ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে এক সময়ের ‘বন্ধু’ বলে পরিচিত ছিলেন তাঁরা (Russia Ukraine Conflict)। কিন্তু ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জেরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা রিপাবলিকান দলের নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump)।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পের (Russia Ukraine Conflict)
শনিবার রাতে ইউক্রেনের রাজধানী কিভ এবং আশপাশের এলাকায় রাশিয়ার লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হন (Russia Ukraine Conflict)। এমন মানবিক বিপর্যয়ের পর রবিবার নিউ জার্সিতে সাংবাদিকদের সামনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেন ট্রাম্প। সাফ বলেন, “পুতিন বদ্ধ উন্মাদ হয়ে গিয়েছেন। বিনা কারণে বহু মানুষকে হত্যা করছেন।” শুধু তাই নয়, সাবধানবাণী শোনাতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “ওঁর যদি মনে হয় পুরো ইউক্রেন রাশিয়ার অধীনে আনা সম্ভব, তা হলে সেটাই হবে রাশিয়ার পতনের সূচনা।”
ট্রাম্প নীতিতে বদল (Russia Ukraine Conflict)
ট্রাম্পের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ তাঁর দ্বিতীয় বার হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার পর ওয়াশিংটনের রাশিয়া ও ইউক্রেন নীতি উল্লেখযোগ্য ভাবে বদলে যেতে থাকে (Russia Ukraine Conflict)। জো বাইডেনের আমলে ইউক্রেনকে যে নিঃশর্ত সামরিক ও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছিল, ট্রাম্প তা কমিয়ে দেন এবং প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ভবিষ্যতে এমন সমর্থন অব্যাহত থাকবে না। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সুর চড়ানোকে অনেকেই বলছেন “নীতিগত অবস্থানের বদল”। আবার অনেকে মনে করছেন, এটি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটব্যাঙ্ককে চাঙ্গা করার কৌশল।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মুখোমুখি আলোচনা (Russia Ukraine Conflict)
উল্লেখযোগ্য, গত সপ্তাহেই ইস্তানবুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা মুখোমুখি আলোচনা করেছেন, যেখানে কোনও মধ্যস্থতাকারী দেশের উপস্থিতি ছিল না (Russia Ukraine Conflict)। যদিও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, দুই দেশ ১,০০০ জন করে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলে আশাবাদের সুর ছড়িয়েছিল।কিন্তু সেই আশার মধ্যেই ফের রাশিয়ার তরফে এই হামলা পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তোলে। ইউক্রেনের দাবি, শনিবার রাতের হামলায় শুধু কিভেই নয়, আরও কয়েকটি শহরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।

রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প (Russia Ukraine Conflict)
এই হামলার পরেই ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, “আমি জানি না পুতিনের কী হয়েছে! এটা সেই মানুষটি নয়, যাকে আমি চিনতাম (Russia Ukraine Conflict)।” বিশ্লেষকদের মতে, রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এমন অবস্থান শুধু কূটনৈতিক বার্তাই নয়, বরং তাঁর নির্বাচনী অবস্থানকে আরও সংহত করতে পারে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগকে সামনে রেখে ট্রাম্প চাইছেন ‘শান্তিপ্রিয় ও দায়িত্ববান রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে। বিশ্ব রাজনীতিতে এই অবস্থান কতটা টেকসই হয়, তা এখন সময়ই বলবে। তবে পুতিন-ট্রাম্প সম্পর্ক যে নতুন মোড়ে ঢুকেছে, তা নিঃসন্দেহে স্পষ্ট।