ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: টানা তিন বছরের যুদ্ধে এমন ভয়াবহ আকাশপথে হামলার মুখে আগে পড়েনি ইউক্রেন— এমনটাই দাবি করেছে সে দেশের সেনাবাহিনী (Russia Ukraine War)। রবিবার রাতে ইউক্রেনের পশ্চিম, দক্ষিণ এবং মধ্যাঞ্চলে একযোগে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে রুশ সেনা। এক রাতেই ছোঁড়া হয়েছে ৫০০-র বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র, যার মধ্যে একটি হামলায় ধ্বংস হয়েছে একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান, মৃত্যু হয়েছে পাইলটের। এই তথ্যই প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা গুলি।
রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা (Russia Ukraine War)
ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহনাথ জানিয়েছেন, “এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আকাশপথে আক্রমণ। এক রাতেই ৪৭৭টি ড্রোন এবং ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে (Russia Ukraine War)।” এর মধ্যে ইউক্রেন বাহিনী সফলভাবে ২৪৯টি ড্রোন গুলি করে নামাতে পেরেছে, এবং ২০০-র বেশি ড্রোন ‘ইলেকট্রনিক জ্যামিং’-এর মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
তবে সব হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। বেশ কিছু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়ে আঘাত হানে ইউক্রেনের বসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ছয়জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, ধ্বংস হয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকায়।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের ক্ষতি ও পাইলটের আত্মবলিদান (Russia Ukraine War)
রুশ বাহিনীর এই হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে এক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আকাশেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়(Russia Ukraine War)। পাইলট শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে রুশ সেনার সাতটি বিমান গুলি করে নামান, কিন্তু নিজেই প্রাণ হারান। উল্লেখযোগ্য, ইউক্রেন ২০২৪ সালেই প্রথমবারের মতো নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হাতে পেয়েছে। ধ্বংস হওয়া বিমানটি সেই নতুন সরবরাহের মধ্যেই ছিল। এই ঘটনায় ইউক্রেন বাহিনীর মনোবলে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থাকলেও সেনা কর্তারা দাবি করেছেন, “আমাদের প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। এফ-১৬ প্রমাণ করেছে, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী হচ্ছে।”

যুদ্ধের পটভূমি ও কৌশলগত পরিস্থিতি (Russia Ukraine War)
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Putin) ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর ঘোষণা দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন(Russia Ukraine War)।এরপর থেকে লাগাতার যুদ্ধ চলেছে, তবে সম্প্রতি পশ্চিমা সাহায্যে ইউক্রেন কিছুটা ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করছিল। এই অবস্থায় রাশিয়ার এমন ব্যাপক বিমান ও ড্রোন হামলা পরিস্থিতিকে নতুন মোড়ে নিয়ে গেল। রয়টার্সের এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই হামলা রাশিয়ার কৌশলগত আগ্রাসনেরই অঙ্গ, যার লক্ষ্য ইউক্রেনের বায়ুসেনা ও অবকাঠামোগত শক্তিকে দুর্বল করা।

যুদ্ধ থামছে না, বাড়ছে রক্তক্ষয় (Russia Ukraine War)
এই সর্ববৃহৎ হামলা দেখিয়ে দিল, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এখন আরও বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে গিয়েছে (Russia Ukraine War)। নতুন প্রযুক্তি, নতুন সরঞ্জাম— কোনও কিছুই যুদ্ধ থামাতে পারছে না। বরং পাল্টা প্রতিশোধ এবং আক্রমণের ঢেউতে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও ধ্বংসের পরিসংখ্যান।