ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারতের দুই প্রধান শেয়ার সূচক, সেন্সেক্স ও নিফটি, সোমবার বড় পতনের সম্মুখীন হয়েছে (Share Market Crash)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশার চেয়েও শক্তিশালী কর্মসংস্থানের রিপোর্টের প্রভাবে এই পতন হয়েছে। এই রিপোর্ট ফেডারেল রিজার্ভের শীঘ্রই সুদের হার কমানোর আশাকে কমিয়ে দিয়েছে। এর সঙ্গে ধীরগতি থাকা আয়ের বৃদ্ধি বাজারের মনোবলকে আরও দুর্বল করেছে।
কত পয়েন্টে পৌছেছে শেয়ার? (Share Market Crash)
বিএসই সেন্সেক্স ১,১০০ পয়েন্টের বেশি পড়ে গিয়ে ৭৬,২৫০-এ এসে পৌঁছায়। নিফটি৫০ সূচক ৩৫০ পয়েন্ট পড়ে ২৩,০৪৭-এ নেমে আসে (Share Market Crash)।
কত হলও মূলধন? (Share Market Crash)
বিএসই-তে তালিকাভুক্ত সমস্ত কোম্পানির বাজার মূলধন ১৪.৫৪ লাখ কোটি টাকা কমে গিয়েছে (Share Market Crash)। মোট বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪১৬.০৮ লাখ কোটি টাকায়।
সেন্সেক্সের পতনের মূল কারণ কী?
মার্কিন অর্থনৈতিক ডেটা ও ফেডের সুদহার সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি
গত শুক্রবার প্রকাশিত মার্কিন কর্মসংস্থান রিপোর্ট বিশ্ববাজারকে ধাক্কা দিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে মার্কিন বেকারত্বের হার ৪.১ শতাংশে নেমে এসেছে। শক্তিশালী কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ফলে ফেডারেল রিজার্ভের নিকট ভবিষ্যতে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। এর ফলে বৈশ্বিক তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে, যা উদীয়মান বাজারগুলির উপর, বিশেষত ভারতের মতো দেশে, চাপ বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: HMPV Attack in China: চিনে শ্বাসযন্ত্রের রোগের বাড়বাড়ন্ত, HMPV নিয়ে উদ্বেগে ভারত
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, “শক্তিশালী মার্কিন কর্মসংস্থান ডেটার কারণে ২০২৫ সালে ফেডের সুদহারে মাত্র একটি কাটতি আশা করা হচ্ছে। এছাড়া মার্কিন বন্ডের ইল্ড বৃদ্ধির ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রি অব্যাহত থাকবে।”
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রমাগত বিক্রি
জানুয়ারি মাসে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FPIs) ২১,৩৫০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন। ডিসেম্বরেও তারা ১৬,৯৮২ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেন। মূল্যায়নের চাপ, দুর্বল আয়, এবং মার্কিন বন্ড ইল্ড বৃদ্ধির কারণে এই বিক্রির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
ক্রুড তেলের দাম বৃদ্ধি
রাশিয়ার উপর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বজুড়ে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় ক্রুড তেলের দাম ১৫ সপ্তাহের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। তেলের বৃহৎ আমদানিকারক দেশ হিসেবে ভারত এই দামের বৃদ্ধিতে চাপে পড়েছে। এটি দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য ও মুদ্রাস্ফীতির উপর চাপ বাড়াচ্ছে।
রুপির পতন
সোমবার রুপির দাম ৮৬.২৭-এ নেমে এসে ডলারের বিপরীতে সর্বকালের সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। ডলারের শক্তি এবং মার্কিন বন্ড ইল্ড বৃদ্ধির ফলে রুপির এই পতন। এই পতন বিদেশি পুঁজি আউটফ্লো বাড়িয়ে তুলেছে এবং আমদানি খরচ বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: How to Identify Original Honey: বাজার চলতি মধু কিনে ঠকছেন না তো? সহজে চিনুন খাঁটি মধু…
বিশ্ববাজারে দুর্বলতা
মার্কিন শক্তিশালী অর্থনৈতিক ডেটার কারণে এশিয়ার বাজারেও দুর্বলতা দেখা গেছে। বিশ্বব্যাপী তারল্য সংকট এবং তেলের দামের বৃদ্ধি ভারতীয় বাজারের পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
চাপ কমবে কবে?
অবস্থার চাপ কমতে সময় লাগবে। তবে বড় পুঁজির ব্যাংকিং শেয়ার দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে পারে। তবুও সামগ্রিকভাবে বাজারের পরিস্থিতি চাপেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।