ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সম্প্রতি রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে (Smart Meter) স্মার্ট মিটার বসানোর বিষয়টি গরম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অনেক গৃহস্থের বাড়িতে ইতিমধ্যেই স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু এই নতুন মিটার নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মূলত তারা অভিযোগ করছেন, স্মার্ট মিটার বসানোর পর বিদ্যুতের বিল অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে, এমনকি এক মাসে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল এসেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ না পেয়ে গ্রাহকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
আর কোনও স্মার্ট মিটার বসানো হবে না (Smart Meter)
রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে, এখন থেকে রাজ্যে (Smart Meter) আর কোনও স্মার্ট মিটার বসানো হবে না। ইতিমধ্যেই যেসব বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তীব্র বিতর্ক (Smart Meter)
বিধানসভায় বুধবার এই বিষয়টি নিয়ে তীব্র (Smart Meter) বিতর্ক হয়েছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, কেন্দ্রীয় সরকার জোরপূর্বক এই প্রকল্প চাপিয়ে দিয়েছে, যা গ্রাহকদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, রাজ্য সরকার স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই যেসব স্মার্ট মিটার লাগানো হয়েছে, সেগুলোকে পরবর্তীতে ‘সাধারণ মিটার’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে, অর্থাৎ বিল পদ্ধতি হবে পোস্টপেইড মোডে, প্রিপেইড নয়।
সরকারের পরিকল্পনার বিরোধিতা
মন্ত্রীর ভাষায়, যেসব স্মার্ট মিটার ইতিমধ্যেই বাড়িতে বসানো হয়েছে, সেগুলো লাগানোর তিন মাস পর থেকে কার্যত সাধারণ মিটার হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ গ্রাহকরা আর অতিরিক্ত বা অসঙ্গতিপূর্ণ বিলের শিকার হবেন না। বিধানসভায় এই বিতর্কের মাঝে বিজেপি পক্ষ সরকারের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, স্মার্ট মিটার প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের জোরাজুরি গ্রাহকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার গ্রাহকদের স্বার্থে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে দাবি করেছে।
নির্ভুল মাপজোকের জন্য প্রবর্তিত
স্মার্ট মিটার প্রকল্পটি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের নির্ভুল মাপজোকের জন্য প্রবর্তিত হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তার কার্যকারিতা ও গ্রাহকদের ওপর প্রভাব নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। অনেক গ্রাহক বলছেন, পুরনো মিটারের তুলনায় স্মার্ট মিটার বেশি বিল দিচ্ছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করছে।
গ্রাহকদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর
এখন পরিস্থিতি এমন যে, রাজ্য সরকার স্মার্ট মিটার বসানো বন্ধ করে দিয়েছে এবং ইতিমধ্যেই বসানো মিটারগুলোকে সাধারণ মিটারের মত ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। এটি গ্রাহকদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর হলেও, স্মার্ট মিটার নিয়ে ভবিষ্যতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও সংশয় থেকে গেছে।
আরও পড়ুন: Weather Report: বঙ্গোপসাগরে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত, দক্ষিণবঙ্গে আসছে বৃষ্টির প্রকোপ!
গ্রাহকদের জন্য এটাই সঠিক মুহূর্ত তাঁদের অধিকার ও সুরক্ষা নিয়ে সচেতন হওয়ার। আগামী দিনে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে এই ইস্যুতে কী সমাধান হয়, সেটাই দেখতে হবে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত পুরনো মিটার সিস্টেম পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না, ততক্ষণ গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণের জন্য স্পষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।