ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ফের সন্ত্রাসে রক্তাক্ত হল ভূস্বর্গ কাশ্মীর। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারালেন অন্তত ২৬ জন নিরীহ মানুষ (Surgical Strike For Pahalgam Attack)। হামলার দায় নিয়েছে পাকিস্তান-সমর্থিত লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। এর পরই উত্তাল সমাজমাধ্যম—চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের উপর, ফের যেন ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর মাধ্যমে কড়া জবাব দেয় ভারত।
উরি ও পুলওয়ামা হামলা (Surgical Strike For Pahalgam Attack)
এই দাবি নতুন নয়। ২০১৬ সালে উরি হামলা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামার পরে যেভাবে প্রত্যাঘাত করেছিল ভারত, সেদিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ(Surgical Strike For Pahalgam Attack)। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আরও জটিল। কারণ, ভারতের প্রতিপক্ষও একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র—পাকিস্তান। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সরাসরি অভিযানের সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ও পরমাণু সমীকরণের দিকেও নজর রাখতে হবে।
পরমাণু অস্ত্রে এগিয়ে ভারত(Surgical Strike For Pahalgam Attack)
এদিকে, মার্কিন ‘ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্ট’-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, ভারতের কাছে বর্তমানে রয়েছে ১৮০টি পরমাণু অস্ত্র, যেখানে পাকিস্তানের আছে ১৭০টি। শুধু সংখ্যায় নয়, প্রযুক্তিগত দিক থেকেও ভারত পাকিস্তানের থেকে এগিয়ে। ভারতের আছে ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়েড’—অর্থাৎ স্থল, জল ও আকাশপথে একযোগে পরমাণু হামলার ক্ষমতা। পাকিস্তানের এখনও সেই সক্ষমতা নেই।

সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পুনরাবৃত্তি? (Surgical Strike For Pahalgam Attack)
ভারতের কাছে রয়েছে রাফাল যুদ্ধবিমান, অগ্নি সিরিজের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, এবং ব্রহ্মস সুপারসনিক মিসাইল—সবই পরমাণু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম(Surgical Strike For Pahalgam Attack)। ডুবোজাহাজ-নির্ভর কে-১৫ ‘সাগরিকা’ মিসাইলের মতো অস্ত্রও রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে, যার পাল্লা ৩,৫০০ কিমি।এই শক্তি সত্ত্বেও, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বা ‘বালাকোট-এর পুনরাবৃত্তি’ এখন কেবল সামরিক নয়, এক গভীর কূটনৈতিক প্রশ্ন। কারণ, আণবিক যুদ্ধের ছায়া এড়ানো এখন সময়ের দাবি।

আরও পড়ুন: Pahalgam Attack : পহেলগাঁও হামলার পর মোদীকে ফোন করে পাশে থাকার বার্তা দিলেন ট্রাম্প!
সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র (Surgical Strike For Pahalgam Attack)
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলওয়ামার সময় যেমন তৎকালীন আইএসআই প্রধান ছিলেন বর্তমান পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির, এবারও তাঁর নাম জড়িয়ে যাচ্ছে হামলার সঙ্গে। কয়েক দিন আগেই একটি অনুষ্ঠানে হিন্দুদের লক্ষ্য করে তাঁর ঘৃণাবক্তব্য সামনে এসেছিল। তার পরই ঘটে এই ভয়াবহ হামলা। অনেকের ধারণা, এর পেছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে।

সক্রিয় হয়েছে টিআরএফ (Surgical Strike For Pahalgam Attack)
২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই ক্রমাগত সক্রিয় হয়েছে টিআরএফ। ভারত সরকার (Narendra Modi) ২০২৩ সালে এই সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ হিসাবে নিষিদ্ধও ঘোষণা করেছে। কিন্তু সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। বরং, বারবার প্রমাণিত হয়েছে—কাশ্মীরের অশান্তির নেপথ্যে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ মদতই মূল চালিকাশক্তি।
ভারতের প্রতিক্রিয়া কী হবে? (Surgical Strike For Pahalgam Attack)
এই পরিস্থিতিতে ভারতের সামনে এখন দু’টি পথ—এক, কূটনৈতিক এবং গোয়েন্দা স্তরে টিআরএফ ও আইএসআইকে আন্তর্জাতিক মহলে ন্যায্য বিচারের মুখে দাঁড় করানো; এবং দুই, প্রয়োজনবোধে ফের একটি জবাবি স্ট্রাইক, তবে অত্যন্ত হিসেব করে, যাতে সংঘাত না গিয়ে পড়ে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের পথে।কাশ্মীর আজ ফের শোকে আচ্ছন্ন। আর ভারতবাসী অপেক্ষা করছে—এই বর্বরতার জবাবে দেশ কী পদক্ষেপ নেয়, তা দেখার। ভারতের প্রতিক্রিয়া কূটনীতিক না কি যুদ্ধাস্ত্রে, সেটাই এখন প্রশ্ন।