ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চাঁদে মানুষের স্থায়ী বসতি গড়ার পরিকল্পনা (Sporosarcina Pasteurii) ক্রমশ বাস্তবতার দিকে এগোচ্ছে, এবং এ ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন ভারতীয় গবেষকরা। ‘আইআইএসসি’র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চাঁদের মাটি বা রেগোলিথ থেকে ইট তৈরির একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এই গবেষণা মূলত ব্যাক্টিরিয়া ব্যবহার করে করা হচ্ছে, যা চাঁদের কঠিন মাটিকে কার্যকরী ও সহনশীল ইটে রূপান্তরিত করতে সক্ষম।
‘এস. পাস্তুরি’ নামের ব্যাক্টেরিয়া (Sporosarcina Pasteurii)
গবেষকরা বিশেষভাবে ‘এস. পাস্তুরি’ নামের একটি ব্যাক্টেরিয়া ব্যবহার করছেন, যা ইউরিয়া ও ক্যালসিয়ামকে (Sporosarcina Pasteurii) কঠিন ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের মধ্যে রূপান্তরিত করে। এরপর এই উপাদানের সঙ্গে একটি আঠালো পদার্থ মিশিয়ে ইটের আকার দেওয়া হচ্ছে। গবেষক অলোক কুমার জানান, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চাঁদের মাটির একটি কার্যকরী উপাদান তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।
টেকসই ইট তৈরি (Sporosarcina Pasteurii)
এছাড়া, ‘সিনটেরিং’ নামের এক প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ তাপমাত্রায় মাটি ও পলিভিনাইল অ্যালকোহলের (Sporosarcina Pasteurii) মিশ্রণকে উত্তপ্ত করে টেকসই ইট তৈরি করা হচ্ছে। এই পদ্ধতি সহজ এবং একবারে অনেকগুলো ইট তৈরি করা সম্ভব।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে চ্যালেঞ্জ
তবে চাঁদের বৈরী আবহাওয়ার কারণে চ্যালেঞ্জ অনেক। চাঁদের তাপমাত্রা একই দিনে মাইনাস ১৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করে, এবং এর সঙ্গে যুক্ত আছে সৌরঝড় ও অন্যান্য মহাকাশীয় উপাদানের প্রভাব। এর ফলে তৈরি ইটের কাঠামোতে ফাটল দেখা দিতে পারে, যা ভবিষ্যতের স্থাপনার জন্য উদ্বেগজনক।

কাঠামো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা!
গবেষক কৌশিক বিশ্বনাথন বলেছেন, “চাঁদে উষ্ণতার পরিবর্তন অত্যন্ত নাটকীয়। সিনটেরিং পদ্ধতিতে তৈরি ইট শক্তিশালী হলেও তা ভঙ্গুর।” এর ফলে যদি কোথাও ফাটল তৈরি হয়, তাহলে গোটা কাঠামো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
সিনটেরিং পদ্ধতি
এই সমস্যা মোকাবিলায় আবার ‘এস. পাস্তুরি’ ব্যাক্টেরিয়ার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি একটি পরীক্ষায় সিনটেরিং পদ্ধতির তৈরি ইটে কৃত্রিমভাবে ফাটল তৈরি করে সেই ফাটলে ব্যাক্টিরিয়া, চাঁদের মাটি ও আঠার মিশ্রণ ঢেলে দেখা গেছে যে ক্ষতপূরণ বেশ কার্যকরী। এই বায়োপলিমার কাঠামোটিকে দৃঢ়তা দিচ্ছে এবং ১৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও টিকে থাকতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: Jupiter Positive Effect: বক্রী হবে শুভ গ্রহ বৃহস্পতি, এর প্রভাবে উন্নতি করবে কারা?
তবে মহাকাশের পরিবেশে ব্যাক্টিরিয়ার আচরণ কেমন হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তাই গবেষকরা একটি পরীক্ষামূলক নমুনা মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন, যা আগামী দিনের গবেষণার দিগন্ত খুলে দিতে পারে।