ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর কর্ণাটকের শ্রীরঙ্গপাটনার সাঁই আশ্রমের কাছে কাবেরী নদী থেকে পদ্মশ্রী পুরষ্কারপ্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞানী সুব্বান্না আয়াপ্পানের মৃতদেহ উদ্ধারে শোরগোল পড়ে গিয়েছে (Subbanna Ayyappan Dies)। রবিবার তাঁর দেহ শনাক্ত করে আয়াপ্পানের পরিবার। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল ছিলেন আয়াপ্পান। কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে এবং এর নেপথ্যে কোনও রহস্য আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বিজ্ঞানীর মৃতদেহের সন্ধান (Subbanna Ayyappan Dies)
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৭ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন সুব্বান্না আয়াপ্পান (Subbanna Ayyappan Dies)। ঘটনার দিন স্কুটার নিয়ে বের হলেও সঙ্গে মোবাইল নেননি বিজ্ঞানী। এরপরেই মাইসুরুর বিদ্যারণ্যপুরম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তাঁর পরিবার। তদন্তে নেমে সাঁই আশ্রমের কাছ থেকে উদ্ধার হয় আয়াপ্পানের স্কুটারটি। এরপর কাবেরী নদীতে একটি অজ্ঞাত পরিচয়ের মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায় ৷ স্থানীয়রা প্রথমে দেখে পুলিশে খবর দেয় ৷ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রীরঙ্গপত্তন থানার আধিকারিকরা মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে পরিবারের লোকজন বিজ্ঞানীকে শনাক্ত করেন।
পুলিশের অনুমান (Subbanna Ayyappan Dies)
বিজ্ঞানীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ না জানা গেলেও প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, নদীতে স্নান করতে নেমে কোনওভাবে তলিয়ে যান সুব্বান্না আয়াপ্পান (Subbanna Ayyappan Dies)। ইতিমধ্যে অস্বাভাবিক খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শ্রীরঙ্গপত্তনের সাই বাবার আশ্রমের নদীতে বিজ্ঞানীকে পড়ে থাকতে দেখা যায় ৷ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাইসোরের কেআর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত জানা যায়নি ৷
আরও পড়ুন: CBSE 12th Board Results: ঘোষণা হল সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল, পাশের হারে এগিয়ে মেয়েরা
পরিবারের সদস্যসের বক্তব্য (Subbanna Ayyappan Dies)
বিজ্ঞানীর এক আত্মীয় বলেন, ‘সুব্বান্না আয়াপ্পান মাইসোরের শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমে যেতেন এবং কাবেরী নদীর তীরে ধ্যান করতেন। কিন্তু এদিন হঠাৎ তাঁর দেহ উদ্ধারের খবর আসে ৷’
বিজ্ঞানী সুব্বান্না আয়াপ্পান কে? (Subbanna Ayyappan Dies)
আয়াপ্পানের জন্ম ১৯৫৫ সালের ১০ ডিসেম্বর কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলার ইয়ালন্দুরে। তিনি ১৯৭৫ সালে ম্যাঙ্গালোর থেকে মৎস্য বিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৯৭৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি বেঙ্গালুরুর কৃষি বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। ভারতে নীল বিপ্লবের অন্যতম জনক বলা হয় তাঁকে। ভারতে মাছ চাষের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছিলেন তিনি। মৎস্য চাষে উন্নয়ন, গ্রামীণ এবং উপকূল এলাকায় মাছ চাষ বাড়ানোর পাশাপাশি এই কর্মক্ষেত্রে যুক্তদের আর্থিক উন্নতিতে তাঁর বিরাট অবদানের জন্য ২০২২ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয় সুবান্না আয়াপ্পানকে। আইসিএআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল হওয়ার আগে ভুবনেশ্বর এবং মুম্বইয়ের সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউউট অব ফিসারিজ এডুকেশনের ডিরেক্টর হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। ইম্ফলে কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। হায়দরাবাদের ন্যাশনাল ফিসারিজ ডেভলপমেন্ট বোর্ড গঠনের সময় তিনি সেখানকার চিফ এক্সিকিউটিভ ছিলেন।