ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মস্কোর রেড স্কোয়ারে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে সঙ্গে নিয়ে ৮০তম বিজয় দিবস উদযাপন করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Russia Victory Day)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়কে বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করে রাশিয়া। প্রতি বছর মস্কোয় বিজয় দিবস প্যারেড হয়। এই সবের মাঝেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সৈনিক গজেন্দ্র সিংকে শ্রদ্ধা জানতে ভুলে যায়নি মস্কো।
সুবেদার গজেন্দ্র সিং-কে স্মরণ (Russia Victory Day)
শুক্রবার রাশিয়া বিকাশ মার্গে ভারতীয় সৈনিকের ছবি দেওয়া বড় হোর্ডিং দেখা গিয়েছে (Russia Victory Day)। ছবির পাশাপাশি হোডিংয়ে লেখা রয়েছে, ‘রাশিয়ানরা তোমাদের ত্যাগ স্মরণ করুক। নায়েব সুবেদার গজেন্দ্র সিং এবং তার সহযোদ্ধারা ১৯৪২-১৯৪৩ সালে ককেশীয় ফ্রন্টে বিধ্বস্ত লাল সেনাবাহিনীকে গোলাবারুদ সরবরাহ করেছিলেন।’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাহসিকতার জন্য ১৯৪৪ সালে সোভিয়েত রাশিয়া ভারতীয় সৈনিক গজেন্দ্র সিংকে ‘অর্ডার অফ দ্য রেড স্টার’ খেতাবে ভূষিত করেছিল। গজেন্দ্র সিং ছাড়াও তামিলনাড়ুর সুবেদার নারায়ণ রাওকেও রেড স্টার প্রদান করা হয়।
উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা গজেন্দ্র সিং-র কর্মজীবন (Russia Victory Day)
উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলার বাদলু গ্রামের বাসিন্দা গজেন্দ্র সিংকে মস্কোর রাশিয়ান সেনা জাদুঘরের সাহসী সৈন্যদের গ্যালারিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (Russia Victory Day)। ১৯৩৬ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন গজেন্দ্র সিং। এরপরে, তাকে প্রশিক্ষণের জন্য চকওয়ালে (বর্তমান রাওয়ালপিন্ডি), যা এখন পাকিস্তানে অবস্থিত, সেখানে পাঠানো হয়েছিল। প্রশিক্ষণের পর, তাকে রয়েল ইন্ডিয়ান আর্মি সার্ভিস কর্পসে পোস্ট করা হয়। তাঁর কর্মজীবনে তাঁর বেশিরভাগ সময় কেটেছে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে, বর্তমানে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে।
গজেন্দ্র সিং-র পরিবার (Russia Victory Day)
গজেন্দ্র সিংয়ের নাতি সন্দীপ চাঁদ বলেন, ‘আমি শুনেছি যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময়, আমার ঠাকুরদা ইরাকের বসরায় ছিলেন। যেহেতু ব্রিটিশ সাম্রাজ্য মিত্র বাহিনীর অংশ ছিল, তাই তাকে অস্ত্র সরবরাহ কর্পসে নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং জার্মানদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সোভিয়েত সৈন্যদের জন্য রেশন, অস্ত্র এবং গোলাবারুদ বহন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোভিয়েত সৈন্যদের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর সময় কঠিন রাস্তা অতিক্রম করতে হতো। তার ইউনিটকে জার্মান বাহিনী আক্রমণ করেছিল এবং ঠাকুরদা গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তবুও, তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যাতে সোভিয়েতরা সরবরাহ পায়।’ চাঁদ আরও বলেন, পরে যখন ঠাকুরদা হাসপাতালে ঘুম থেকে ওঠেন, তখন তিনি দেখতে পান যে ডাক্তাররা তাকে ভারতে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তিনি সেখানেই থেকে যাওয়ার জন্য জোর দেন। তিনি সুস্থ হয়ে উঠে ব্যাটালিয়নে যোগ দেন এবং সোভিয়েতদের জন্য খাবার সরবরাহ অব্যাহত রাখেন।’