ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মধ্য কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়াবাজারে ‘ঋতুরাজ হোটেল’-এ বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ১১ জন পুরুষ, ১ জন মহিলা এবং ২ জন শিশু। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৮ জনের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে (SIT Investigation)। আহত ১৩ জনের মধ্যে ১২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন।
ঘটনার পরই কলকাতার নগরপাল মনোজ ভর্মা জানিয়েছেন, কী ভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT Investigation)। বুধবার ঘটনাস্থলে যাবে ফরেনসিক দল, যারা আগুন লাগার উৎস, দেরিতে উদ্ধার, এবং হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে তদন্ত করবে। SIT ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ, হোটেলের নকশা এবং দমকলের রিপোর্ট সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।

তদন্তের মূল প্রশ্ন: (SIT Investigation)
হোটেলে ইমার্জেন্সি এক্সিট ছিল না কেন?
একটিমাত্র সিঁড়ি দিয়েই যাতায়াত — এই গাফিলতির দায় কার?
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কি কার্যকর ছিল?
হোটেল কতটা অনুমোদিত বা ফায়ার লাইসেন্স ছিল কিনা?
আরও পড়ুন: Deadly Fire: বড়বাজারের মেছুয়াবাজারে হোটেলে বিধ্বংসী আগুন! মৃত ১৪, প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সোমবার সন্ধে ৭:৩০ মিনিটে আগুন লাগে ছ’তলার ওই হোটেলের দ্বিতীয় তলায়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য তলায়। হোটেলের ৪২টি ঘরে ৮৮ জন ছিলেন, যাদের অনেকেই ছিলেন বাইরের রাজ্যের শ্রমিক ও ব্যবসায়ী। একজন, আনন্দ পাসোয়ান নামের ব্যক্তি, প্রাণ বাঁচাতে কার্নিশ থেকে ঝাঁপ দিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধোঁয়ার জেরে হোটেলটি কার্যত ‘গ্যাসচেম্বারে’ পরিণত হয়েছিল, ফলে দমকলকর্মীরা ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। পরে মই দিয়ে জানলা ভেঙে একে একে আবাসিকদের উদ্ধার করা হয় (SIT Investigation)। কয়েকজন আতঙ্কে কার্নিশে উঠে পড়েন, তাঁদের মই ও ল্যাডার ব্যবহার করে নিচে নামানো হয়। ভোররাত পর্যম্ত আগুনের সঙ্গে যুদ্ধ।

এই হোটেলটি সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও বিধান সরণির সংযোগস্থলে, ঘিঞ্জি এলাকায় অবস্থিত। আশপাশে ঘনবসতিপূর্ণ দোকান ও ভবন থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যদিও দমকলের ১০টি ইঞ্জিন প্রায় ৮ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পর রাতভর কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, নগরপাল মনোজ বর্মা এবং রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা ভোর ৩টে পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন (SIT Investigation)।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা:
বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনাটির পর মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। আহতদের জন্যও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা।