চোখের জলে কমরেড বুদ্ধকে শেষ বিদায়, NRS হাসপাতালে দেহদান

প্রিয় নেতাকে শেষবার দেখার আকুতিতে এদিন শুধু আলিমুদ্দিনের বাইরেই জনতার ঢল ছিলো না। তাঁকে শ্রেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মৌলালি পর্যন্ত ছিলো সাধারণ মানুষের লম্বা লাইন। বিস্তারিত পড়ুন...

চোখের জলে কমরেড বুদ্ধকে শেষ বিদায়, NRS হাসপাতালে দেহদান
প্রয়াত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।।

ত্রয়ণ চক্রবর্তী, রিমিক মাঝি, কলকাতা: বাংলার রাজনীতিতে বুদ্ধ অধ্যায়ের অবসান। বিধানসভা পর আলিমুদ্দিনে এসে পৌছায় প্রাক্তন পলিট ব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শববাহী শকট। দেহ পৌছানোর পর কার্যত ভেঙে পরে উপস্থিত তার অনুগামী দলীয় সদস্যরা। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। দলের কমরেডকে এখানেই শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রকাশ কারাত,মানিক সরকার,এমএ বেবি,মহম্মদ সেলিমসহ বামনেতৃত্ব। শ্রদ্ধা জানান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও। এরপর দীনেশ মজুমদার ভবন হয়ে এনআরএস হাসপাতালে তাঁর দেহদান সম্পন্ন হয়।

 দিনে সকাল ও বিকেলে মুজফফর আহমেদ ভবনে আসা মোটামুটি নিয়মমাফিক ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। পরবর্তীতে শারিরীক কারণে আর আসতে পারতেন না ৩১ নম্বর আলিমুদ্দিন স্ট্রীটে। শুক্রবার ফের সিপিআইএম রাজ্য দফতরে এলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এলেন শববাহী শকটে। অর্ধনমিত রক্ত পতাকা। বিষাদ যেন ঘিরে তখন এই বাড়িটার আনাচেকানাচে। একে একে সিপিআইএম নেতৃত্ব মাল্যদান করলেন একদা তাঁদের পলিট ব্যুরো সদস্যকে। অসীম দাশগুপ্ত থেকে নীলোৎপল বসু শোকার্ত গলায় চেষ্টা করলেন স্মৃতিচারণে। আসেন দীর্ঘদিনের তাঁর সতীর্থ বর্তমানে সমাজবাদী পার্টির নেতা কিরনময় নন্দ। শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, নাট্যকার চন্দন সেন, দেবদূত ঘোষ, শঙ্কর চক্রবর্তীরা। 

কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে আসেন ISF বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা জানান বিশিষ্ট গায়িকা উষা উত্থুপ। করলেন স্মৃতিচারণাও। প্রিয় নেতা নয়, মালিককে চোখের জলে শেষ বিদায় জানাতে এদিন আলিমুদ্দিনে এসে পৌঁছান বুদ্ধদেবের ২৮ বছরেরও বেশি সময়ের সারথী মহম্মদ ওসমান।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/ambassador-car-driver-gets-emotional-after-Buddhadeb-Bhattacharya-death

প্রিয় নেতাকে শেষবার দেখার আকুতিতে এদিন শুধু আলিমুদ্দিনের বাইরেই জনতার ঢল ছিলো না। তাঁকে শ্রেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মৌলালি পর্যন্ত ছিলো সাধারণ মানুষের লম্বা লাইন। কমরেড বুদ্ধদেবের প্রয়াণে মর্মাহত কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও। গোঁড়ামি ছেড়ে, বিরোধিতা দূরে ঠেলে উন্নয়নের দিশা দেখিয়েছিলেন বাংলায়। এদিন বুদ্ধজায়া মীরা ভট্টাচার্যকে চিঠি লিখে সমবেদনা জানান তিনি।  

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Last-Tribute-to-Buddhadeb-Bhattacharjee-at-Assembly

ঘড়ির কাঁটায় ৩.৪০। দলের কমরেডদের হাতে হাতে শেষবারের মতো মুজাফফর আহমদ ভবন থেকে বের হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এরপর কিছুক্ষন রাখা হয় যে গণসংগঠনের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। সেই ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য দফতরে। এরপর গলায় ইন্টারন্যাশনাল আর হাতে অর্ধনমিত রক্ত পতাকা নিয়ে তাঁর কমরেডরা পৌঁছে দিলেন নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই সম্পন্ন হয় তাঁর দেহদানের অঙ্গীকার। চলে গেলেন বুদ্ধদেব, থেকে গেল তার বলা 'ডু ইট নাও'। ট্রাইব টিভির তরফে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।