ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ১১৮১ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Russia Ukraine Conflict)। সেই প্রস্তাব তিনি সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোনে জানিয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
দু’ঘণ্টার দীর্ঘ টেলিফোন সংলাপ (Russia Ukraine Conflict)
দু’ঘণ্টার দীর্ঘ টেলিফোন সংলাপে পুতিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাশিয়ার অধীনে থাকা অঞ্চলগুলি—বিশেষত ক্রাইমিয়া, ডনবাস এবং উত্তর ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে রুশ উপস্থিতি বজায় রাখতেই চান তিনি (Russia Ukraine Conflict)। এর জন্য ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহারেরও শর্ত দিয়েছেন রুশ রাষ্ট্রপতি। বিশ্লেষকদের মতে, এটি যুদ্ধবিরতির নামে রাশিয়ার কৌশলী আগ্রাসনকেই মান্যতা দেওয়ার প্রয়াস।উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মহলে এখনও ক্রাইমিয়া এবং ডনবাস ইউক্রেনের ভূখণ্ড হিসেবেই স্বীকৃত। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখলের পর থেকেই অঞ্চলটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সাম্প্রতিক যুদ্ধে রাশিয়া আরও নতুন অঞ্চল দখল করেছে। পুতিন সেই দখলদারির ‘বৈধতা’ নিশ্চিত করতেই যুদ্ধবিরতির মোড়কে রাজনৈতিক চুক্তির পথে হাঁটছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি আলোচনা (Russia Ukraine Conflict)
গত শুক্রবার ইস্তানবুলে রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম মুখোমুখি আলোচনার পর তৎপর হন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Russia Ukraine Conflict)। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছিল, ট্রাম্প (Donald J. Trump) রুশ এবং ইউক্রেনীয় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গেই যোগাযোগ করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। তবে আলোচনার চূড়ান্ত ফলাফল এখনও অস্পষ্ট। বিশ্লেষক মহলের মতে, যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ ও পুনর্গঠনে পশ্চিম ইউরোপ ও ন্যাটো দেশগুলি আগ্রহ দেখাতে পারে—এই সম্ভাবনায় পুতিন শঙ্কিত। তাই যুদ্ধবিরতির শর্তে তিনি পশ্চিমা সমর্থন ও ইউক্রেনের অস্ত্র আমদানি সীমিত করার প্রস্তাবও রেখেছেন।

চিন শান্তির পক্ষে (Russia Ukraine Conflict)
অন্য দিকে, চুপচাপ অবস্থানে থাকা চিন এবার প্রকাশ্যে এসেছে (Russia Ukraine Conflict)। মঙ্গলবার চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও উইং বলেন, “চিন শান্তির পক্ষে। আমরা চাই, দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করুক।” তবে ট্রাম্পের উদ্যোগকে গুরুত্বহীন করে তুলতে চিন ‘দ্বিপাক্ষিক আলোচনার’ উপর জোর দিচ্ছে বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা। চিন ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের নিরিখে অনেকেই মনে করছেন, বেইজিং চাইছে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রভাব বাড়াতে, এবং সেই কারণেই তারা মার্কিন মধ্যস্থতাকে নীরবে চ্যালেঞ্জ করছে।

যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা (Russia Ukraine Conflict)
এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা যতই উঁকি দিক না কেন, প্রকৃত অর্থে স্থায়ী শান্তি কতটা সম্ভব—তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে (Russia Ukraine Conflict)। পুতিনের ভূখণ্ড-দখলের শর্ত, ট্রাম্পের মধ্যস্থতা এবং চিনের কৌশলগত বক্তব্য—সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক নতুন কূটনৈতিক মোড় নিতে চলেছে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।