ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রায় পাঁচ বছর আগে ধরা পড়েছিল ঘাটতি (T 72 Battle Tanks)। এ বার সেই পুরনো সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র এক বড়সড় পদক্ষেপ নিল। সোভিয়েত আমলে তৈরি ভারতীয় সেনার ‘টি-৭২ অজেয়’ ট্যাঙ্কগুলির আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ২ কোটি ৪৮ লক্ষ ডলারের চুক্তি সই করল মোদী সরকার (Narendra Modi)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মতে, এই চুক্তি শুধু পুরনো যুদ্ধযন্ত্রকে আধুনিক করে তুলবে না, বরং ভবিষ্যতের পাহাড়ি যুদ্ধক্ষেত্রের উপযোগীও করে তুলবে সেনাবাহিনীকে।
টি-৭২ ট্যাঙ্কে ইঞ্জিন বদল (T 72 Battle Tanks)
নতুন চুক্তি অনুযায়ী, টি-৭২ ট্যাঙ্কে (T 72 Battle Tanks) পুরনো ৭৮০ অশ্বক্ষমতার ইঞ্জিনের বদলে বসানো হবে ১০০০ অশ্বক্ষমতার নতুন ইঞ্জিন। রুশ সংস্থা রোসোবোরেনএক্সপোর্টের সঙ্গে যৌথভাবে এই ইঞ্জিন ভারতে তৈরি হবে। কেন্দ্রের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় এই প্রকল্পে সহযোগী থাকবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘আর্মার্ড ভেহিকল্স নিগম লিমিটেড’। ইঞ্জিনগুলি নির্মিত হবে চেন্নাইয়ের হেভি ভেহিকল ফ্যাক্টরিতে।
প্রযুক্তি হস্তান্তরের চুক্তি (T 72 Battle Tanks)
চুক্তিতে রয়েছে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়টিও। ফলে শুধু যন্ত্রাংশ আমদানি নয়, প্রযুক্তিগতভাবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রও উপকৃত হবে। আধুনিকীকরণ শুধুমাত্র ইঞ্জিন পরিবর্তনে সীমাবদ্ধ থাকছে না— ট্যাঙ্কের অস্ত্রভাণ্ডার ও নজরদারি ব্যবস্থাতেও উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে।

আরও পড়ুন: Tahawwur Rana : ২৬/১১ মামলায় তাহাউর রানা জেরায় গোপন সাক্ষী এনআইএ-র তুরুপের তাস?
ভারতীয় সেনার মূল আর্মার্ড ব্যাটেল ট্যাঙ্ক (T 72 Battle Tanks)
সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে নির্মিত টি-৭২ আজও ভারতীয় সেনার মূল আর্মার্ড ব্যাটেল ট্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহৃত হয় (T 72 Battle Tanks)। পরবর্তী কালে ভারত টি-৯০ (ভীষ্ম) ট্যাঙ্কও আমদানি করেছিল রাশিয়া থেকে। কিন্তু ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষ ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনা বাড়ার পর দেখা যায়, ট্যাঙ্ক ব্যবহারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি রয়ে গিয়েছে।

কৌশলগত পদক্ষেপ (T 72 Battle Tanks)
বিশেষত, পাহাড়ি ভূপ্রকৃতিতে ভারী ট্যাঙ্ক ব্যবহার সমস্যার সৃষ্টি করে (T 72 Battle Tanks)। ডিআরডিও-র অর্জুন হোক বা রুশ টি-৯০, ওজনের কারণে লাদাখের মতো উচ্চতর অঞ্চলে এগুলি কার্যকর নয়। ফলে চিনা হালকা ট্যাঙ্ক জ়েডটিকিউ-১৫-এর বিরুদ্ধে ভারসাম্য রাখতে ভারতীয় সেনা বাধ্য হয়েছিল আশির দশকের বিএমপি-২ সাঁজোয়া যান ব্যবহার করতে।এই প্রেক্ষাপটে টি-৭২-কে আরও বেশি অশ্বক্ষমতার ইঞ্জিন দিয়ে শক্তিশালী করা একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। সেনাবাহিনীর মতে, উন্নততর ইঞ্জিন বসালে ট্যাঙ্কগুলির গতিশীলতা ও কার্যক্ষমতা বাড়বে, ফলে হিমালয়ের উঁচু ও দুর্গম উপত্যকাগুলিতেও কার্যকরভাবে মোতায়েন করা যাবে।প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ শুধু সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধিই নয়, রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখার দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। একই সঙ্গে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর লক্ষ্যপূরণে এই চুক্তি এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।