ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গালওয়ান সংঘাতের পর প্রথমবার চিন সফরে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর(S Jaishankar)। মঙ্গলবার তিনি বৈঠকে বসেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। সাম্প্রতিক অতীতে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা জয়শঙ্করের। সোমবারও বেজিং পৌঁছেও ভারত-চিন সহযোগিতার কথা শোনা গিয়েছিল বিদেশমন্ত্রীর কণ্ঠে।
ভারত-চিন বৈঠক (S Jaishankar)
বেজিংয়ে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন-এর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন জয়শঙ্কর(S Jaishankar)। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তিনি অন্যান্য বিদেশমন্ত্রীদের নিয়ে চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেন।জয়শঙ্কর ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে চিনা প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন বলে জানিয়েছেন।জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করে এক্স হ্যান্ডেলে জয়শঙ্কর লেখেন, ‘আজ সকালে বেজিংয়ে প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করলাম এসসিও-র অন্যান্য বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে। ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি তাঁকে। পাশাপাশি, ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সাম্প্রতিক উন্নতির কথাও তাঁকে জানিয়েছি। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের দিশানির্দেশকে আমরা গুরুত্ব দিই।’

স্থিতিশীল পর্যায়ে সীমান্ত সমস্যা (S Jaishankar)
২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ানে ভারত-চিন সংঘাতের পর প্রথম চিন সফরে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর(S Jaishankar)। গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হন। তারপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমশ শীতল হয়ে পড়েছিল।তবে গালওয়ান সংঘাত পেরিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যা কিছুটা স্থিতিশীল পর্যায়ে হলেও দুই দেশের কূটনৈতিক সংঘাত এখনও জারি। অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সহায়তা করেছিল চিন। শুধু তাই নয়, দলাই লামা ইস্যুতেও টানাপোড়েন চলছে দুই দেশের। এই উত্তপ্ত সময়েই জয়শঙ্করের এই চিন সফর কূটনৈতিক আতশকাঁচের নিচে।
আরও পড়ুন-Ujjwal Nikam: ‘মুম্বই বিস্ফোরণ এড়ানো যেত…,’ সঞ্জয় দত্তকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য উজ্জ্বল নিকমের
উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান (S Jaishankar)
এস জয়শঙ্কর সোমবার চিনা প্রতিপক্ষ ওয়াং ইয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠকে এই বিষয়টির উপর আলোকপাত করেন(S Jaishankar)। বলেন যে, দেশগুলিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় উত্তেজনা হ্রাসের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘গত নয় মাসে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে আমরা ভালো অগ্রগতি করেছি… উত্তেজনা হ্রাস-সহ সীমান্ত সম্পর্কিত অন্যান্য দিকগুলি মোকাবেলা করা এখন আমাদের দায়িত্ব।’ বিদেশমন্ত্রীর কথায়, উভয় দেশের মতবিরোধ বা দৃষ্টিভঙ্গিগত বিরোধ কখনও সংঘর্ষে পরিণত হওয়া এবং প্রতিযোগিতাও সংঘাতে পরিণত হওয়া উচিত নয়।চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ভারতে উদ্বেগের মধ্যেও জয়শঙ্করের এই সফর তাই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন-SC: প্রেমিকের সঙ্গে মিলে হবু বরকে খুন তরুণীর! ভুল সংশোধনের সুযোগ সুপ্রিম কোর্টের
বিরোধ এখনও অবশিষ্ট (S Jaishankar)
জয়শঙ্করের এই সফর জুন মাসে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন-এর (এসসিও) প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর কিংডাও সফরের ফলে সৃষ্ট গতির উপর ভিত্তি করে তৈরি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এটি ছিল কোনও ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর প্রথম চিন সফর(S Jaishankar)।এই সফরের লক্ষ্য হল এই বছরের শেষের দিকে এসসিও নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্ভাব্য চিন সফরের সম্ভাব্য ভিত্তি তৈরি করা।তবে সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থান থেকে ভারত এবং চিনের সেনা অনেকটা সরে এলেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের কালো মেঘ পুরোপুরি কাটেনি বলেই মনে করছেন ভূ-রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।বস্তুত, পাকিস্তান এবং চিনের ‘সখ্য’ নিয়ে সম্প্রতি বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে।এর মাঝেই জয়শঙ্করের চিন সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
