কর্মচারী। এর জন্য বছরে ২০ লক্ষ ডলার খরচ হয়। সেই বাংলোর ডাইনিং রুমে থাকা আসবাবের দাম প্রায় পাঁচ লক্ষ ডলার। পুতিনের বাথরুমে রয়েছে ৮৫০ ডলারের ইটালিয়ান ব্রাশ যুক্ত টয়লেট।
আরও পড়ুন: 4 Day Work Week: চারদিনের কর্মসপ্তাহ চালু! সই করল ২০০ সংস্থা
পুতিনের গুপ্ত সম্পত্তি কত?
সরকারি ভাবে ঘোষিত সম্পত্তি ছাড়াও পুতিনের কাছে রয়েছে বিপুল পরিমাণ গুপ্ত সম্পত্তি। যার মধ্যে রয়েছে ১৯টি বাড়ি, ৭০০ গাড়ি, ৫৮টি বিমান এবং একটি হেলিকপ্টার। এছাড়াও ‘দ্য ফ্লাইং ক্রেমলিন’ নামের একটি উড়োজাহাজ ব্যবহার করেন তিনি। ওই বিমানটির নির্মাণ খরচই নাকি ছিল ৭১.৬ কোটি ডলার। অনেকই আবার বলেন পুতিনের নাকি একটি ‘শেহেরাজ়াদ’ নামে একটি প্রমোদতরী রয়েছে। তবে সরকারি ভাবে অবশ্য পুতিনের কোনো প্রমোদতরীর উল্লেখ নেই। তবে মাঝে মাঝে তাঁকে ওই জাহাজে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা গিয়েছে বলেও দাবি একটি পশ্চিমি সংবাদ সংস্থার।

পুতিনের ঘড়ির কালেকশন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘড়ির শখ রয়েছে। এজন্য তিনি বহু দামি ঘড়ি রেখেছেন নিজের কালেকশনে। পুতিনের ঘড়ির কালেকশনে রয়েছে ‘পাটেক ফিলিপ পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার’ এবং ‘এ ল্যাঞ্জ অ্যান্ড সোহনে ট্যুরবোগ্রাফ’-এর মতো ঘড়ি। বর্তমানে এই ঘড়ি গুলির দাম পুতিনের বার্ষিক বেতনের কয়েক গুণ।
কীভাবে এত সম্পত্তি?
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কীভাবে এত বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন এই নিয়ে কোনো নিদিষ্ট তথ্য নেই। এই নিয়ে রয়েছে বহু রহস্য। পশ্চিমি সংবাদ সংস্থার দাবি, রুশ অভিজাতদের নগদ অর্থ এবং শেয়ার নিয়ে এত সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এমনকি হুমকি দিয়ে অর্থ সম্পত্তি করেছেন পুতিন।