ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ের বুকে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার স্মৃতি আজও ভারতবাসীর মনে তাজা (Tahawwur Rana)। সেই ঘটনার তদন্তে নতুন মোড় এসেছে, যখন দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পাক বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তাহাউর রানাকে ভারতে ফেরত এনে জেরা শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA India)। তাঁকে নিয়ে তদন্তে সহায়ক হতে চলেছেন এক ‘সংরক্ষিত’ সাক্ষী, যিনি এনআইএ-র কাছে অন্যতম মূল্যবান সূত্র বলে ধরা হচ্ছে।
হেডলি-র সঙ্গে রানার সম্পর্ক (Tahawwur Rana)
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই সাক্ষী রানার ছেলেবেলার বন্ধুর সঙ্গে যুক্ত, এবং তাঁর ডেভিড হেডলির সঙ্গেও যোগ রয়েছে (Tahawwur Rana)। ২০০৬ সালে হেডলি মুম্বই সফরে এলে, তিনিই তাঁকে স্বাগত জানান এবং থাকার ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয়, হেডলিকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদানও করেছিলেন এই ব্যক্তি। হেডলি-র সঙ্গে রানার সম্পর্ক এবং মুম্বই হামলার পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে এই সাক্ষী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে পারেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
মুখোমুখি জেরা (Tahawwur Rana)
এনআইএ মনে করছে, সংরক্ষিত এই সাক্ষীকে রানার (Tahawwur Rana) সামনে বসিয়ে মুখোমুখি জেরা করলে রানার মুখ থেকে অনেক গোপন তথ্য উঠে আসবে, যা এই জঘন্য হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের আরও গভীর দিক উন্মোচন করতে পারে। তাই এনআইএ এই সাক্ষীকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে, কড়া নিরাপত্তায়, গোপন জায়গায় রাখছে। আদালতের নথিতেও তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। কারণ, তাঁর পরিচয় ফাঁস হলে পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া জঙ্গি গোষ্ঠী, বিশেষত লশকর-এ-তৈবা, তাঁর ক্ষতি করতে পারে।

১৮ দিনের এনআইএ হেফাজত (Tahawwur Rana)
তাহাউর রানা দীর্ঘদিন আমেরিকায় জেলে বন্দি ছিলেন (Tahawwur Rana)। এনআইএ দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর প্রত্য়র্পণের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে সেই প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রানা নয়াদিল্লিতে এসে পৌঁছান, এবং বিমানবন্দরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাতেই তাঁকে দিল্লির এনআইএ বিশেষ আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এনআইএ-র সদর দফতরে রানা (Tahawwur Rana)
এখন রানা এনআইএ-র সদর দফতরের নীচতলার একটি নির্দিষ্ট কুঠুরিতে বন্দি রয়েছেন (Tahawwur Rana)। ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে রাখা হয়েছে তাঁকে। পাশাপাশি, প্রতি ৪৮ ঘণ্টা অন্তর স্বাস্থ্যপরীক্ষাও চালানো হচ্ছে।তদন্তকারীদের মতে, রানা ও হেডলি মিলে ২৬/১১ হামলার ছক কষেছিলেন এবং একাধিক দফায় মুম্বই শহর সম্বন্ধে গুপ্তচরবৃত্তি করেন। সেই পরিকল্পনায় সহায়তা করার পিছনে এই সংরক্ষিত সাক্ষীর ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।এখন সকলের নজর রয়েছে এনআইএ-র পরবর্তী পদক্ষেপ ও সাক্ষীর মুখোমুখি জেরা কবে সম্পন্ন হয় তার দিকে। এই জেরা থেকে উঠে আসা তথ্য হয়তো মুম্বই হামলার নেপথ্যের আরও অজানা দিক জনসমক্ষে আনতে পারে।