ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আরজি করের(RG Kar Case)নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীদের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আবেদন বিবেচনা করবে শিয়ালদহ এসিজেএম আদালত। আইনজীবীর সঙ্গে কত জন জুনিয়র থাকতে পারেন, সেটাও নির্ধারণ করবে নিম্ন আদালত। আর্জি পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শিয়ালদহ আদালতকে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরজি করের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আবেদন(RG Kar Case)
গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী মারফত আরজি করের(RG Kar Case) নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা ও মা আদালতে আর্জি জানান, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনাস্থলে তাঁরা একবার যেতে চান। তাঁদের মেয়ের উপর যে নির্যাতন হয়েছে, তার জন্য এক বার ঘটনাস্থলটি সরেজমিনে দেখতে চান। তাঁদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। শেষ শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানিয়ে ছিলেন, সিবিআইএর কোন আপত্তি না থাকলে অনুমতির জন্য আবেদনকারীকে লিখিতভাবে আদালতে আবেদন জানাতে হবে। বৃহস্পতিবার সেই আবেদনের মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীর আবেদন শিয়ালদহ এসিজেএম আদালত বিবেচনা করবে বলে জানিয়ে দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, শিয়ালদার এসিজেএম আদালতই এই আর্জি বিবেচনা করুক। কারণ বিচার ও তদন্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে সেই আদালতই সবচেয়ে ভালো অবগত।
নিরাপত্তার কারণেই অনুমতির আবেদন মামলাকারীর আইনজীবীর(RG Kar Case)
এদিন শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, এই আবেদনের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, শিয়ালদহর এসিজেএম আদালতেই এই আবেদন বিবেচনা করা হবে। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলের আশপাশ ঘোরার জন্য ওই আইনজীবীর সঙ্গে কত জন জুনিয়র থাকতে পারেন, সেটাও নির্ধারণ করবে নিম্ন আদালত। হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, আর্জি পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শিয়ালদহ আদালতকে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি, রাজ্য যদি এই মামলায় যুক্ত হতে চায়, তবে এসিজেএম আদালত সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে। কারণ, এই মামলায় এখনও পর্যন্ত রাজ্য কোনও পক্ষ নয়।
এদিন শুনানিতে আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা সেমিনার রুমের ভিতরে নয়, আশপাশের এলাকা চোখে দেখতে চাই। টোপোগ্রাফি কেমন, সেটা জানার আগ্রহ রয়েছে। সাধারণত এর জন্য অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না, তবে যেহেতু আরজি কর একটি স্পর্শকাতর জায়গা, তাই নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেই অনুমতির আবেদন করেছি। সেখানে সিআরপিএফ মোতায়েন রয়েছে।’
আবেদনের বিরোধিতা রাজ্যের আইনজীবীর(RG Kar Case)
রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, “প্রথমে আদালত ঠিক করুক, এই মামলায় নতুন করে তদন্ত হবে কি না। তদন্তের সিদ্ধান্ত না হলে ঘটনাস্থলে যাওয়ার অনুমতি কেন দেওয়া হবে?আইনজীবী কেবলমাত্র সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়ার জন্য এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই মামলায় এক সময় সুপ্রিম কোর্টেও তিনি আবেদন করেছিলেন এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতি তাঁকে বলেছিলেন, ‘আপনি বিরাট ঝুঁকি নিতে চাইছেন, সেটা করবেন না।’’ তবে গত শুনানির মতো এদিনও সিবিআই-এর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার ‘প্লেস অফ অক্যারেন্স’ দেখতে চাইলে তাদের কোনও আপত্তি নেই বলে আদালতকে জানান।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ
সবপক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশে বলেন, ‘শিয়ালদহ এসিজেএম আদালতই এই আর্জি বিবেচনা করুক, কারণ বিচার ও তদন্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনিই সবচেয়ে ভালো অবগত। তদন্তকারী সংস্থাগুলিও লিখিত ভাবে আদালতকে তাদের অবস্থান জানাক।’ পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশ, মূল মামলায় সিবিআইকে নতুন করে রিপোর্ট পেশ করতে হবে নিম্ন আদালতে। মূল মামলায় যুক্ত সব পক্ষকেই হলফনামা দিতে হবে আদালতে। আগামী ১৮ আগস্ট এই মামলার মূল আবেদনের শুনানি হবে হাইকোর্টে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ব্যক্তিগত অর্থ দিয়েই সোনার ঝাড়ু দান, আজ ‘নেত্র উৎসবে’ যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী
গত বছরের অগস্ট মাসে আরজি কর(RG Kar Case)হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ে রহস্যজনকভাবে ধর্ষণ ও খুন হন ওই হাসপাতালেরই তরুণী চিকিৎসক। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার নেয় সিবিআই। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়ে জানায় ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত এই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁকে আমৃত্যু কারাদন্ডের নির্দেশ দেয় শিয়ালদহ আদালত। তবে নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, তাঁদের কন্যার খুনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন আরও অনেকে।