Last Updated on [modified_date_only] by Shroddha Bhattacharyya
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বাংলার স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের (SSC Case) শিক্ষক নিয়োগে ভয়াবহ দুর্নীতির জাল ধরা পড়েছে দেশের শীর্ষ আদালত ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এই প্যানেল সম্পূর্ণ বাতিল করে দিয়েছে, যার ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী। এই ঘটনার পেছনে মূল চার অভিযুক্ত— শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়— যাঁদের কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই চিহ্নিত করেছে ‘দুর্নীতির চারমূর্তি’ হিসেবে।
ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি (SSC Case)
চার্জশিট অনুযায়ী, শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা হিসাবে (SSC Case) অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগপত্র পাইয়ে দেন। তাঁর নির্দেশে বহু ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি হয়, যা দিয়ে স্কুলে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ হয়। অভিযোগ, তিনিই পরিকল্পিতভাবে ওএমআর শিটের স্ক্যান কপি ও ব্যাকআপ তথ্য নষ্ট করেন যাতে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা না যায়।
কমিশনের সার্ভারে নম্বর বদলের অভিযোগ (SSC Case)
এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য কমিশনের সার্ভারে নম্বর বদলের অভিযোগে (SSC Case) অভিযুক্ত। তাঁর সময়েই বহু অযোগ্য প্রার্থীর নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে তারা ব্যক্তিত্ব পরীক্ষার জন্য ডাক পায়। নম্বর কারচুপিতে সহায়তা করেন চুক্তিভিত্তিক কর্মী পর্ণা বোস, যাঁকে মৌখিক নির্দেশ দিতেন সুবীরেশ। পিটি নম্বর পর্যন্ত পেনসিলে লেখা হত, যাতে পরে বদল করা যায়।
ওএমআর তথ্য নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত!
অশোক সাহা, যিনি সুবীরেশের পরে এসএসসি-র চেয়ারম্যান হন, তাঁর বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। শান্তিপ্রসাদের মতো তিনিও ওএমআর তথ্য নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন এবং বেআইনি নিয়োগপত্রে অনুমোদন দেন।

অযোগ্য প্রার্থীর নিয়োগপত্র তৈরি
কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, যিনি সরাসরি এসএসসি-তে যুক্ত ছিলেন না, ছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। অভিযোগ, তিনি শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে মিলে ভুয়ো সুপারিশপত্রের ভিত্তিতে ১৮৩ জন অযোগ্য প্রার্থীর নিয়োগপত্র তৈরি করেন এবং তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থাও করেন।
চার্জশিটে আরও কয়েকজনের নাম
এই চারজন ছাড়াও চার্জশিটে এসেছে আরও কয়েকজনের নাম— যেমন প্রসন্ন রায়, যিনি মূল ‘মিড্লম্যান’, এবং তাঁর অধীনস্থ প্রদীপ সিংহ। অযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে জুঁই দাস, আজ়াদ আলি মির্জ়া ও ইমাম মোমিনের নামও রয়েছে, যাঁরা জাল নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে শিক্ষকতা করছিলেন।
আরও পড়ুন: SSC Job Loss Teachers: সল্টলেকে এসএসসি ভবনের সামনে অনশন, চাকরি ফেরতের দাবিতে উত্তাল শহর!
এই দুর্নীতির ফলে শুধু আর্থিক নয়, নৈতিক এবং সামাজিক বিপর্যয় ঘটেছে। যারা সত্যিই যোগ্য, তাঁরা আজ বঞ্চিত। তাই রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ চলছে, এবং দাবি উঠছে— দোষীদের কঠোর শাস্তি ও যোগ্যদের ন্যায়সঙ্গত চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার।