ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দুই দেশের কোটি কোটি নাগরিকের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে (Russia Ukraine War)। প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বিধ্বস্ত হয়েছে পরিকাঠামো, ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। এর মাঝেই একাধিকবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছে ইউক্রেন ও পশ্চিমী দেশগুলোর তরফে। তেমনই সম্প্রতি ইউক্রেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং পোল্যান্ডের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) সেই প্রস্তাবে কোনো ইতিবাচক সাড়া না দিয়ে উলটে ইউক্রেনের ওপর নতুন করে ড্রোন হামলা চালিয়ে বিশ্ববাসীকে চমকে দেন।
রাশিয়া ১০০টিরও বেশি আত্মঘাতী ড্রোন (Russia Ukraine War)
ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার গভীর রাতে রাশিয়া ১০০টিরও বেশি আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালায় (Russia Ukraine War)। বিস্ফোরণ এবং ধ্বংসের ভয়াবহতা যুদ্ধবিরতির আশা ছিন্ন করে দেয়। যদিও হতাহতের নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনও পর্যন্ত প্রকাশ পায়নি, তবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মতে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল দেশের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বেসামরিক পরিকাঠামো।
নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব (Russia Ukraine War)
পূর্বে ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা ৩০ দিনের জন্য নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে (Russia Ukraine War)। প্রস্তাবটি সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) নিজেও জানিয়েছেন, এই যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার উচিত মানবিকতার কথা ভাবা। একইসঙ্গে ফ্রান্স ও জার্মানির মতো দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারিও দেয়।

রাশিয়া ইউক্রেন আলোচনায় বসতে রাজি (Russia Ukraine War)
এই প্রেক্ষিতে রাশিয়ার তরফে একটি ভিন্ন বার্তা আসে (Russia Ukraine War)। প্রেসিডেন্ট পুতিন ঘোষণা করেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে রাজি, এবং এর জন্য আগামী ১৫ মে ইস্তানবুলকে প্রস্তাবিত স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে এই আলোচনার প্রস্তাবে ইউরোপীয় দেশগুলির যুদ্ধবিরতির আবেদন বা আন্তর্জাতিক চাপের প্রসঙ্গ একেবারেই উহ্য ছিল। বরং ইউরোপীয় নেতাদের মন্তব্য এবং হুমকির তীব্র সমালোচনা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের আলোচনার প্রস্তাব একটি কূটনৈতিক চালও হতে পারে। এতে আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনা এড়ানো যাবে এবং যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ করে নতুন কৌশল সাজানো সম্ভব হবে। অন্যদিকে, ইউক্রেন এখনও এই প্রস্তাব সম্পর্কে সরকারি প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

পুতিন ও জ়েলেনস্কির মধ্যে মুখোমুখি বৈঠক হয়নি (Russia Ukraine War)
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি একাধিকবার আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন (Russia Ukraine War)। কিন্তু বাস্তবে এখনও পর্যন্ত পুতিন ও জ়েলেনস্কির মধ্যে কোনও মুখোমুখি বৈঠক হয়নি। শেষবার এই দুই নেতা সরাসরি দেখা করেছিলেন ২০১৯ সালে। বিশ্বজুড়ে যখন যুদ্ধবিরতির পক্ষে জনমত তৈরি হচ্ছে, তখন এই নতুন ড্রোন হামলা যুদ্ধের উত্তাপকেই আরও বাড়িয়ে দিল। পুতিন আলোচনায় বসবেন কি না, তাতে যুদ্ধ থামবে কি না— এই প্রশ্নগুলির জবাব আপাতত ভবিষ্যতের গর্ভেই।