ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় মহিলাদের জন্য ‘করওয়া চৌথ’ পালন (SC on Karwa Chauth) বাধ্যতামূলক করার দাবি নিয়ে একটি আবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়েছিল। এই আবেদনটি নিয়ে দেশটির শীর্ষ আদালত কড়া মন্তব্য করেছে এবং আবেদনটি তৎক্ষণাৎ খারিজ করে দিয়েছে। আবেদনকারীরা দাবি করেছিলেন, ভারতে প্রতিটি মহিলার জন্য, বিয়ে হোক বা না হোক, ‘করওয়া চৌথ’ পালন বাধ্যতামূলক করা হোক। তবে সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জমা দেওয়া হয়েছে এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
নানা ধরনের বিতর্ক (SC on Karwa Chauth)
করওয়া চৌথ মূলত হিন্দি বলয়ে পালিত একটি রীতি, যেখানে (SC on Karwa Chauth) বিবাহিত মহিলারা স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনায় একদিন উপোস করেন এবং চাঁদ দেখার পর খাবার গ্রহণ করেন। এই রীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অনুষ্ঠান, তবে এটি নিয়ে নানা ধরনের বিতর্কও রয়েছে। সমালোচকরা মনে করেন, মহিলাদের উপোস করানো এবং স্বামীর প্রতি নির্ভরশীলতা প্রতিষ্ঠা করার এই রীতি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আধিপত্যকেই প্রতিফলিত করে।
মহিলাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে (SC on Karwa Chauth)
যদিও ‘করওয়া চৌথ’ পালনের সঠিক উদ্দেশ্য ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক, অনেকেই মনে (SC on Karwa Chauth) করেন, এটি মহিলাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং তাদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে। তবে, এই সমস্ত বিতর্কের মাঝেও আবেদনকারীরা দাবি করেছিলেন, এই ব্রতটি শুধু বিবাহিত মহিলাদের জন্যই নয়, অবিবাহিত, বিধবা এবং ডিভোর্সি মহিলাদের জন্যও বাধ্যতামূলক করা হোক। আবেদনকারীরা বলেছেন, “করওয়া চৌথ সৌভাগ্যের প্রতীক,” এবং এটি মা পার্বতীর সঙ্গে সম্পর্কিত। এই দাবি করার পর সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয় যে, এই ধরনের আবেদনের কোনও জনস্বার্থ নেই এবং এটি শুধুমাত্র আদালতের বিচারপ্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করবে।

আবেদনপত্রে অনেক ত্রুটি ছিল
আদালত আরও জানায়, এই আবেদনটি পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এটি যেভাবে জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে আবেদনকারীরা সরাসরি নিজে উপস্থিত না হয়ে অন্য কারও মাধ্যমে আবেদনটি জমা দিয়েছেন। এছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের মতে, আবেদনপত্রে অনেক ত্রুটি ছিল এবং এটি সমাজের জন্য কোনও উপকারে আসবে না।
আবেদন খারিজ করে আবেদনকারীকে জরিমানা
এটি প্রথমবার নয় যে, ‘করওয়া চৌথ’ সম্পর্কে বাধ্যতামূলক করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা পড়েছে। এর আগে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টেও একই ধরনের আবেদন জমা পড়েছিল। সেবারও আদালত সেই আবেদন খারিজ করে আবেদনকারীকে জরিমানা করেছিল। আদালত এ ধরনের আবেদনের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে মন্তব্য করেছে, এবং সমাজে এটি কোনও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেছে।
আরও পড়ুন: Weather Report: বঙ্গজুড়ে বজ্রসহ ঝোড়ো বৃষ্টি, কমতে পারে তাপমাত্রা?
এভাবে, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তটি স্পষ্ট করেছে যে, ধর্মীয় রীতিনীতি বা সামাজিক প্রথা কে কীভাবে পালন করবে, তা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে এবং কোনো কিছু বাধ্যতামূলক করা যায় না।