ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মেঘালয়ে হানিমুনে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড(Meghalaya)। স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনে অভিযুক্ত খোদ নববিবাহিত স্ত্রী সোনম রঘুবংশী।এবার পুলিশি জেরায় বেরিয়ে এল ভয়ঙ্কর তথ্য। রাজা রঘুবংশীকে হত্যা নয়, আসলে সোনম রঘুবংশীকে তাঁর কাছ থেকে সরানোই ছিল ‘খুনিদের’ উদ্দেশ্য। সেই অনুযায়ী ৩টি পরিকল্পনাও করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত করা যায়নি।এরপরই রাজাকে খুনের ছক কষা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
রাজ ও সোনমের পরিকল্পনা বাতিল (Meghalaya)
মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পাহাড়ের এসপি সিয়েম বিবেক বলেন, ‘রাজা এবং সোনমের বিয়ের ঠিক আগে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল(Meghalaya)। ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিল রাজ কুশওয়াহা। তাঁকে সোনম সাহায্য করেছিল। বাকি তিন আততায়ী রাজেরই বন্ধু, একজন তাঁর তুতো ভাই।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজাকে খুনের পর বোরখা পরে শিলং থেকে গুয়াহাটি গিয়েছিল সোনম। সেখান থেকে শিলিগুড়ি, পাটনা হয়ে ইন্দোরে পৌঁছয় সোমন। পরদিনই চলে যায় উত্তরপ্রদেশে। সেখানেই আত্মসমর্পণ করে সোনম।এসপি সিয়েম বিবেক বলেন, ‘সোনমকে রাজার থেকে সরাতে দু’টি ছক কষা হয়েছিল। প্রথম, সোনম নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে, এমনটা দেখানো হবে এবং পরে তাঁকে উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, অন্য একজন খুন করে তাঁর দেহ পুড়িয়ে সোনমের বলে চালিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এই দু’টি পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তারপর রাজাকে খুনের পরিকল্পনা করেন সোনমরা।’

খুনের কথা স্বীকার (Meghalaya)
জেরায় সোনম-সহ ধৃত পাঁচ জনই খুনের কথা এবং চক্রান্তের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি করেছে মেঘালয় পুলিশ(Meghalaya)।মেঘালয় পুলিশের সিট মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর এবং উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই তথ্যপ্রমাণ জুড়ে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, মেঘালয়ে ঠিক কী ঘটেছিল। সূত্রের খবর, সোনম তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছে, মেঘালয়ে বেড়ানোর সময়ে কয়েক জন তাঁর গয়না ছিনতাই করতে গিয়েছিলেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন রাজা।সোনমের আরও দাবি, ওই ঘটনার সময়েই জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি। কী ভাবে গাজিপুরে তিনি পৌঁছোন, তা মনে করতে পারেননি। যদিও ধীরে ধীরে নিজেদের সব দোষ ধৃতরা কবুল করেছে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন-Bomb Threat: বিপদ কাটছেই না! থাইল্যান্ডে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বোমাতঙ্ক, জরুরি অবতরণ
সোনম-রাজের সম্পর্ক (Meghalaya)
২১ বছরের রাজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ২৪ বছরের সোনম(Meghalaya)। কিন্তু পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। জোর করে রাজার সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিয়ের পর স্বামীকে সোনম বলেছিলেন, অসমের কামাখ্যা মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার পরেই এই বিয়েকে তিনি স্বীকৃতি দেবেন। সেই অনুযায়ী নবদম্পতি প্রথমে গুয়াহাটি যান। সেখানেই রাজাকে খুনের প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে সোনম শিলংয়ে নিয়ে আসেন রাজাকে।

আরও পড়ুন-PM Modi: অভিশপ্ত বিমানের একমাত্র জীবিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রীর
৫০ হাজার টাকা সুপারি (Meghalaya)
এসপি বিবেক জানিয়েছেন, তিন বন্ধুকে খুনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল রাজ(Meghalaya)। মেঘালয়ে রাজাকে খুনের পর সোনমকে বোরখা পরিয়ে একটি ট্যাক্সিতে তাঁরা পাঠিয়ে দেন গুয়াহাটিতে। সেখান থেকে বাসে করে সোনম শিলিগুড়ি আসে। শিলিগুড়ি থেকে পাটনা হয়ে বাসে যায় তারা। সেখান থেকে ট্রেনে লখনউ পৌঁছয়। সেখান থেকে বাসে আবার যান ইন্দোরে। তাঁরা ভেবেছিল, সোনমকে কেউ খুঁজে পাবেন না। ২ জুন মেঘালয়ে যখন রাজার মৃতদেহ উদ্ধার হয়, তখনও সোনম ইন্দোরেই ছিল। কিন্তু রাজের তিন বন্ধুই ধরা পড়ে যায়। রাজ ফোন করে সোনমকে জানায়, উত্তরপ্রদেশে গিয়ে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাঁদের বলতে হবে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। তবে অপহরণের গল্প সঠিক ভাবে বলতে পারেনি সোনম। সে আত্মসমর্পণ করেন।
