ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতকে ক্ষেপণাস্ত্রের ‘মেগা অফার’ দিল বন্ধু রাশিয়া (Russian offer for India)। অ্যারো ইন্ডিয়া শো শুরু হওয়ার ঠিক আগেই ভারতকে বড় সড় প্রস্তাব দিয়েছে মস্কোর। অনেকেই মনে করছেন, এবার ভারতেই তৈরি হতে পারে যুদ্ধ বিমানে ব্যবহৃত অন্যতম শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র! এই নিয়ে ইতি মধ্যেই জল্পনা তুঙ্গে।
অ্যারো ইন্ডিয়া শো (Russian offer for India)
১০ই ফ্রেব্রুয়ারি থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হয়েছে অ্যারো ইন্ডিয়া শো (Russian offer for India)। আগামী ১৪ই ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এটি। সেখানে ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য একাধিক হাতিয়ার এবং প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে বন্ধু রাশিয়া। সংবাদ মাধ্যম সুত্রে খবর, অ্যারো ইন্ডিয়া শো শুরু হওয়ার আগেই ‘আর-৩৭এম’ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিরক্ষা চুক্তির ব্যাপারে নয়াদিল্লির কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। ‘আর-৩৭এম’ আসলে একটি দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার গাইডেড মিসাইল। মাঝ আকাশে ‘ডগ ফাইট’-এর সময়ে শত্রুর যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করতে এর আসে পাশে কেউ নেই।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দাপট ‘আর-৩৭এম’ (Russian offer for India)
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে রীতিমতো দাপট দেখিয়েছে ‘আর-৩৭এম’ (Russian offer for India)। এই ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমেই ইউক্রেনের একের পর এক লড়াকু জেট এবং অ্যাটাক হেলিকপ্টারগুলিকে ধ্বংস করেছে রুশ বায়ুসেনা। ১৯৮০-র দশকে ‘আর-৩৭এম’ ক্ষেপণাস্ত্রটির নকশা তৈরি করেন মস্কোর প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। মারণাস্ত্রটির নির্মাণকারী সংস্থার নাম ছিল ‘ভিম্পেল এমকেবি’। ১৯৮৫ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন শুরু করেন তারা। এই ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাতা কোম্পানির তরফে ক্ষেপণাস্ত্রটির রফতানির ভ্যারিয়েন্টের নাম রাখা হয়েছে ‘আরভিভি-বিডি’। রুশ এয়ার-টু-এয়ার ‘আর-৩৭এম’ ক্ষেপণাস্ত্রটির ওজন প্রায় ৫১০ কেজি। এটি প্রায় সাড় ৪ মিটার লম্বা। এই হাতিয়ারে ভরা থাকে ৬০ কেজি বিস্ফোরক। ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। দুনিয়ার আর কোনও এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের এই দূরত্ব অতিক্রম করে আক্রমণ শানানোর ক্ষমতা নেই বলে দাবি করে থাকে রাশিয়া।
ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তিতে আগ্ৰহী মস্কো
কয়েকটি সংবাদ সংস্থার দাবি,যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়ার পর ম্যাক ৬ গতিতে ছুটতে পারে রুশ এয়ার-টু-এয়ার ‘আর-৩৭এম’ ক্ষেপণাস্ত্রটি। ঘণ্টায় ৭,৪০০ কিলোমিটার বেগে উড়ে গিয়ে একেবারে নিখুঁত নিশানা আঘাত হানতে পারে এটি। তবে ‘আর-৩৭এম’ ক্ষেপণাস্ত্রের রফতানি ভ্যারিয়েন্ট ‘আরভিভি-বিডি’ কিন্তু এতটা শক্তিশালী নয়। এর পাল্লা মাত্র ২০০ কিলোমিটার এবং গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ২,৫০০ কিলোমিটার। এই দুটি ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে কোনো একটি নিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলতে চায় রাশিয়া। তবে সেটা কোন ক্ষেপণাস্ত্রটি তা এখনও জানা যায়নি।

ভারতের শক্তি বৃদ্ধি
রাশিয়ার তৈরি ‘এসইউ-৩০এমকেআই’ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের বায়ুসেনা। এই লড়াকু জেটগুলিকে ‘আর-৭৭’ ক্ষেপণাস্ত্রে সাজিয়েছে ভারত। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি,রাশিয়ার এই প্রস্তাব মেনে নিয়ে ‘আর-৩৭এম’ হাতিয়ারটি হাতে পেলে অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে ভারতের বায়ুসেনার শক্তি। ওই রুশ ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলেও মনে করছেন তাঁরা।
প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে রাশিয়া
জানা গেছে,‘আর-৩৭এম’ ক্ষেপণাস্ত্রটির প্রযুক্তি ‘বন্ধু’ ভারতকেও হস্তান্তর করতে চায় রাশিয়া। এমনকি ভারতের মাটিতে এই হাতিয়ারটির ব্যাপক উৎপাদনেও কোনও আপত্তি নেই রাশিয়ার। যদিও সরকারি ভাবে এই নিয়ে ভারত বা রাশিয়ার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনো মেলেনি। রাশিয়ার এ-হেন প্রস্তাব গ্রহণের পক্ষেই সায় দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষকদের একাংশ।