ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে প্রথম বার শান্তির ক্ষীণ আলোর ইঙ্গিত(Russia Ukraine War)। ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক শান্তি আলোচনার পর, সেনাদের মৃতদেহ বিনিময়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে শুরু করেছে। রবিবার প্রথম দফায় রাশিয়া একটি বিশেষ ট্রেনে ১২১২ জন ইউক্রেনীয় সেনার মৃতদেহ ইউক্রেনের উদ্দেশে পাঠিয়েছে।
শান্তি বৈঠক হলেও, স্থায়ী সমাধান এখনও অধরা (Russia Ukraine War)
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘তাস’-এর একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে (Russia Ukraine War)। সূত্র অনুযায়ী, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল আলেকজান্ডার জ়োরিন জানান, বহু মৃত সেনাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে নাম, পরিচয়পত্র এবং ব়্যাঙ্কের ভিত্তিতে। যাঁদের শনাক্ত করা যায়নি, তাঁদের দেহ চিহ্নিত করা হয়েছে পোশাক ও উদ্ধারস্থলের বিবরণ দেখে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে (Volodymyr Zelenskyy) রুশ সেনা অভিযান শুরুর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক চরমে পৌঁছেছে। একাধিক শহর ধ্বংস হয়েছে রুশ হামলায়। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইউক্রেনও। বহু সেনা ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে শান্তির জন্য বৈঠকে বসার প্রক্রিয়া আগেও হয়েছে, কিন্তু যুদ্ধবিরতি বা স্থায়ী সমাধান এখনও অধরা।
শান্তি বৈঠকে সেনার মৃত দেহ ফেরতের সিদ্ধান্ত (Russia Ukraine War)
সম্প্রতি ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত শান্তি বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা সামরিক মানবিকতার খাতিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন—উভয় দেশ একে অপরের প্রায় ১২,০০০ মৃত সেনার দেহ পরস্পরের দেশে ফেরত পাঠাবে(Russia Ukraine War)। এটি যুদ্ধের মধ্যেও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষার এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি যুদ্ধ শেষের নয়, কিন্তু একটি প্রয়োজনীয় সূচনা। আন্তর্জাতিক চাপ ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলির হস্তক্ষেপের ফলে এই সিদ্ধান্ত সম্ভব হয়েছে। আলোচনায় রাশিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জ়োরিন, আর ইউক্রেনের তরফে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের নাম গোপন রাখা হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে।

পদক্ষেপকে স্বাগত যুক্তরাষ্ট্রের(Russia Ukraine War)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে(Russia Ukraine War)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একাধিকবার দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে যুদ্ধ থামানোর বার্তা দিয়েছেন। তবে এখনই যুদ্ধবিরতির কোনও রূপরেখা তৈরি হয়নি।ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা খুব শীঘ্রই রুশ সেনাদের মৃতদেহ ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে। এই বিনিময়ের কাজ পরবর্তী সপ্তাহগুলিতে পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন হবে বলে জানা গিয়েছে।

যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা কতটা?(Russia Ukraine War)
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মৃতদেহ বিনিময়ের প্রক্রিয়া কেবলমাত্র মানবিকতায় নয়, যুদ্ধক্ষেত্রের তথ্য আদানপ্রদানের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ(Russia Ukraine War)। একই সঙ্গে এটি পরিবারগুলির জন্যও স্বস্তির খবর—যাঁরা এতদিন প্রিয়জনের কোনও খোঁজ পাননি।সবমিলিয়ে, ইস্তানবুল বৈঠকের পর যে মানবিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা যুদ্ধবিধ্বস্ত দুই দেশের মধ্যে আলোচনার নতুন দরজা খুলে দিতে পারে। যদিও যুদ্ধ বন্ধের বাস্তব সম্ভাবনা এখনও দূরে, তবে এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরে নতুন সম্ভাবনার ভিত্তি গড়ে দিচ্ছে—এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক মহল।