ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের রকেটে আবার বিপত্তি(SpaceX)। মাঝ আকাশে ভেঙে পড়েছে মাস্কের সংস্থার তৈরি ‘স্টারশিপ’। যার জেরে বড় ধাক্কা খেল স্পেসএক্সের স্টারশিপ প্রোগ্রাম। বুধবার নবম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের ৩০ মিনিটের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে রকেটটি।এরপর তা ভেঙে পড়ে ভারত মহাসাগরের উপর। স্টারশিপের উপরের স্তরটি প্রবল ভাবে ঘুরপাক খেতে খেতে সমুদ্রে আছড়ে পড়ে।আর ইতিমধ্যে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জ্বালানি লিকে বিপত্তি (SpaceX)
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশযানটি থেকে জ্বালানি লিকের কারণেই ঘটে থাকতে পারে এই দুর্ঘটনা(SpaceX)। ফলে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ঘুরতে থাকে রকেটটি। এক পর্যায়ে ঘটে বিস্ফোরণ। আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্পেসএক্স কর্তৃপক্ষ।জানা গেছে, টেক্সাস থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল স্টারশিপকে। তাতে ছিল ৮টি স্টারলিঙ্ক সিমুলেটর স্যাটেলাইট। কিন্তু স্যাটেলাইটগুলিকে পৃথিবীর কক্ষপথে ছাড়ার আগেই স্পেশএক্সের জ্বালানি লিক করতে শুরু করে। ১২৩ মিটার (৪০৩ ফুট) দীর্ঘ এই মহাকাশযানটি আগের সব পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের তুলনায় অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। তবে এটি সফলভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি। এ নিয়ে চলতি বছরে ২ বার স্পেশএক্সের উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হল। এর আগে রকেটের ইঞ্জিনে যান্ত্রিক গোলমাল হওয়ায় তা মাঝ আকাশে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

টেস্ট ফ্লাইটের সাফল্য (SpaceX)
স্পেসএক্স সাধারণত টেস্ট ফ্লাইটগুলিকে গবেষণার সাফল্য হিসেবে উপস্থাপন করে(SpaceX)। এক্স পোস্টে সংস্থা বলেছে, ‘এই ধরনের টেস্টে সাফল্য নির্ভর করে আমরা কী শিখলাম তার ওপর।’তবে, স্টারশিপ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট মাইলফলক অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে, যেমন মহাকাশে নকল স্যাটেলাইট মোতায়েন করা এবং ইঞ্জিন পুনরায় চালু করার চেষ্টা।এখনও পর্যন্ত স্টারশিপের মোট ৯টি ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এরমধ্যে চারটি আংশিক সফল হলেও চারটি ফ্লাইট ভেঙে পড়েছে। স্পেসএক্স-এর মতে, তাদের ‘ফেইল ফাস্ট, লার্ন ফাস্ট’ নীতির কারণেই তারা দ্রুত উন্নতির পথে এগোচ্ছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, স্পেসএক্স কোম্পানি নিজেই এই খরচ বহন করে। যদিও নাসা চাঁদে নভোচারী অবতরণের জন্য স্টারশিপ প্রোগ্রামে স্পেসএক্সকে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক বলেছেন, প্রতিটি স্টারশিপ টেস্ট ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন- King Charles:’আমেরিকা-কানাডার সম্পর্কের উৎস শ্রদ্ধা!’ ট্রাম্পের হুমকির মুখে বার্তা রাজা চার্লসের
ইলন মাস্কের ঘোষণা (SpaceX)
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, মাস্ক ঘোষণা করেছেন যে পরবর্তী তিনটি স্টারশিপ উড্ডয়নের জন্য উৎক্ষেপণের হার বাড়ানো হবে, প্রতি তিন থেকে চার সপ্তাহে একটি করে উড্ডয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে(SpaceX)। এই ত্বরিত গতি স্পেসএক্স-এর “দ্রুত ব্যর্থ হও, দ্রুত শেখো” দর্শনের প্রতিফলন, যেখানে প্রতিটি পরীক্ষার মাধ্যমে রকেটের ব্যবস্থাগুলি পরিমার্জন করা হয় এবং কোম্পানিটিকে চাঁদ ও মঙ্গল মিশনের লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যায়।প্রতিটি পরীক্ষা স্পেসএক্স-কে তার লক্ষ্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়, এমনকি যখন ব্যর্থতা ঘটে। মাস্কের নেতৃত্বে, ব্যর্থতাকে শিক্ষার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে, এবং এই নবম পরীক্ষাটিও তার ব্যতিক্রম নয়। তাপরক্ষক টাইলসের উন্নত পারফরম্যান্স এবং প্রধান ইঞ্জিন কাটঅফের সাফল্য ইতিমধ্যেই প্রকৌশলীদের জন্য ইতিবাচক সংকেত। তবে, লিক এবং পেলোড দরজার সমস্যাগুলি এমন ক্ষেত্র যেখানে আরও কাজের প্রয়োজন।

মহাকাশ শিল্পে একটি নতুন মানদণ্ড (SpaceX)
স্পেসএক্স-এর দ্রুত পরীক্ষার কৌশলটি মহাকাশ শিল্পে একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে(SpaceX)। ঐতিহ্যগত মহাকাশ সংস্থাগুলি যেখানে বছরের পর বছর পরিকল্পনা এবং সিমুলেশনের উপর নির্ভর করে, সেখানে স্পেসএক্স বাস্তব-বিশ্বের পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত শিক্ষা অর্জনের পক্ষে। এই পদ্ধতি স্টারশিপের মতো জটিল প্রকল্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, এটি কোম্পানিটিকে দ্রুত অগ্রগতি অর্জনের সুযোগ দিয়েছে।
