ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় রেলে একের পর এক দুর্ঘটনার ঘটনায় ইতিমধ্যেই যথেষ্ট চাপের মুখে পড়েছে রেল মন্ত্রক (Railway Protection Force) চেন টেনে রেলসেতুর উপর নামার চেষ্টা, আতঙ্কে কাঁপল রেল কর্তৃপক্ষ!। যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ‘কবচ’-সহ একাধিক প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করলেও তাতে যে পুরোপুরি সুফল মিলছে না, তার প্রমাণ একাধিক সাম্প্রতিক ঘটনা। সেই তালিকায় যুক্ত হলো উত্তরবঙ্গের তিস্তা রেল সেতুর উপর এক বিপজ্জনক ঘটনা।
কী ঘটেছে? (Railway Protection Force)
গত রবিবার প্রতিদিনের মতোই ছুটে চলছিল তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস। আচমকা তিস্তা নদীর উপর রেল সেতুতে পৌঁছতেই ট্রেনের চেন টেনে থামিয়ে দেন কয়েকজন যাত্রী। আচমকা ট্রেন থেমে যাওয়ায় মুহূর্তে সক্রিয় হন লোকো পাইলট, গার্ড এবং RPF (Railway Protection Force)। দ্রুত ছুটে এসে তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেন এবং যাত্রীদের নামতে বাধা দেন।
কেন এই ঘটনা? (Railway Protection Force)
জানা গেছে, এই যাত্রীরা জলপাইগুড়ির বিখ্যাত ‘জল্পেশ মন্দিরে’ পুণ্যার্থীরা (Railway Protection Force)। শ্রাবণ মাসে প্রতি রবি ও সোমবার এই মন্দিরে প্রচুর ভক্ত পায়ে হেঁটে বা ট্রেনে চড়ে আসেন। অনেকেই চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে দোমোহনি স্টেশনের আগে বা রেল সেতুর মধ্যবর্তী স্থানে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করেন, যাতে কম পথ হাঁটতে হয়। এটি শুধুই নিয়মবিরুদ্ধ নয়, মারাত্মক প্রাণঘাতীও বটে।
ঘটনা পুনরাবৃত্তি!
এটা কিন্তু প্রথম নয়। রেল সূত্রে খবর, গত সপ্তাহেও একই ঘটনা ঘটেছে। কিছু পুণ্যার্থী একইভাবে রেল সেতুর উপর ট্রেন থামিয়ে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যাত্রীদের এই ধরনের ‘ধর্মীয় অনুভূতির’ নামে রেল আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
রেলের উদ্বেগ ও পদক্ষেপ কী জানুন
রেল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা নিয়ে প্রবল উদ্বিগ্ন। একদিকে যেমন যাত্রীদের অসচেতনতা ও আইন লঙ্ঘন, অন্যদিকে রেলের ওপর চাপ বাড়ছে এই ধরনের আচরণের দায় বহনের জন্য। সূত্র বলছে, রেল এখন চিন্তাভাবনা করছে প্রতি রবি ও সোমবার দোমোহনি স্টেশনে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসকে এক মিনিটের জন্য দাঁড় করানোর বিষয়ে, যাতে যাত্রীরা নিরাপদে নামতে পারেন এবং এই বিপজ্জনক প্রবণতা রোধ করা যায়।
নিরাপত্তার প্রশ্ন
ট্রেনে চেন টেনে থামিয়ে রেল সেতুর উপর যাত্রী নামানো শুধু আইন বিরুদ্ধ নয়, প্রাণঘাতীও। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ব্রেক প্রয়োগ করে ট্রেন থামাতে হলে বগির ভারসাম্য ও রেলের গতি নিয়ন্ত্রণ চরমভাবে বিঘ্নিত হয়। এর ফলে পিছনে থাকা ট্রেনের সংঘর্ষ, ইঞ্জিন বিকল হওয়ার মতো বিপদও ঘটতে পারে।
রেল সূত্রের আবেদন
রেল কর্মীরা ও RPF যাত্রীদের বারবার অনুরোধ করছেন, ‘একটু ধর্মের জন্য অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নয়’। প্রশাসনও বিষয়টি নজরে এনেছে এবং স্থানীয় স্তরে পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনকে রেলযাত্রীদের সচেতন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ছাব্বিশের আগে বড় সিদ্ধান্ত, লোকসভায় নতুন দায়িত্বে অভিষেক…
এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি শুধু রেল নয়, সমস্ত যাত্রী ও সমাজের পক্ষেই এক ভয়ংকর বার্তা বহন করছে। ধর্মীয় বিশ্বাস যেমন ব্যক্তিগত অধিকার, তেমনই নিরাপত্তা ও আইন মানা একটি নাগরিকের দায়িত্ব। ভবিষ্যতের দুর্ঘটনা ঠেকাতে এখনই প্রয়োজন সচেতনতা, নিয়মকানুন মেনে চলা এবং প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ।