ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তাপ যখন ক্রমেই বিশ্ব রাজনীতিকে আলোড়িত করছে, সেই সময়েই সামনে এল এক চমকপ্রদ সম্ভাবনা— রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা আসন্ন নির্বাচনের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) শীঘ্রই বৈঠকে বসতে পারেন (Russia Ukraine Ceasefire)। এই বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় হতে পারে যুদ্ধবিরতি ও শান্তিপ্রক্রিয়া। রুশ সংবাদ সংস্থা ‘তাস’-এর খবর অনুযায়ী, মস্কোয় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে পুতিনের বৈঠকের পরেই এই পরিকল্পনা সামনে আসে।
পুতিন ও ট্রাম্প মুখোমুখি আলোচনায় ? (Russia Ukraine Ceasefire)
রুশ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইউরি উশাকোভ নিশ্চিত করেছেন, পুতিন ও ট্রাম্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মুখোমুখি আলোচনায় বসতে পারেন(Russia Ukraine Ceasefire)। বৈঠকে উপস্থিত থাকা উশাকোভ আরও জানান, তিন ঘণ্টার ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ‘ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে। এই মুহূর্তে ট্রাম্পের অবস্থান এবং আগামী মার্কিন নির্বাচনে তাঁর সম্ভাবনা ঘিরে যে উত্তেজনা চলছে, তার মধ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা নতুন কূটনৈতিক বার্তা বয়ে আনতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেব।” তিনি বারবার এই দাবির পুনরাবৃত্তি করে এসেছেন এবং বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ট দৃঢ়, যা তাঁকে এই শান্তিপ্রক্রিয়া সফল করতে সাহায্য করবে।
ট্রাম্পের উদ্যোগ ঘিরে বিতর্ক (Russia Ukraine Ceasefire)
তবে ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে ঘিরে বিতর্কও কম নয়। তিনি এর আগে রাশিয়াকে যুদ্ধ থামানোর জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন(Russia Ukraine Ceasefire)। গত ১৪ জুলাই তিনি মস্কোকে ৫০ দিনের সময় দিয়েছিলেন কিয়েভের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য। এমনকি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সময়সীমা শেষ হলে রাশিয়ার বাণিজ্য সহযোগীদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। কিন্তু নিজেই সেই সময়সীমা পরে লঙ্ঘন করে আবার নতুন সময়সীমা দেন।
এরপরই পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের আবহে প্রবল প্রতিক্রিয়া আসে মস্কোর দিক থেকেও। প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ট্রাম্পকে নিশানা করে বলেন, “যাদের ‘মৃত অর্থনীতি’ বলা হচ্ছে, তাদের ‘ডেড হ্যান্ড’ থেকে বিপদ আসতে পারে।”

‘ডেড হ্যান্ড’ স্বয়ংক্রিয় পরমাণু প্রতিশোধ ব্যবস্থা (Russia Ukraine Ceasefire)
‘ডেড হ্যান্ড’— যা সোভিয়েত আমলে তৈরি হওয়া একটি স্বয়ংক্রিয় পরমাণু প্রতিশোধ ব্যবস্থা— এই প্রসঙ্গে উঠে আসে(Russia Ukraine Ceasefire)। এটি এমন একটি সিস্টেম যা প্রয়োজনে সর্বাত্মক পারমাণবিক প্রতিশোধ চালাতে সক্ষম, এমনকি রুশ নেতৃত্ব ধ্বংস হয়ে গেলেও। মেদভেদেভের এই বক্তব্যের পরেই ট্রাম্প পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাশিয়ার জলসীমার কাছে মার্কিন পরমাণু ডুবোজাহাজ পাঠানো হবে।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই পুতিন-ট্রাম্প বৈঠক হলে তা একাধারে হতে পারে কূটনৈতিক ‘গেমচেঞ্জার’— আবার যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতেও পারে(Russia Ukraine Ceasefire)।

আরও পড়ুন: Crisis in Gaza : গাজায় ভয়াবহ অনাহার,অপুষ্টি তে মৃত্যু আরও ৪৪! বিপন্ন শিশুদের ভবিষ্যৎ
কেন এই আলোচনা? (Russia Ukraine Ceasefire)
এই মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধ শুধু ইউরোপের নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতি, জ্বালানি বাজার এবং কূটনীতি প্রভাবিত করছে(Russia Ukraine Ceasefire)। তাই ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হওয়ার আগেই পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত কেবল নির্বাচনী স্টান্ট নয়, বরং বৈশ্বিক স্থিতাবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
দেখার বিষয়, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ পর্যন্ত আদৌ বাস্তবায়িত হয় কি না, এবং যদি হয়ও, তার থেকে আদৌ যুদ্ধবিরতির কোনও বাস্তব সমাধান উঠে আসে কি না। এই মুহূর্তে বিশ্ববাসী তাকিয়ে— শান্তির সম্ভাবনার দিকে, না কি আরও এক রাজনৈতিক কৌশলের দিকেই?