ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছরের বেশি সময় পার হওয়ার পর অবশেষে মুখোমুখি আলোচনার পরিকল্পনা হলেও, ইস্তানবুলে সেই বৈঠক থেকেও অনুপস্থিত রইলেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান—ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জ়েলেনস্কি (Russia Ukraine Conflict)। তবে পুতিন কেন শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল করলেন, তা নিয়ে মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump)। তাঁর দাবি, “যতক্ষণ আমি আর পুতিন একসঙ্গে না বসি, কিছুই হবে না।”
বৈঠক এড়িয়ে গেলেন পুতিন (Russia Ukraine Conflict)
বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তানবুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় প্রতিনিধিস্তরে (Russia Ukraine Conflict)। রাশিয়ার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেডিনস্কি এবং ইউক্রেনের তরফে ছিলেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। তবে রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুপস্থিতি আলোচনার ভারসাম্য নষ্ট করে দেয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।এই প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “পুতিন যাচ্ছিলেন, কারণ তিনি ভেবেছিলেন আমিও ওখানে থাকব। পরে তিনি যখন জানতে পারেন আমি যাচ্ছি না, তখনই নিজের সিদ্ধান্ত বদলান।” ট্রাম্পের মতে, যুদ্ধ থামাতে বাস্তব সমঝোতা প্রয়োজন, আর সেটি সম্ভব কেবল “তাঁর ও পুতিনের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে”।
তুরস্কে মার্কিন বিদেশসচিব রুবিও (Russia Ukraine Conflict)
তবে এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে (Russia Ukraine Conflict)। কারণ, ট্রাম্প নিজেই কয়েক মাস আগে রুশ প্রেসিডেন্টকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এখন আবার সেই আলোচনার অগ্রগতিকে নিজের উপস্থিতির উপর নির্ভরশীল বলায় কিছু বিশেষজ্ঞ একে রাজনৈতিক নাটক বলেই মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে ইস্তানবুলে পৌঁছেছেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। যদিও তিনি মূল বৈঠকে অংশ নেননি, সূত্র বলছে তিনি রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন। তুরস্ক সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আঙ্কারা শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

পুতিনের অনুপস্থিতিকে সমালোচনা (Russia Ukraine Conflict)
যুদ্ধবিরতির জন্য পুতিনের অনুপস্থিতিকে ইউক্রেনও সমালোচনা করেছে (Russia Ukraine Conflict)। জ়েলেনস্কির এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, “পুতিনের অনুপস্থিতি দেখিয়ে দেয়, রাশিয়া আদৌ আলোচনায় আন্তরিক নয়।” যদিও জ়েলেনস্কিও আলোচনায় সরাসরি অংশ নেননি, তবে তুরস্কে উপস্থিত ছিলেন। শেষ মুহূর্তে পুতিন বৈঠকে না আসায় তিনিও আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

আরও পড়ুন:Akashteer Air Defence System : ভারতের ‘আকাশতির’ টেক্কা দিচ্ছে চিনের প্রযুক্তিকেও!
সংঘর্ষবিরতি সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিল (Russia Ukraine Conflict)
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতিমধ্যে হাজার হাজার প্রাণহানি ঘটিয়েছে, স্থানচ্যুত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ (Russia Ukraine Conflict)। নানা দেশ ও সংস্থা শান্তির উদ্যোগ নিলেও বাস্তবিক কোনো স্থায়ী সমাধান এখনও পর্যন্ত মিলেনি। এই পরিস্থিতিতে ইস্তানবুল বৈঠক ছিল আলোচনার সম্ভাব্য এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তবে রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুপস্থিতি সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিল বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও ট্রাম্প আশাবাদী, ভবিষ্যতে যদি আলোচনায় অগ্রগতি হয়, তবে তিনি নিজে তুরস্কে যেতে প্রস্তুত। সংবাদমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের মতে, আলোচনায় শুধু অস্ত্র নয়, নেতৃত্বের কৌশল এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সমীকরণও সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে এই যুদ্ধে।