ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ওড়িশায় অধ্যাপকের যৌন হেনস্তার বিচার চেয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে গায়ে আগুন দেওয়া ছাত্রীর মৃত্যুতে তোলপাড় গোটা দেশ(Odisha Bandh)। কলেজ ছাত্রীর এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে ওড়িশায় তুমুল রাজনৈতিক তরজা শুরু। বিরোধীরা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝিকে কাঠগড়ায় তুলে সোচ্চার হয়েছে।এই আবহে আগামী ১৭ জুলাই কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেডি-সহ আটটি দল একসঙ্গে মিলে রাজ্যজুড়ে ‘ওড়িশা বনধ’ ডেকেছে।
হাসপাতালে বিক্ষোভ কংগ্রেস ছাত্র সংগঠনের (Odisha Bandh)
শনিবার বালাসোরের ফকির মোহন অটোনোমাস কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী কলেজেই নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে দেয়(Odisha Bandh)। দেহের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যায় ওই ছাত্রীর। তাঁকে প্রথমে বালাসোর জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ১২ জুলাই তাঁকে ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।সোমবার রাতে ২০ বছর বয়সি ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়।আর ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়েই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে একাধিক বিরোধী দল। ভুবনেশ্বর এইমসে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই ছাত্রী। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন।একই সঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সূরজের পদত্যাগ দাবি তুলেছে তারা।

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি (Odisha Bandh)
বিজেডি নেত্রী সুলতা দেও বলেন, ‘এই সরকার দলিত ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধে(Odisha Bandh)। রাতে কেন ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল? রাতেই মৃতদেহ আনা হয়েছিল যাতে কেউ জানতে না পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে একজন মহিলার কোথায় যাওয়া উচিত… রাষ্ট্রপতি যখন এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।’ বিজেডি নেত্রী ইপ্সিতা সাহু বলেন, ‘কেন বিজেপি নেতাদের হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু আমাদের বাইরেও থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজের পদত্যাগ করা উচিত।’
আরও পড়ুন-Student raped: ওড়িশা-কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি! নোটসের দেবেন বলে ছাত্রীকে ডেকে ধর্ষণ, ধৃত দুই শিক্ষক-সহ ৩
ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন (Odisha Bandh)
কংগ্রেস নেতা ইয়াশির নওয়াজ বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমরা যখন এইমসের ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করি, তারা স্পষ্টভাবে বলে দেয় যে, তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে, মেয়েটির বাঁচার সম্ভাবনা কম(Odisha Bandh)। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে একজন ছাত্রী এমপি, এসপি, অধ্যক্ষ, উচ্চশিক্ষামন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচারের ভিক্ষা করছিল, কিন্তু এবিভিপি নেত্রী হওয়ার পরেও সে নিরাপদ ছিল না। আমরা প্রতিবাদ করছি, কারণ তারা ভোররাত ২টোয় ময়নাতদন্ত করছে। সরকার, পুলিশের সহায়তায়, ময়নাতদন্তের পরে মৃতদেহ নিয়ে যেতে চায়। উচ্চশিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাকে বরখাস্ত করা হয়নি। দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারা এবিভিপির সহায়তায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটি বিজেপি সরকারের দোষ।’

ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা থেকে আত্মহত্যা (Odisha Bandh)
বালাসোরের কলেজেরই এক বিভাগীয় প্রধান ওই ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করেছিল বলে অভিযোগ(Odisha Bandh)। তা নিয়ে কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ গ্রহণ কমিটি (আইসিসি)-র কাছে গত ১ জুলাই অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। কী ভাবে মাসের পর মাস তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু এরপরেও কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন তুলছিলেন ওই ছাত্রী। গত শনিবার এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও দেখা করতে যান তিনি। সেখান থেকে বেরিয়েই কলেজ ক্যাম্পাসে নিজের আগে আগুন ধরিয়ে দেন নির্যাতিতা।
