ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: নাট্যকার হিসেবে এবং অভিনয় জগতে চিরস্মরণীয় এই নাম উৎপল দত্ত (Utpal Dutta)। আজ সেই আগুনের জন্মদিন। আগুন কেন বলছি? গণনাট্যের বিপ্লবী ভাবনা নিয়ে নাট্যসাহিত্য ও নাট্যাভিনয়ের জগতে এক স্পর্ধা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন উৎপল দত্ত। মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদে বিশ্বাসী উৎপল দত্ত চেয়েছিলেন নাটকের মাধ্যমে সামাজিক জীবনের বদল ঘটাতে। হয়তো পেরেওছিলেন কিছুটা। নাট্যজগতের আকাশে উজ্জ্বল দুই নক্ষত্র শিশির ভাদুড়ি এবং শভু মিত্র যখন উজ্জ্বল, ঠিক সেই মুহূর্তে উৎপল দত্তের নাট্য জগতে প্রকাশ ও বিকাশ।
লিটল থিয়েটার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা (Utpal Dutta)
১৯৪৭-এ জি ওফ্রে কেণ্ডালের ‘ শেপীয়ারিয়ানা ইন্টারন্যাশন্যাল থি য়ে টার কোম্পানী’তে যোগ দেন। সেখান থেকেই তাঁর অভিনয় শুরু। তিনি শুধু শেক্পিয়ারের নাটক নয়, বার্নার্ডশ, গোল্ডস্মিথ প্রভৃতি নাট্যকারের নাটকে ও অভিনয় করেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি লিটল থিয়েটার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন (Utpal Dutta)। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সমকালীন রাজনৈতিক, সামাজিক দোলাচলতা। তিনি ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে কামিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক-নাট্যসংগঠন ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে নাট্যকার,অভিনেতা ও পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এবং মার্কসবাদী চিন্তাভাবনার সঙ্গে একাত্ম হন।
সূত্রপাত হয় অনবাদমূলক নাটকে (Utpal Dutta)
উৎপল দত্তের নাট্যরচনার সূত্রপাত হয় অনবাদমূলক নাটকের মাধ্যমে । তিনি অনবুাদ করেছেন ‘ম্যাকবেথ’, ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’, ‘মিডসামার নাইটস ড্রিম’, ‘জলিুলিয়াস সিজার,’ ‘টুয়ে লফথ নাইট’; হেনরিক ইবসেনে র ‘ডলস হাউস’ প্রভৃতি । ১৯৫২ খ্রি স্টাব্দ থে কে ১৯৫৭ খ্রি স্টাব্দ পর্যন্ত উৎপল দত্ত তাঁর লিটল থিয়েটারে গ্রুপের জন্য এই নাটকগুলি অনুবাদ করেন। উৎপল দত্তে র প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক ‘ছায়ানট’ প্রকাশকাল ১৯৫৮।
আরও পড়ুন: Jibanananda Dash: এক নজরে ‘নির্জনতম কবি’ জীবনানন্দ দাশ, সাহিত্য থেকে কর্মজীবন
রাজনৈতিক চেতনার প্রকাশ
উৎপল দত্ত যে সব নাটক লিখেছিলেন তাতে রয়েছে তাঁর রাজনৈতিক চেতনার প্রকাশ। এইসব নাটকগুলি হল— ‘বর্গী এলো দেশে ’(১৯৭০), ‘টিনের তলোয়ার’ (১৯৭১), ‘সূর্যশিকার’ (১৯৭১), ‘ব্যারিকেড’ (১৯৭২), ‘টোটা’ (১৯৭৩), ‘দুঃস্বপ্নের নগরী’ (১৯৭৪), ‘লেনিন কোথায়,’ (১৯৭৬), ‘এবার রাজার পালা’ (১৯৭৭), ‘তিতুমীর’ (১৯৭৮), ‘দাঁড়াও পথি কবর’ (১৯৮০), ‘অগ্নিশয্যা’ (১৯৮৮), ‘নীল সাদা লাল’ (১৯৮৯), ‘একলা চলো রে ’ (১৯৮৯), ‘লালদুর্গ (১৯৯০), ‘জনতার আফিম’ (১৯৯১) প্রভৃতি।
নাটককে অন্যতম সঙ্গী
ছাত্রাবস্থায় নাট্যচর্চা শুরু করেছিলেন, তারপর এই চর্চাতেই সারাজীবন অতিবাহিত করেছেন তিনি। অভিনয় এবং নাটক লেখা সবটাই তাঁর নেশা এবং পেশা দুটোই ছিল। তাই সারাজীবন নাটককে অন্যতম সঙ্গী করেই কাটিয়েছেন তিনি। দর্শক সমাজে ও নাট্যজগতে যথেষ্ট সাড়া ফেলে তাঁর প্রতিটি নাটক ও অভিনয়। আজও যা দর্শক ও পাঠকদের মনে গেঁথে রয়েছে, থাকবে আজীবন।