ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম এবং এশিয়ায় তাইওয়ান এবং নেপালের পর তৃতীয় দেশ(Same Sex Marriage) হিসেবে সমলিঙ্গ বিবাহকে বৈধতা দিল থাইল্যান্ড। লাগু হল নয়া আইন। ‘ম্যারেজ ইক্যুয়ালিটি অ্যাক্ট’। এই উপলক্ষে বৃহস্পতিবার তাইল্যান্ডের শয়ে শয়ে সমকামী যুগল বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। দেশের নানা প্রান্তে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
১২০ দিন পর আইন কার্যকর (Same Sex Marriage)
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে প্রথম সমলিঙ্গ বিবাহে(Same Sex Marriage) অনুমতি দিয়েছিল নেদারল্যান্ড। তারপর ৩০টিরও বেশি দেশে এই ধরণের বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে। থাইল্যান্ডের সমাজকর্মীরাএক দশকেরও বেশি সময় ধরে সমলিঙ্গ বিবাহ অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। ২০২৪ সালের জুনে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে সমলিঙ্গের বিয়ের বিল পাস হয়। সেপ্টেম্বরে থাই রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন বিলটি অনুমোদন করেন। অনুমোদনের ১২০ দিন পর আইনটি কার্যকর হল।
আয়োজক ‘ব্যাঙ্কক প্রাইড’ (Same Sex Marriage)
বহু বছর ধরে থাইল্যান্ডের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায় সমলিঙ্গ বিবাহে(Same Sex Marriage) আইনি স্বীকৃতির দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে তাঁদের সেই লড়াই সফল হল। এদিন স্থানীয় এক সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘ব্যাঙ্কক প্রাইড’ নামক এক সংস্থা ব্যাঙ্ককে সমলিঙ্গের বিবাহের এক দারুণ আয়োজন করেছিল। জানা গিয়েছে এই বিবাহ অনুষ্ঠানে প্রায় ২০০ জন সমকামী যুগল একে অপরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে জড়িয়েছেন।

আরও পড়ুন:Birthright Citizenship: ট্রাম্পের নতুন আদেশে আতঙ্ক! সময়ের আগেই সিজার করাতে ছুটছেন ভারতীয় দম্পতিরা
মিলবে আইনি, আর্থিক ও অন্যান্য অধিকার
থাইল্যান্ডের সংসদের উভয় কক্ষেই সমলিঙ্গ বিবাহ আইন পাশ হয়েছে। সিভিল এবং কমার্শিয়াল কোড সংশোধন করে ‘পুরুষ ও নারী’ এবং ‘স্বামী ও স্ত্রী’-এর মতো শব্দগুলো পরিবর্তন করে ‘ব্যক্তি’, ‘বিবাহের সঙ্গী’-এর মতো শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। নয়া আইনের বলে LGBTQ+ দম্পতিরা সম্পূর্ণ আইনি, আর্থিক এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত অধিকার পাবেন। পাশাপাশি যৌথ সম্পত্তি, ট্যাক্স দায় ও ছাড়, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সমান অধিকার ও দায়িত্ব মিলবে। তাঁরা সন্তান দত্তক নিতে পারবেন।
বিবাহ বন্ধনে হাই প্রোফাইল গে দম্পতি
বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে বিয়ে করেন এক হাই প্রোফাইল গে দম্পতি। সংবাদ সংস্থা এএফপি-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন থাই অভিনেতা অপিওয়াত ‘পোর্শ’ অপিওয়াতসাইরি (৪৯) এবং সাপান্যু ‘আর্ম’ পানাতকুল (৩৮)। তাঁদের পরনে ছিল বেজ স্যুট। ব্যাঙ্ককের ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিসে তাঁরা বিবাহ করেন। আর্ম বলেন, “এই দিনটার জন্য বহু বছর ধরে লড়াই করেছি। অবশেষে স্বীকৃতি। এই দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ দিনের শেষে ভালবাসা মানে ভালবাসাই।”

উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ডের মহিলা প্রধানমন্ত্রী পায়টংটার্ন শিনাওয়াত্রা একটি অডিয়োবার্তায় বলেন, ‘‘লিঙ্গবৈচিত্র সম্পর্কে তাই সমাজের বৃহত্তর সচেতনতার সূচনা করে আমাদের এই বিবাহ সমতা আইন। যৌন ইচ্ছা, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে আমরা সকলকে আপন করে নিই। প্রত্যেকের সমান অধিকার এবং সমান মর্যাদা প্রাপ্য।’’ এবং তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ভালবাসার বিজয়ের দিন। বিবাহে সমতা আইন পাশের জন্য দু’দশকের বেশি সময় ধরে লড়াই চলেছে। অনবরত সমাজের গোঁড়ামির সঙ্গে লড়াই করে এই দিন এল। এটা সকলের চেষ্টার ফল। আজ রামধনু পতাকা সগর্বে তাইল্যান্ডের আকাশে উড়ছে।’’