ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অস্ট্রেলিয়া সফরের বিপর্যয় কাটিয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরেই জয়ের মুখ দেখল ভারত। বুধবার ইডেনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি (India vs England T20) সিরিজের প্রথম ম্যাচেই দাপুটে জয় তুলে নিল সূর্য কুমার যাদবরা। একতরফা ম্যাচে ৪৩ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জয় পেল ভারত (India beat England)। ব্যাটিং ও বোলিং- দুই বিভাগেই সফরকারী ইংরেজদের টেক্কা দিল মেন ইন ব্লু।
প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় পর ভারতের খেলা। তারপর চোট সারিয়ে ১৪ মাস পর ঘরের ছেলে মহম্মদ সামির জাতীয় দলে কামব্যাক দেখতে ইডেনের গ্যালারি ছিল প্রায় হাইউফুল (India beat England)। কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগেই সামির প্রথম একাদশে না থাকাটা বড় ধাক্কা ছিল শহরের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। প্রথম একাদশে একমাত্র পেসার ছিলেন আর্সদীপ সিং। এছাড়া বরুণ চক্রবর্তী, অক্ষর প্যাটেল এবং রবি বিষ্ণোই- তিন স্পিনারকে রেখেছিল কোচ গৌতম গম্ভীর।
আরও পড়ুন: Mohammad Shami: ইডেনে বড় চমক ভারতের, ঘরের মাঠে কামব্যাক হলো না সামির
তিন স্পিনার স্ট্র্যাটেজিই বাজিমাত (India beat England)
প্রথমে সামির না থাকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হলেও পরে বোঝা গেল কেন কোচ গম্ভীর এক পেসার ও তিন স্পিনারে বোলিং অ্যাটক সাজিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন কেকেআর-এ খেলা ও কোচিং করানোর সুবাদে তাঁর থেকে ভালো ইডেনের উইকেট কেউ ভালো করে চেনেন না। কলকাতায় শীতের রাতে শিশির এবং উইকেট যে কিছুটা মন্থর হয়ে যাবে তা খুব ভালো করেই জানতেন সূর্যদের হেডস্যার। তাই তাঁর তিন স্পিনার খেলানোর স্ট্র্যাটেজিই বাজিমাত করে দিল (India beat England) । বরুণ চক্রবর্তী এবং অক্ষর প্যাটেল- দুই স্পিনার ৮ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৫ উইকেট। তারমধ্যে ম্যাচের সেরা বরুণ ২৩ রান দিয়ে তিনটি এবং অক্ষর ২২ রান দিয়ে নিলেন ২টি উইকেট। ২টি করে উইকেট নিলেন আর্সদীপ ও হার্দিক পান্ডিয়া।

শিশিরের কথা ভেবে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করেননি ভারত অধিনায়ক সূর্য কুমার যাদব। ম্যাচের তৃতীয় বলেই ইংরেজ ওপেনার তথা প্রাক্তন কেকেআর ব্যাটার ফিল সল্টকে খাতা খোলার আগেই ফিরিয়ে দেন আর্সদীপ সিং। তৃতীয় ওভারে বল করতে এসে অপর ওপেনার বেন ডাকেটকেও (৪) ফেরান তিনি।(India beat England) শুরুর এই জোড়া ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি ইংল্যান্ড। একমাত্র অধিনায়ক যশ বাটলার একা কুম্ভ হয়ে ইংরেজ দুর্গ রক্ষা করার চেষ্টা করলেও অপরপ্রান্তে সতীর্থ ব্যাটারদের ভারতীয় স্পিনারদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন। আইপিএলে খেলার সুবাদে ইডেনের উইকেট খুব ভালো চেনেন বাটলার। সাফল্যও আছে।
শেষে ছক্বা হাঁকাতে গিয়ে বরুণের শিকার বাটলার (India beat England)
এদিনও ব্যাট হাতে ৪৪ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ২ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে করলেন ৬৮ রান। তিনি ছাড়া হ্যারি ব্রুক (১৭) এবং জোফ্রে আর্চার (১২) দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারলেন। দেখে মনে হচ্ছিল বাটলার ইডেনের যে উইকেটে ব্যাট করছিলেন বাকি ইংলিশ ব্যাটাররা যেন অন্য উইকেটে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। শেষে ছক্বা হাঁকাতে গিয়ে বরুণের শিকার হন বাটলার। ২০ ওভারে সব উইকেট খুইয়ে ১৩২ রান তোলে ইংল্যান্ড। গোটা ইনিংসে ইংরেজ ব্যাটাররা মারলেন মাত্র ১৩ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারি। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে ভারতীয় বোলিং অ্যাটাক এদিন কতটা নিখুঁত ছিল।

১৩৩ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চালিয়ে খেলে জয় সহজ করায় মন দেন দুই ভারতীয় ওপেনার সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। (India beat England) ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আর্চারের শিকার হয়ে স্যামসন (২০ বলে ২৬ রান) ফিরে যাওয়ার তিন বলের মাথাই একই ওভারে অধিনায়ক সূর্য (০) ফিরে যেতে কিছুটা নিরবতা ছেয়ে গিয়েছিল ইডেনের গ্যালারিতে উপস্থিত থাকা ৫৫ হাজার দর্শকের মধ্যে। তবে তা স্থায়ী হতে দেননি অভিষেক ও তিলক ভর্মা।
২০ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করার পাশাপাশি ৩৪ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ৮ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৭৯ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে একা হাতেই ভারতের জয় নিশ্চিত করে দেন অভিষেক। তবে আদিল রশিদের বলে ব্রুকের হাতে ধরা দিয়ে না ফিরে জিতিয়ে নট আউট থেকে মাঠ ছাড়তে না পারার আফসোসটা অবশ্যই ড্রেসিংরুমে ফিরে করেছেন তিনি। শেষে ১২.৫ ওভারেই তিলক (১৯ অপরাজিত) এবং হার্দিক (৩ অপরাজিত) ভারতকে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে দিয়ে মাঠ ছাড়েন।
ভারতের এই জয় যেমন ক্রিকেট ভক্তদের সামির কামব্যাক না দেখতা পাররার ক্ষততে কিছুটা প্রলেপ দিল, তেমনই কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন কোচ গৌতম গম্ভীরও।