ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউক্রেনের পরে এ বার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Putin) পোল্যান্ডে সামরিক অভিযান চালাতে পারেন—এমন আশঙ্কা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে ইউরোপজুড়ে(Russia Ukraine War)। রাশিয়ার সীমান্তঘেঁষা নেটো সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ড আগেভাগেই সক্রিয় পদক্ষেপ শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই রাশিয়া-পোল্যান্ড সীমান্ত বরাবর যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে তারা। পাশাপাশি, শুরু হয়েছে নিয়মিত আকাশ টহল। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল একে ইউরোপে সম্ভাব্য নতুন যুদ্ধের পূর্বাভাস হিসেবেই দেখছে।
কেন এই পদক্ষেপ? (Russia Ukraine War)
পোল্যান্ডের সেনা অপারেশনাল কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘ইউক্রেন সীমান্তের বাইরে রুশ যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের তৎপরতা ক্রমেই বাড়ছে(Russia Ukraine War)। এই প্রেক্ষিতে আমাদের ও মিত্র দেশের যুদ্ধবিমানগুলি আকাশসীমা রক্ষার জন্য টহল শুরু করেছে।’’ সীমান্তে প্রায় ২৩২ কিমি বিস্তীর্ণ এই অঞ্চলটি ‘সেনা কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলেও জানানো হয়েছে।গত শনিবার ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সামরিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি ইউক্রেন যুদ্ধে ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ড্রোন আক্রমণ’। এর পরপরই পোল্যান্ড সীমান্তে রুশ ড্রোন ও বিমানের গতি প্রকৃতি তীব্র উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিতে পোল্যান্ড (Russia Ukraine War)
রুশ আগ্রাসনের সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় গত মার্চেই পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ঘোষণা করেছিলেন, দেশের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক ও সক্ষম পুরুষদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে(Russia Ukraine War)। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা এমন একটি মডেল তৈরি করতে চাই, যাতে প্রত্যেকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রিজ়ার্ভ বাহিনীর অংশ হিসেবে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত থাকে।’’ তাঁর সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে স্পষ্ট—রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতকে সামনে রেখেই এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের দিকে দ্রুত এগোচ্ছে ওয়ারশ।

আরও পড়ুন: US China Trade Meet : চিন-আমেরিকা বাণিজ্য সংঘাত নিরসনে লন্ডনে বৈঠক, নজরে বিরল খনিজ ও প্রযুক্তি পণ্য
রাশিয়ার আগ্রাসনের নানা ইঙ্গিত (Russia Ukraine War)
গত মাসে সুইডেন ও পোল্যান্ডের মধ্যে সমুদ্রতলে নির্মিত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের কাছে রাশিয়ার একটি জাহাজের ‘সন্দেহজনক গতিবিধি’ নজরে আসে(Russia Ukraine War)। এর আগেও ২০২৪ সালে পোল্যান্ড তার আকাশসীমায় রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলেছিল। সব মিলিয়ে রাশিয়ার সাম্প্রতিক পদক্ষেপে আগ্রাসনের একাধিক পূর্বাভাস মিলছে বলে দাবি করছে পশ্চিমা নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

ইউরোপের উদ্বেগ, আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া (Russia Ukraine War)
রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়া পোল্যান্ড আগে থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক ও মানবিক সাহায্য দিয়ে আসছে(Russia Ukraine War)। বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন নিয়েও সম্প্রতি রাশিয়াকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন টাস্ক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পরমাণু অস্ত্র সংবরণ চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন।’’বিশেষজ্ঞদের মতে, পোল্যান্ডে যদি রাশিয়া আক্রমণ চালায়, তা হলে সেটি সরাসরি নেটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হবে—ফলে পুরো ইউরোপ জুড়ে অস্থিরতা ও সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। এই অবস্থায় কূটনৈতিক সমাধানের আশায় তাকিয়ে রয়েছে গোটা ইউরোপ ও আন্তর্জাতিক মহল।