Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল : নেপালে তরুণ প্রজন্ম ‘Gen Z’ এর নেতৃত্বে দুর্নীতি ও সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল অনলাইনে, সেটিই সোমবার রূপ নিল ভয়াবহ রাস্তাঘাটের আন্দোলনে(Nepal Gen Z Protest)। রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার যুবক-যুবতী। সংসদ ভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের পরিবেশ তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ গুলি চালালে একাধিক তরুণ আহত হয়েছেন।
কঠোর নিরাপত্তা ও কারফিউ জারি (Nepal Gen Z Protest)
সোমবার ভোর থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পার্লামেন্ট চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায়(Nepal Gen Z Protest)। বিক্ষোভকারীরা মৈতিঘর মণ্ডলা থেকে মিছিল শুরু করে সংসদের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। পথে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন তাঁরা। এর পরই পুলিশ টিয়ার গ্যাস, জলকামান এবং পরে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বহু বিক্ষোভকারী সংসদ ভবনের ভেতরেও ঢুকে পড়েন। পরিস্থিতি আরও অবনতির মুখে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করে প্রশাসন।
সেন্সরশিপের অভিযোগ (Nepal Gen Z Protest)
আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত— ২৬টি সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করা। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার), ইনস্টাগ্রাম, রেডডিট-সহ বড় প্ল্যাটফর্মগুলিকে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালে ব্লক করে দেওয়া হয়, কারণ তারা তথ্যমন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করেনি। সরকারের দাবি, এটি কেবল নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ। কিন্তু তরুণ সমাজ মনে করছে, এটি আসলে ভিন্নমত দমন ও সেন্সরশিপের হাতিয়ার।
আরও পড়ুন : Afghanistan Earthquake : আফগানিস্তানের ভূমিকম্পের উদ্ধার কার্যে নারীদের সঙ্গে বৈষম্য!
বিকল্প প্ল্যাটফর্মে সংগঠিত তরুণরা (Nepal Gen Z Protest)
সরকারি নির্দেশে ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাহত হলেও ‘Gen Z’ কর্মীরা বিকল্প প্ল্যাটফর্ম— টিকটক ও রেডডিট— ব্যবহার করে সংগঠিত হন। তাঁদের স্লোগান ছিল দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে। বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের সেন্সরশিপ কেবল ‘চূড়ান্ত স্ফুলিঙ্গ’। বহু দিন ধরে চলা দুর্নীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার জমাট ক্ষোভ এবার বিস্ফোরণ ঘটাল।
ওলির সাফাই (Nepal Gen Z Protest)
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (K P Sharma Oli) অবশ্য সরকারের পদক্ষেপকে ন্যায্য বলেই দাবি করেছেন(Nepal Gen Z Protest)। দলের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘জাতির মর্যাদা ও স্বাধীনতা কোনও মতেই খর্ব হতে দেওয়া যাবে না। আইন মানতে হবে সবার।’’ তাঁর মতে, অল্প কয়েক জনের চাকরির ক্ষতি হলেও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাই প্রধান।
তথ্যমন্ত্রক জানায়, ২৮ আগস্টের নোটিসে প্ল্যাটফর্মগুলিকে সাত দিনের মধ্যে নথিভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও মেটা, ইউটিউব, এক্স, রেডডিট, লিঙ্কডইন— কোনও সংস্থাই আবেদন করেনি। ফলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন : Zelenskyy On US Tariff : রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করলেই মার্কিন শুল্কের কোপ, সমর্থন করলেন জেলেনস্কি
কোথায় যাবে নেপালের তরুণ বিদ্রোহ? (Nepal Gen Z Protest)
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বিক্ষোভ শুধু সামাজিক মাধ্যম নয়, বরং বহুমুখী অসন্তোষের প্রতিফলন(Nepal Gen Z Protest)। কর্মসংস্থান সংকট, দুর্নীতি, নেতৃত্বের প্রতি অবিশ্বাস— সব মিলিয়ে তরুণ প্রজন্ম বিকল্প নেতৃত্ব ও স্বাধীনতার দাবি জানাচ্ছে। সেন্সরশিপ তাদের ক্ষোভকে আরও তীব্র করেছে।
প্রশ্ন একটাই— এই ‘Gen Z বিপ্লব’ সাময়িক রাগ নাকি নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে?