ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফের বিতর্কে। শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানালেন— “ইউক্রেন পুরোটাই রাশিয়ার”(Russia Ukraine War)। তাঁর এই মন্তব্যে চরম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কিভ। শান্তি প্রচেষ্টার বদলে রাশিয়া নতুন করে যুদ্ধ ছড়ানোর পথে হাঁটছে, এই অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন প্রশাসন।
রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ইউক্রেনের ২০% জমি (Russia Ukraine War)
এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের এক ভাগ জমিই কার্যত রাশিয়ার দখলে (Russia Ukraine War)। ২০১৪ সালে দখল করা ক্রাইমিয়া ছাড়াও, লুহানস্ক, ডোনেৎস্ক, খেরসন, জ়াপোরিঝঝিয়া, খারকিভ, সুমি ও ডিনিপ্রপেট্রোভস্ক অঞ্চলের বিশাল অংশে রুশ সেনা এখনো অবস্থান করছে। পুতিনের বক্তব্য, “রুশ ও ইউক্রেনীয়দের আমি এক মনে করি। সেই সূত্রেই ইউক্রেন পুরোটাই আমাদের।” সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, “যেখানে রুশ সেনার পা পড়ে, সেটাই আমাদের ভূখণ্ড।”
শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি ‘ঘৃণা’, বলছে ইউক্রেন (Russia Ukraine War)
পুতিনের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা (Russia Ukraine War)। তিনি এক্স-এ লেখেন, “এই মন্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, রাশিয়ার উদ্দেশ্য শান্তি নয়, বরং যুদ্ধের বিস্তার।” তাঁর কথায়, “আমেরিকার শান্তিপ্রচেষ্টা ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগকে অবজ্ঞা করতেই এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন পুতিন।” ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভিডিয়োবার্তায় জানান, “রাশিয়া চায় যুদ্ধ চলতেই থাকুক। পুতিন শান্তি চান না। তিনি চূড়ান্ত আগ্রাসনেই বিশ্বাস করেন।” তিনি আরও বলেন, “রুশ এবং ইউক্রেনীয়রা এক নয়। এবং ইউক্রেন কখনও রাশিয়ার অংশ ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না।”

পুতিনের যুক্তি কী? (Russia Ukraine War)
পুতিন (Putin) বলেন, তিনি ইউক্রেনের স্বাধীনতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলছেন না। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে ইউক্রেন যে নিরপেক্ষ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা তারা মানেনি। ইঙ্গিতে তিনি ইউক্রেনের পশ্চিমঘেঁষা নীতির কথাই বলেছেন। নেটো-তে যোগদানের ইচ্ছা, আমেরিকা ও ইউরোপের ঘনিষ্ঠতা— এসবকেই ইউক্রেনের ‘অবিশ্বাসযোগ্যতা’ হিসেবে তুলে ধরেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও আশঙ্কা (Russia Ukraine War)
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা ঘনীভূত হয়েছে (Russia Ukraine War)। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। পুতিনের এমন মন্তব্য সেই টানাপোড়েন আরও গভীর করতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, পুতিন এ বার হয়তো ইউক্রেনের আরও নতুন অঞ্চল দখলের রূপরেখা তৈরি করছেন। অন্যদিকে, আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপ শান্তিপ্রচেষ্টার পথেই এগোতে চাইছে।

আরও পড়ুন:Iran Israel Conflict : চিন থেকে ইরানের দিকে পাঁচটি বোয়িং ৭৪৭ উড়ান, ইরানকে রসদ জোগাচ্ছে ড্রাগন?
পুতিনের মন্তব্য (Russia Ukraine War)
পুতিনের “ইউক্রেন আমাদের” মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং তা আগাম হুঁশিয়ারি বলেই ধরে নিচ্ছে ইউক্রেন ও তার মিত্র দেশগুলি। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপে ফের এক অস্থির ভবিষ্যতের ছায়া। এখন দেখার, এই মন্তব্যের পর পশ্চিমা শক্তিগুলি কী অবস্থান নেয়, এবং সংঘাত থামাতে কোনও কূটনৈতিক পথ খোলা থাকে কি না।