ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে (Russia Ukraine War)। সোমবার গভীর রাতে দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ড্রোন যুদ্ধ। কিয়েভ ও মস্কো পরস্পরের উপর বিপুল সংখ্যক ড্রোন ব্যবহার করে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক হামলা চালিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যেই তারা ইউক্রেনের পাঠানো ৭৬টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন (Volodymyr Zelenskyy) দাবি করেছে, রাশিয়া তাদের উপর একদিনে প্রায় ৫০০টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে—যা এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ড্রোন আক্রমণ।
মস্কোর চার বিমানবন্দর সাময়িক বন্ধ (Russia Ukraine War)
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সতর্কবার্তার পরই মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়(Russia Ukraine War)। রাশিয়ার অসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থা রোসাভিয়াতসিয়া জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মস্কো শহরের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।এদিকে পাল্টা হামলায় পিছিয়ে নেই কিয়েভও। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা রাশিয়ার চালানো ৪৭৯টি ড্রোনের মধ্যে ৪৬০টি সফলভাবে ভূপাতিত করেছে। এছাড়া সম্প্রতি ইউক্রেন রাশিয়ার বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়ে প্রায় ৪০টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। তার জবাবে রাশিয়াও লাগাতার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে ড্রোন হামলা (Russia Ukraine War)
সবচেয়ে উদ্বেগজনক খবর এসেছে ওডেসা শহর থেকে(Russia Ukraine War)। সেখানকার গভর্নর ওলেহ কিপার জানিয়েছেন, সোমবার রাতে শহরের একটি হাসপাতালে বড় ধরনের ড্রোন হামলা হয়। হাসপাতালে থাকা জরুরি বিভাগ এবং প্রসূতি বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও এই হামলায় কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি নিশ্চিত করেন। তবে হাসপাতালের মতো অসামরিক স্থাপনায় এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়ার এই অতর্কিত ড্রোন হানাগুলি সাধারণ মানুষের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। শহরের পর শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, স্কুল ও হাসপাতাল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার তরফে সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে(Russia Ukraine War)।

আর ভয়াবহ যুদ্ধের সম্ভবনা (Russia Ukraine War)
বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তিনির্ভর এই ড্রোন যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন এক উদ্বেগ তৈরি করেছে(Russia Ukraine War)। যুদ্ধের ফলে শুধু সামরিক স্থাপনা নয়, নাগরিক অবকাঠামোও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ছে। বিশেষ করে ড্রোনের মতো স্বল্প খরচের কিন্তু মারাত্মক কার্যক্ষম প্রযুক্তির ব্যবহার যুদ্ধকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে।এই ড্রোন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত কেবল সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি একটি বৃহত্তর প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক সংঘর্ষ, যার প্রভাব সারা বিশ্বে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—এই সংঘাতের শেষ কোথায়? আর কত সাধারণ মানুষ এই যুদ্ধের বলি হবেন?