ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল :সুপ্রিম কোর্টে আবারো ধাক্কা চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের (SSC Case)। সুপ্রিম কোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল এসএসসি-তে র্যাঙ্ক জাম্প করে যারা চাকরি পেয়েছিলেন তারা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। এবার যাঁদের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে, তাঁরাও এসএসসি-এর নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবেন না, বসতে পারবেন না পরীক্ষায় বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court )।
উত্তরপত্রে কারচুপি থাকলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না (SSC Case)
নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা (SSC Case) শিক্ষকদের একাংশ নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরীক্ষায় বসতে চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের আবেদন খারিজ করে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেবি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। উত্তরপত্রে কারচুপি থাকলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না এই শিক্ষকেরা। পাবেন না বেতনও।
২০১৬ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ৩ এপ্রিল গোটা প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ। তাতে চাকরি চলে গিয়েছিল প্রায় ২৫,৭৫২ জনের। সেইসঙ্গে সুপ্রিমকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী ৩১ মে-এর মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এবং যাঁরা ইতিমধ্যেই অযোগ্য বলে চিহ্নিত হয়েছেন, তাঁদের বেতন ফেরত দিতে হবে এবং তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, যাঁদেরকে যোগ্য-অযোগ্য বলে চিহ্নিত করা যায়নি, তাঁরা এই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন পাবেন।
চাকরিহারাদের আর্জি খারিজ (SSC Case)
নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিহারা শিক্ষকদের (SSC Case) একাংশের দাবি করেন, এই ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকায় তাঁরা পড়েন না। কারণ, তাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে বা প্যানেল বহির্ভূত ভাবে বা র্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি পাননি। তাঁদের উত্তরপত্রে কিছু কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। তাই আবার নতুন করে তাঁরা পরীক্ষায় বসতে চান। নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বেতনও চান। এই দাবিতে তারা সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার তাদের সেই আবেদন খারিজ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এদিন শুনানিতে বিচারপতি মামলাকারীদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘গত ৩ এপ্রিল এই আদালতে যে রায় দিয়েছিল তাতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। রায় ঘোষণার এতদিন পরে আপনারা যোগ্য অযোগ্যের কথা কী ভাবে বলছেন?’
মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি
মামলাকারীদের আইনজীবী মুকুল রোহিগি এবং করুণা নন্দী আদালতের দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্ট যাঁদের দাগি বা অযোগ্য বলে চিহ্নিত করেছিল, তাঁদের মধ্যে তিন ধরনের চাকরিপ্রাপক ছিলেন। এক, যাঁরা প্যানেল বহির্ভূত বা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পেয়েছিলেন। দুই, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। তিন, যাঁরা র্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের মক্কেলরা এই তিনটের কোনোটার মধ্যেই পড়েন না। এই তিন ধরনের চাকরিপ্রাপকের তালিকায় তাঁদের নাম নেই। তাই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁদের অংশ নিতে দেওয়া হোক এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের বেতন দেওয়া হোক। যদিও এই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্য এবং ফেরদৌস শামিম সুপ্রিম কোর্টে সওয়ালে জানান, উত্তরপত্রে যারা কারচুপি করে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরাও অযোগ্য।
উল্লেখ্য একদিন আগেই র্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি পাওয়া চাকরি প্রার্থীদের এই একই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং কেবি বিশ্বনাথনের এই বেঞ্চ। আদালত সেদিনও জানিয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না যে নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে কোনও ভুল নেই। তাই তাঁরা সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবেন না ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ করে চাকরি পেলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া যাবে না। বসা যাবে না পরীক্ষায়। এ বার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগে ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রাপকদের আবেদনও একই ভাবে খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।