ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত রবিবার রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে নির্মিত শেখ মুজিবুর রহমানের(Sheikh Mujibur Rahman Mural) দীর্ঘ ম্যুরালটি সাদা রং করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়, এটিই বাংলাদেশে মুজিবের ‘সবচেয়ে বড়’ ম্যুরাল। জানা গেছে মুজিবুর কন্যা হাসিনার উপর জনগণের রোষ থেকেই সেই রোষ গিয়ে পড়ছে শেখ মুজিবুরের একের পর এক ম্যুরালের উপরে। বাংলাদেশের রাজশাহীতে শেখ মুজিবের ৫০ ফুট উঁচু একটি ম্যুরাল সাদা রঙে ঢেকে দেওয়া হয়েছে সেই হাসিনার উপরে জনগণের রোষের কারণেই।
২০১৯ সালে ম্যুরালের ফলক উন্মোচন (Sheikh Mujibur Rahman Mural)
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর ম্যুরালের(Sheikh Mujibur Rahman Mural) ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন রাসিকের তৎকালীন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারও সঙ্গে ছিলেন। ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। একই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলন মেলায় অংশ নিতে রাজশাহী আসা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল এবং তৎকালীন সিটি মেয়র লিটন ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন।
বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় ম্যুরাল (Sheikh Mujibur Rahman Mural)
নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে রাজশাহী জেলা পরিষদের জায়গায় ম্যুরালটি(Sheikh Mujibur Rahman Mural) নির্মাণ করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)। ম্যুরালের উচ্চতা ৫৮ ফুট। তবে মূল অংশের উচ্চতা ৫০ ফুট। আর চওড়া ৪০ ফুট। এটি নির্মাণে পাঁচ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়। নির্মাণের পর রাসিকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, এটিই দেশের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল।
আরও পড়ুন:Operation Devil Hunt in Bangladesh: বাংলাদেশ জুড়ে ‘শয়তানের খোঁজ’, গ্রেফতার ১০০০-এরও বেশি!
প্রাচীরে টেরাকাটার কাজ
ম্যুরালটির সীমানা প্রাচীরের দুপাশে ৭০০ বর্গফুট টেরাকাটার কাজ করা। এক ধারে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের লোকজ সংস্কৃতির নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা এবং ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যও তুলে ধরা হয়েছিল। ল্যান্ডস্কেপিংয়ে গ্রানাইট দিয়ে সজ্জিত করা ছিল।
রবিবার সকালে সাদা রঙের প্রলেপ
গত ৫ আগস্টই রাজশাহীতে থাকা বঙ্গবন্ধুর বেশিরভাগ ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়(Sheikh Mujibur Rahman Mural)। সবশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি বুলডোজার দিয়ে রাজশাহী কলেজে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর এই ম্যুরাল ও টেরাকাটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা যায়নি। রোববার সকাল থেকে সাদা রঙের প্রলেপ দিয়ে ম্যুরাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুন:Bangladesh Gazipur Incident: গাজীপুরে ছাত্রনেতাকে গুলি, পদক্ষেপের আশ্বাস পুলিশের
কারা দিয়েছিল বরাত
ম্যুরালটি সাদা রং করার জন্য কে বা কারা তাঁদের বরাত দিয়েছিল, সে কথা বলতে পারেননি রংমিস্ত্রিরা। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ (ভারতীয় সময়ে বেলা ১১টা) উঁচু মইয়ে উঠে এক জনকে ম্যুরালটিতে রং করতে দেখা যায়। নীচে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর এক সহযোগী। পরে সন্ধ্যায় আবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরো ম্যুরালটি সাদা হয়ে গিয়েছে। রংমিস্ত্রিরাও সেখানে আর নেই। খোঁজখবর নিয়ে ‘প্রথম আলো’ জানতে পারে স্থানীয় সময় বিকেল চারটের আগেই সেখান থেকে চলে গিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপস্থিত লোকজনও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।