ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দাদা উদ্ধব ঠাকরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে মাতোশ্রীতে গেলেন মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে(Matoshree)। দীর্ঘ ৬ বছর পর ‘মাতোশ্রী’তে প্রবেশ করলেন তিনি।এই মাতোশ্রীতেই থাকতেন অবিভক্ত শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরে। বর্তমানে তাঁর পুত্র উদ্ধব সপরিবারে ওই বাসভবনে থাকেন। কয়েক দশক ধরে মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই বাড়িতে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএমএস)-র প্রধান তথা বাল ঠাকরের ভ্রাতুষ্পুত্র রাজের সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
উদ্ধব ঠাকরের জন্মদিন (Matoshree)
রবিবার ছিল বালাসাহেবের পুত্র তথা শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রধান উদ্ধব ঠাকরের জন্মদিন। সেই উপলক্ষেই মাতোশ্রীতে যান ভাই রাজ ঠাকরে(Matoshree)। লাল গোলাপের স্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দাদা উদ্ধবকে। মাতোশ্রীর ভিতরে প্রয়াত বালাসাহেবের ছবির সামনে হাসিমুখে দেখা যায় দুই ভাইকে। প্রসঙ্গত, ছ’বছর আগে পুত্র অমিতের বিয়েতে উদ্ধবকে আমন্ত্রণ করতে শেষ বার মাতোশ্রীতে এসেছিলেন রাজ। তারপর এই প্রথম বালাসাহেবের স্মৃতি বহনকারী ওই বাড়িতে পা রাখলেন তিনি।

ঠাকরে পরিবারে ভাঙন (Matoshree)
ঠাকরে পরিবারে ভাঙনের দুদশক হতে চলল(Matoshree)। সেই ২০০৫ সালে শিবসেনা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রাজ ঠাকরে। ২০০৬ সালে নিজের দল এমএনএস গড়েন বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো।তারপর সেভাবে উদ্ধবের পরিবারের ছায়াও মাড়াতে দেখা যায়নি রাজকে। বালাসাহেব তখনও বেঁচে এবং রাজনীতিতে সক্রিয়। পিতৃব্যের নামে একটি অভিযোগ না করলেও প্রকাশ্যে উদ্ধবের ‘নেতৃত্বগুণ’ নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। সুবক্তা রাজ রাজনীতিতে এসেছিলেন উদ্ধবের অনেক আগে। বস্তুত, দীর্ঘদিন বালাসাহেবের ‘রাজনৈতিক সহযোগী’ ছিলেন রাজই। সে সময় উদ্ধব ব্যস্ত থাকতেন বন্যপ্রাণীদের ক্যামেরাবন্দি করার শখ নিয়ে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে মরাঠি জনসমাজে ঢেউ তুললেও দীর্ঘমেয়াদি রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি রাজ। অন্যদিকে, বালাসাহেবের মৃত্যুর পর শিবসেনার নেতৃত্বে উঠে আসেন উদ্ধব।
আরও পড়ুন-Ladki Bahin: মহিলা-ভাতা পেয়েছেন ১৪,০০০ পুরুষ! মহারাষ্ট্রে সরকারি খাতে উধাও কোটি কোটি টাকা
দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন (Matoshree)
মরাঠা অস্মিতা হাতিয়ার করে দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতিতে নতুন কোনও সমীকরণ গড়ে তুলবে কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে(Matoshree)। তবে দুই সেনা একে অপরের সঙ্গে মিশে যাবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক পথ যে আপাতত আর পৃথক হবে না, তার ইঙ্গিত মিলেছে রবিবারও। জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে মাতোশ্রীর সামনে জড়ো হওয়া কর্মী-সমর্থকদের সামনে উদ্ধব বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে থাকব বলেই কাছাকাছি এসেছি। আমরা একসঙ্গে মুম্বই পুরনিগম এবং মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করব।’ অনুগামীরা বলছেন, এতেই ঠাকরে পরিবারের একটা বৃত্ত সম্পন্ন হল।

আরও পড়ুন-Rajnath Singh: ‘বন্দুক-গুলি দিয়ে যুদ্ধ জেতা যায় না!’ অপারেশন সিঁদুরের গোপন রহস্য ফাঁস রাজনাথের
বৃহন্মুম্বই পুরনিগমের নির্বাচন
আসলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই একটা কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে নাকি বৃহন্মুম্বই পুরনিগমের নির্বাচনে একসঙ্গে লড়তে চলেছে শিব সেনার উদ্ধব গোষ্ঠী এবং রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। আসলে সদ্যই মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে দু’দলের। উদ্ধব কোনওরকমে মুম্বই এলাকায় নিজের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রেখেছেন। আর রাজ ঠাকরে নিজের ছেলেকেও জেতাতে পারেননি। দুই দলই অস্তিত্বের সংকটে। তাই অস্তিত্ব বাঁচাতে পুরনো পারিবারিক বিবাদে ইতি টেনে এক ছাতার তলায় এসে গিয়েছেন ঠাকরেরা। ইতিমধ্যেই তাঁদের এক মঞ্চেও দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকারের ত্রিভাষা নীতির বিরুদ্ধে একসঙ্গে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। সেদিনের পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে একে অপরকে সমর্থন করছেন দুই ভাই।
