ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পুরীর রথযাত্রা শুধু একটি ধর্মীয় (Rathayatra 2025) উৎসব নয়, এটি আধ্যাত্মিকতা, ঐতিহ্য এবং ভক্তির এক অপূর্ব সমন্বয়। শত শত বছর ধরে চলে আসা এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা রীতিনীতি ও পৌরাণিক বিশ্বাস। এর মধ্যে অন্যতম ও সবচেয়ে আলোচিত প্রথা হল ‘ছেড়া পাহাড়’ যেখানে পুরীর গজপতি রাজা সোনার ঝাড়ু হাতে নিয়ে স্বয়ং ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার রথের পথ ঝাট দিয়ে পরিষ্কার করেন।
ভক্তি ও ভগবানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ (Rathayatra 2025)
এই রীতি কেবল একটি প্রতীকী কাজ নয়, বরং এর মধ্যে নিহিত (Rathayatra 2025) রয়েছে বিনয়, ভক্তি ও ভগবানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের গভীর বার্তা। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, সোনা একটি পবিত্র ধাতু। দেব-দেবীর আরাধনায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই রথযাত্রার আগে পথ সোনার ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা মানে, ঈশ্বরের আগমনের পূর্বে সর্বোচ্চ পবিত্রতার মাধ্যমে প্রস্তুতি নেওয়া। শুধু তাই নয়, এই রীতি রাজাকে ভগবানের সেবক হিসেবে দেখায়-এমনকি তিনি যতই উচ্চ আসনে থাকুন না কেন, ভগবানের সামনে সকলেই সমান।
শহর পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়েন (Rathayatra 2025)
এই ঐতিহ্য শুধু আধ্যাত্মিকতার প্রতীক নয়, বরং সমাজে একটি (Rathayatra 2025) ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়-ভগবানের কাছে কোনো শ্রেণিবিভেদ নেই। রাজাও সেখানে এক ভক্ত মাত্র। রথযাত্রার পেছনে একটি সুন্দর পৌরাণিক কাহিনীও রয়েছে। বলা হয়, একবার দেবী সুভদ্রা পুরী শহর দেখতে চেয়েছিলেন। তখন ভাই জগন্নাথ ও বলভদ্র তাঁকে রথে তুলে শহর পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়েন। পথমধ্যে তাঁরা মাসির বাড়ি, অর্থাৎ গুন্ডিচা মন্দিরে বিশ্রামের জন্য থামেন। সেই ঘটনাকেই স্মরণ করে আজও প্রতিবছর রথযাত্রা আয়োজিত হয়। তিনটি বিশাল রথে তিন ভাইবোনের প্রতিমা বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় গুন্ডিচা মন্দিরে, যেখানে তাঁরা সাত দিন অবস্থান করেন।
আরও পড়ুন: Sugar Price: এবার কমবে চিনির দাম? বর্ষা নামতেই স্বস্তি!
এই মহোৎসবে যোগ দিতে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত পুরীতে উপস্থিত হন। অনেকের বিশ্বাস, এই যাত্রার দৃশ্য দেখা বা রথ টানার সৌভাগ্য হলে জীবনের পাপ মোচন হয়। সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনায় অনেক উন্নতি এলেও, এই আদি রীতিনীতি ঠিক আগের মতোই পালন করা হয়। রথযাত্রা শুধুমাত্র ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এক সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক মিলনস্থল যা প্রতিবারই নতুন করে মানুষকে ভক্তি, বিনয় ও ঐতিহ্যের পাঠ পড়ায়।